লিখেছেন পুতুল হক
অন্যায়কারী এবং অন্যায়কে প্রশ্রয়দানকারী দু’জনেই সমান অপরাধী। ইসলামের নবী অন্যায় করেছিলেন
– তলোয়ারের মুখে মানুষের ধর্মান্তর করে,
– তাঁর মিথ্যা কাহিনীতে বিশ্বাস না করার কারণে খুন করে,
– স্বামীকে খুন করার পর বিধবাকে সেদিনই বিয়ে করে,
– অন্যের সম্পত্তি লুট করে,
– যুদ্ধবন্দীদের দাস হিসেবে বেচাকেনা করে,
…
মোহাম্মদের অন্যায়ের ফিরিস্তি দিয়ে শেষ করা যাবে না। এসব তবু সে সময়ের ঘটনার বর্ণনা। ইতিহাসে এমন বর্বরের দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু মোহাম্মদের সব চাইতে বড় অন্যায় – সে এমন একদল অনুসারীর সৃষ্টি করেছে, যারা আজীবন তাঁর করা অন্যায়কে বৈধতেই শুধু দেবে না, বরং নিজেরাও তাঁকে অনুসরণ করে আজীবন অন্যায় করে যাবে। তাঁর অন্যায়ের সাক্ষী এবং চালিকা শক্তি – কোরআন এবং হাদিস।
‘নেসেসারি ইনভেনশন অফ এনিমি’ – কোনো মতবাদকে টিকিয়ে রাখতে হলে তাঁর একটি শত্রু প্রয়োজন। আল্লাহ, নবী, বেহেস্ত, দোজখ, হুরি, মদ ইত্যাদি একগাদা হাবিজাবিতে বিশ্বাসের সাথে মুসলমান আরো বিশ্বাস করে – বিধর্মী মাত্রই ইসলামের শত্রু, ইহুদি হলে তো কথাই নেই! এদের নিজেদের মধ্যেও শত্রুর অভাব নেই। এরকম বাবা-মা’র একটি নবজাতক শিশুও তাঁদের শত্রু। ধর্মীয় বিশ্বাস মতে – মুসলমানের শত্রু তৈরি হতেই থাকবে আর ইসলামের সৈনিক শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেই থাকবে। ফল হিসেবে ইসলাম নামের একটি সন্ত্রাসী মতবাদ টিকে থাকবে।
মুতাজিলারা ছিলেন, যাঁরা কোরআনের আক্ষরিক ব্যাখ্যার বদলে মানুষের “স্বাধীন ইচ্ছাকে” বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ইসলামের দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে অনারবদের মাঝ থেকে উঠে এসেছিলেন অনেক ধার্মিক, যাঁরা ইসলামের নগ্নতাকে পোশাকে ঢেকে মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কিছুটা ভদ্রস্থভাবে। তাঁরা কিন্তু ধংস হয়েছেন। অথবা মহান আল্লাহ তাঁর সৈনিকদের মাধ্যমে তাঁদের ধংস করেছেন। ইসলামকে যতই রাখঢাক করার চেষ্টা করা হোক না কেন, সে তাঁর “আসল” রূপে ঠিকই প্রকাশ পায়। তাকফিরিরা মুসলমান, ওহাবি/সালাফিরা মুসলমান, ইমাম হাম্বল বা পাগলা তাইমিয়া মুসলমান, তালেবানরা মুসলমান, আইএস মুসলমান। মডার্ন ইসলামিস্টদের আধুনিক বয়নশিল্প এদের জামা পরাতে ব্যর্থ।
আমি যদি বলি, ইসলামের সন্ত্রাসী রূপটাই তাঁর সহি রূপ, তাহলে আমাকে আক্রমণ করার লোকের অভাব নেই। যাঁরা আমাকে আক্রমন করবেন, তাঁদের সাথে আমার অমিল কিন্তু শুধু শব্দচয়নে। ভারতীয় উপমহাদেশের কথাই ধরুন, এখানকার মানুষ মুসলমান হয়েছিলো কি নিমন্ত্রণপত্র পেয়ে, নাকি অস্ত্রের মুখে? সারা দুনিয়ায় ইসলাম কায়েমের কথা কি কোরআন-হাদিসে নেই? একজন মুসলিমের কাছে যা জিহাদ, একজন অমুসলিমের কাছে সেটাই জঙ্গিবাদ। এমন কোনো মুসলমান পাওয়া যাবে না, যার অন্তরে ইসলামী খেলাফতের জন্য গোপন ভালোবাসা নেই। এটাই মুসলমানের আদর্শ। মানবিক প্রেমের কারণে যে-মানুষ জীবন দিতে পারে, সে আদর্শের জন্য শুধু নিজের জীবনই দিতে পারে না, পারে অন্যের জীবন নিতেও।
এমন একটা কোরআন, এমন একজন নবীর কথা কিছুটা সময়ের জন্য আমরা কল্পনা করি, যেখানে জিহাদের নির্দেশ দেয়া হয়নি, সারা বিশ্বে ইসলাম কায়েমের জন্য যুদ্ধ করার কথা বলা হয়নি, যেখানে যুদ্ধবন্দীদের দাস হিসেবে বিক্রির অনুমতি নেই, যুদ্ধবন্দী নারীদের যৌনতার কাজে যথেচ্ছ ভোগ করার অনুমতি দেয়া হয়নি, যেখানে বলা হয়নি বিধর্মীমাত্রই ইসলামের শত্রু, তাদের সম্পত্তি লুটের বিধান নেই, মুসলমানের দেশে যারা মুসলমানের সমান মর্যাদা পাবে – তাহলে কি ইসলামের অনুসারীরা ধর্মের নামে এসব অন্যায় কাজ করতো? নিশ্চয়ই না। তার মানে এটা নয় যে, তারা কোন অন্যায় করতো না। আর সব মানুষের মত তারাও দোষগুণ নিয়ে থাকতো।
ধর্মের নামে তারা অন্যায় করছে, কারণ ধর্ম তাদেরকে অনুমতি বা ক্ষেত্রবিশেষে নির্দেশ দিয়েছে। এসব পাশ কাটিয়ে জীবন পার করে দেয়া যায়। কিন্তু অন্তরে যদি থাকে অন্যায়ের জন্য ভক্তি আর ভালোবাসা, তবে আইএস বা তালেবান তৈরি হতেই থাকবে। “আমি সেরা” যতদিন থাকবে, ততদিন অ-সেরাদের প্রতি ঘৃণাও থাকবে।
Leave a Reply