লিখেছেনঃ ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা)
ছোটবেলায় আমি বাসে উঠতে পারতাম না। বাসে উঠলে আমার মাথা ঘোরাতো আর বমি আসতো। একবার সবাই মিলে আম্মুর নানা বাড়ি গেলাম। যাওয়ার সময় ট্যাক্সি ভাড়া করে গেলাম, কিন্তু আসার পথে বিপত্তি। ট্যাক্সি পাওয়া গেল না।কি আর করা !!বিপদে পড়ে বাসেই চড়তে হলো। তাও আবার বাসের একদম পিছনে সিট।আর সঙ্গে এত মানুষ জন। আমরা ছোটরা মুরব্বিদের বসার জায়গা করে দাড়িয়ে ঢাকার পথে রওনা হলাম। আমার বয়স তখন ১২/১৩ হবে। আমার কয়েকজন খালা আর মামা আমরা প্রায় সমবয়সী। ভীষন হৈ চৈ করছিলাম। কিন্তু বাসে ওঠার পর আমার কেমন অস্বত্তি শুরু হয়। চুপ হয়ে গেলাম। সঙ্গে ছিল নোমান মামা। আম্মুর মামাতো ভাই।
নোমান মামা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, কি আম্মু খারাপ লাগছে?
আমি বললাম, হুম।
নোমান মামা বললেন, কেন? বমি আসছে?
আমি বললাম, আসছে। তবে আরো বেশি খারাপ লাগছে, সামনের দুটো লোককে দেখে। দেখো সামনের সিটের দুটো লোক ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হচ্ছে ওরা আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে।শুধু যে বাঁজে ইঙ্গিত করছে তা না সঙ্গে আমার শরীর নিয়ে নোংরা কথাও বলছে। আমি শুনতে পাচ্ছিলাম ওদের নোংরা কথাগুলো। আর মেয়েরা কেন যেন ছেলেবেলা থেকে বুঝে যায়, কার দৃষ্টি কেমন!!
নোমান মামা হঠাৎ চিৎকার বাসের মধ্যে বলে উঠলো, স্নিগ্ধা তোর বমি পাচ্ছে মা? এক কাজ কর, এই যে বদমাস দুটো যে মুখ হা করে তোর দিকে তাকিয়ে আছে ওদের মুখে ওপর বমি করে দে।
আমিও আর কথা না বলে, হরবড় করে সত্যি সত্যি বমি করে ওদের ওপর দিয়েছিলাম। ঐ লোক দুটো চিৎকার করতে করতে দূরে সরে গিয়েছিলো।
আজ ”হাসনাত আবদুল হাই”- এর প্রথম আলোতে ছাপানো ”টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি” পড়ে আমার সেদিনের মতো ভীষন বমি পাচ্ছে। আমার নোমান মামাকে সঙ্গে পেলে ঠিক এই নোংরা মস্তিস্কের নরকের কীটের ওপর বমি করে আসতাম। হাসনাত আবদুল হাই আপনি সমাজের সুশীল শ্রেণীর আড়ালে বসা মুখোশধারী বেশ্যা পুরুষ। লেখা বিক্রি করতে করতে বিবেককে বিক্রি করতেও আর দ্বিধা বোধ করছেন না। আপনাদের বিকিয়ে যাওয়া বিবেকের কাছে আজ আমরা ধরাশায়ী। নতুবা কাকে খুশী করতে ”প্রথম আলো” মতো একটা পত্রিকা এমন একটি লেখা ছাপায় এটা আসলে বোধগম্য নয়।
Leave a Reply