সন্ন্যাসী সাবের একটা স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে হিন্দু বা হিন্দু ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা বালেদের বাল্প্রীতির বিষয়টা নিয়ে ভাবছিলাম। সে ভাবনার কিছুটা উত্তর সন্ন্যাসী সাব নিজেই দিয়েছেন এভাবে–//হিন্দুদের সবাই গোয়া মারে। তবে যারা একটু রয়ে সয়ে মারে, অথবার ওপরে ওপরে একটু ভালবাসার অভিনয় করে, হিন্দুরা সেই দলের সাপোর্ট করে। পার্থক্যটা ধর্ষণ আর গণধর্ষণের।// অনেকটাই সৎ স্টেটমেন্ট।
এর পরে তিনি আর হোরাস সাব আরেকটু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন–//শেখ মুজিব ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ নারীর ধর্ষনের জন্য আসলেই দায়ী ছিল? হ্যাঁ বা না বললেই হবে।//
উত্তরে বলেছিলাম–//ইস্টিশনের পোস্ট রিলেটেড যে প্রশ্নটা আমাকে সরাসরি করেছেন–হ্যাঁ বা না–সত্যি বলতে আপনাদের কমেন্টের উত্তর দেয়ার পরে এই মুহূর্তে ওটা নিয়ে ভাবছি। যেখানে প্রায়ই বলি–সীমানা মানি না–সীমানার বিপক্ষে অনেক পোস্টও দিয়েছি, তখন এই মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা দেশ নিয়েও মনে হচ্ছে অনেক কিছু বলার আছে–মানে ব্যাপারটা ক্লিয়ার না হলে নিজেকেই এখন হিপোক্রেট বলে মনে হবে। ধন্যবাদ আপনাদের দুজনকেই। দেখি এই নিয়ে খোলাসা করে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা যায় কিনা। আলাদা পোস্ট দেবো।//
আমার গণ্ডি নাস্তিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সীমানা নিয়ে খুব সম্ভবত প্রথম পোস্ট দেই শাহবাগ মুভমেন্টের সময়ে–সুমনের একটা গানের লাইন–//সীমানা চিনি না আছি শাহবাগে//–এটা দিয়ে একটা কাভার পিক করেছিলাম।
এর পরে যখন সাম্যবাদ মানবতা মানববাদ ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে ভেবেছি, তখন ধর্মের পাশাপাশি দেশ দেশপ্রেম জাতীয়তা সীমানা কাঁটাতার–এসবের বিরুদ্ধেও প্রচুর পোস্ট দিয়েছি। কয়েকদিন আগেও কাশ্মীর ইস্যুতে বলেছিলাম–যারা সাম্যবাদী, যারা সকল ভেদাভেদ আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে তারা আলাদা কাশ্মীর বা আলাদা বেলুচিস্থান চায় কেন! এই অবস্থান থেকে যদি আবার নতুন করে দেশভাগ-এর পক্ষে কথা বলি তাহলে বর্তমানে ফেসবুকে যে “হিপোক্রেসি” বা স্ববিরোধিতা প্রসঙ্গে প্রচুর কথা হচ্ছে, আমি নিজেও সেই দলে পড়ে যাব।
এমন নয় যে আমার মধ্যে হিপোক্রেসি বা স্ববিরোধিতা নেই। স্ববিরোধিতার প্রসঙ্গ সন্ন্যাসী সাব অবশ্য আরেকটা বিষয় তুলে ধরেন–বিবর্তনবাদ। মানুষের যে কোনো অবস্থানও পরিবর্তনশীল হতে পারে–সেটাই হয়তো তিনি বুঝান। কিন্তু মোটা দাগে স্ববিরোধিতা প্রদর্শন দৃষ্টিকটু। এই পোস্টের মূল প্রসঙ্গে শেখ মুজিবকে যদি সমস্ত দায় থেকে রেহাই দেই, তাহলে সীমানা প্রসঙ্গে আমার অবস্থানটা হবে স্ববিরোধীতায় পরিপূর্ণ।
কাহিনী সংক্ষেপ–কিছু উদাহরণ দেই–বাংলাদেশে যখন নাস্তিক কোতল হয়, তখন নাস্তিকরা দায়ী করে ইসলাম ধর্মকে… আর এই আইডিয়াটার জন্য নবী মোহাম্মদকে। ধর্মের পরে সবচেয়ে বেশি মানুষ হত্যা করা হয় রাজনৈতিক কারণে। দায়ী করা হয় হিটলার মাও স্ট্যালিনদেরকে।
তো যখন সীমানা মানি না, তখন ভারত ভাগও মানি না–তখন এই ভাগের পেছনে রাজনীতি–রাজনীতির পেছনে জিন্নাহ আর নেহরু–আর কোনো কিছুর জন্যই মানুষ হত্যা একেবারেই সমর্থন করি না… কোনো কিছুর জন্য যখন মানুষ হত্যা করা হয় তখন বুঝতে হবে পেছনে বিশাল ঘাপলা আছে… আর এ কারণেই যে সীমানা বা দেশভাগের জন্য মানুষ খুন হয়, ধর্ষণ হয়–সেগুলাও সমর্থন করি না।
সর্বশেষে আসে আমাদের ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা বাংলাদেশ–৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ ধর্ষণ–এগুলাও সমর্থন করি না। আর এসবের পেছনেও রাজনীতি–আর সেই রাজনীতির কারণ–সংক্ষেপে–ভুট্টো আর মুজিব। দায়ও–সংক্ষেপে–এই দুজনের।
আশা করি সীমানা এবং মুজিব প্রসঙ্গে আমার অবস্থানটা পরিষ্কার করতে পারছি। সাম্যবাদ বা সীমানা না মানার বিষয়টা হয়তো অবাস্তব… কিন্তু স্বপ্নে যখন খাবো, তখন বিরানিই খাবো… স্বপ্ন যখন দেখবো, তখন তখন আপাতত এইটাই আমার কাছে সর্বোচ্চ মনে হয়। এখন মুজিব প্রসঙ্গে আপনারা আপনাদের লোভ স্বার্থ পা-চাটা আর রাজনৈতিক অবস্থান থেকে পাল্লাকে নানান ভাবে ট্যাগাতে পারেন, কিন্তু আর যাই হোক, পাল্লা সজ্ঞানে হিপোক্রেসিটা এড়িয়ে থাকতে চায়–সেটা পরিষ্কার।
Leave a Reply