শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রণী–এই গানের মানে কী? কিংবা–এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে–এই স্লোগানের মানে কী?
কিংবা ধরেন থাবাবাবাকে খুন করা হলে নাস্তিকরা কেন বলত–এক থাবাবাবার মৃত্যু আরো হাজারটা থাবাবাবার জন্ম দিয়ে গেছে… কিংবা আমিই অভিজিৎ–কথাটার তাৎপর্য কী?
খুন করে বা বলপ্রয়োগ করে কি কোনো চিন্তা বা আদর্শকে থামিয়ে রাখা গেছে? এত প্যারা খাওয়ার পরেও ইংরেজরা গান্ধীকে বা পাকিস্তানিরা মুজিবকে হত্যা করে নাই। কেন করে নাই–এই ব্যাপারটা যদি মোজলেমরা বুঝত তাহলে নাস্তিকদের হত্যা করত না, জোর করে নিজেদের ধর্মটাকে অন্যদের উপর চাপিয়ে দিত না।
বলতে চাইছিলাম শ্রীলংকার কথা। কয়েকদিন আগে শ্রীলঙ্কায় চারটি হোটেল ও তিনটি গির্জায় মোজলেমরা আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে কয়েকশ মানুষ হত্যা করল। এরকম ঘটনায় ভেঙে না পড়ে নিজেদের বুঝ দিতে তারা পোস্ট দিয়েছে–‘আমাদের কাঁদানো কঠিন।’ সাথে নাকি মোজলেমদের অপমান করে আরো একটা বাক্য লিখেছে।
এর জবাবে মোজলেমরা লিখেছে–‘বেশি হাইসো না, একদিন তোমরা কাঁদবে।’
[কী ভাবছেন?]
তো ওই পালটা জবাবটাকে অমোজলেমরা কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো মনে করছে। মনে করছে এইটা আরেকটা হুমকি। এবার আর তারা ‘কুল’ থাকতে পারে নাই। যে ওই কথা লিখছে তাকে ধরে মাইর দিয়েছে। পরে কয়েকটি মসজিদ এবং দোকানে ঢিল ছুঁড়েছে।
এই ঘটনার জেরে শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকায় ফেসবুক বন্ধ এবং ওই এলাকায় কারফিউ জারি হয়েছে।
[বি:দ্র: সব মোজলেম এক না]
==================
খবরটা পড়তে পড়তে কয়েকদিন আগের বিশুর ব্লগপোস্টটার কথা ভাবছিলাম। সাঁওতাল থেকে তারা তিনদিকে ছড়িয়ে পড়ল, এবং ই স লা মা, খ্রীষ্ট, হিন্দু–তিনটা ধর্মকেই আশ্রয় করে কেউ মো জ লে ম, কেউ খ্রীষ্টান, কেউ হিন্দু হয়ে গেলো। এরা কেউই আর্য-ব্রাহ্মণ নয়, কেউই ইউরোপ থেকে আসে নি, কেউ-ই আরব থেকে আসে নি। যদিও অনেকে খুব গর্ব করে বলে তাদের পূর্বপুরুষ ইউরোপ-আরব থেকে আসছে, তবুও এই উপমহাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ‘স্থানীয়’। শুধু ধর্মীয় বিধিবিধানগুলোই বাইরে থেকে আসা।
ধরেন, এক পরিবারের চার ভাই। জন্মসূত্রে এদের একটা ধর্ম হলো। তারপর কেউ কেউ অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করল। এবার ধরা যাক এক ভাই ই স লা ম গ্রহণ করছে। এবার কি সে বলতে পারবে যে তার পূর্বপুরুষ আরব থেকে আসছে? কিন্তু ধর্মীয় কারণে সে এইটা বলতে বাধ্য এবং অন্যান্য ভাইদেরকে ঘৃণার চোখে দেখতে বাধ্য, এবং দরকার হলে অন্য ভাইদের খুন পর্যন্ত করতে বাধ্য। ধর্ম আমাদের এতটাই বোকা আর অন্ধ করে রাখছে যে এই সহজ সরল সোজা হিসাবটাই আমরা বুঝতে চাই না!
==================
প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ধর্ম নিয়ে হাউকাউ করছি। এখন আর ভালো লাগে না এসব। মনে হয়–যার বোঝার সে এমনিতেই বুঝবে, আর যে বুঝবে না তাকে হাজার বুঝালেও বুঝবে না। তাই এসব নিয়ে লেখালেখি কমিয়ে দিয়েছি। দেশের খবরও পারলে এড়িয়ে যাই। তবুও দেশের প্রতি কেমন একটা টান–ফেসবুকে আসলে মনে হয়, কোনো না কোনো ভাবে দেশেই আছি। এখানে আসার পর নিউজফিডে ভয়ংকর সব খবর সামনে চলে আসলে প্রথমেই বিরক্তিতে যেটা মনে আসে–মরুক গিয়া, আমার কী!
Leave a Reply