দুইটা ‘ক্লাসের’ কথা বহুল প্রচলিত–ধনী আর গরীব। কিন্তু এর বাইরেও আরো অনেক ক্লাস আছে। সাবক্লাসও বলতে পারেন… কিন্তু ঘুরেফিরে ওই ক্লাসই। হিন্দুধর্মে যে চারটা বর্ণ দেখেন, বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে যে ৩৬ বা ৪১টা জাত দেখেন; ইসলামে যে শিয়া-সুন্নি বা ৭২ ফেরকার কথা শোনেন; খ্রিষ্টানদের মধ্যে আছে ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট… বৌদ্ধদের মহাযান, হীনযান, বজ্রযান–সেগুলাও ওই ক্লাস বা সাবক্লাস।
রাজনীতি আর ধর্মের বাইরেও অনেক ক্লাস আছে। ক্লাসে টাকাপয়সা একটা মস্তবড় ভূমিকা পালন করে। তারপর আসে ‘লাইফস্টাইল’ থেকে ‘কালচার’ পর্যন্ত… যেমন ধরেন একজন ব্রাহ্মণ আর একজন শূদ্রের সমপরিমান টাকাপয়সা থাকার পরেও এদের লাইফস্টাইল-কালচারে বিস্তর পার্থক্য থেকে যাবে–যা আসে তাদের নিজস্ব বেড়ে ওঠার পরিবেশ থেকে।
আমাদের দেশে তো শুনি মাত্র ১০ মাইল অন্তর-অন্তর ভাষায় পরিবর্তন দেখা যায়। বিয়ের রীতিনীতিও একেক গ্রামে একেকরকম। উদাহরণ–ধর্ম বর্ণ গোত্র জাতপাত মিলিয়ে বিয়ে হওয়ার পরেও একটা মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি এসে মানিয়ে নিতে প্রথম দিকে বেশ কষ্ট হয়।
সমাজে যে ‘এন্টারটেইনারগোষ্ঠী’–সেই বেশ্যা-নটী-বাইজি থেকে শুরু করে গায়ক-নর্তকী-বাজনাদার-শিল্পী-সেলিব্রেটি–এদের কালচার-লাইফস্টাইল অন্যদের থেকে আলাদা। সাধারণদের সাথে মেশার ‘যোগ্যতা’ এদের আর থাকে না। আবার সাধারণরাও নিজেদের শিক্ষা-সংস্কৃতির আলোকে ওদেরকে বিচার করতে গিয়ে লেজেগোবরে গরু-ছাগলের হাট বানিয়ে বসে।
যা হোক, বাদ দেই ওসব কথা, কারণ এর উপসংহার টানতে পারছি না। আসলে এতো কথা বলতেও চাইনি। আমি আসলে দুইটা ক্লাসের কথা ভাবছিলাম–এক, নদীর জল; দুই, জাতের মেয়ে। ওই যে বহুল প্রচলিত একটা কথা আছে না–নদীর জল ঘোলা ভালো, জাতের মেয়ে কালো ভালো–এই কথাটাই কয়দিন ধরে মাথায় ঘুরছে… এর ভালো ব্যাখ্যা জানা নাই। এই কথা কবে কেন কীভাবে কার মাধ্যমে এলো, এর প্রেক্ষাপট শানে নুজুল ব্যাখ্যা ইত্যাদি ইত্যাদি জানতে পারলে ভালো লাগতো…
Leave a Reply