লিখেছেন পুতুল হক
৩৬.
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কোনো মুক্তমনা লেখক যদি বাংলায় কোরআন ছাপেন, তবে তাঁর কল্লা যাবে এবং সেই প্রকাশনীকে ব্যান করা হবে।
৩৭.
অঘোষিত ইসলামী বাংলাস্তানে একুশে বইমেলা নিয়ে আবেগ না দেখানোই বুদ্ধিমানের কাজ। একুশে বইমেলা এখন শুধুই ধর্ষিত নারী।
৩৮.
সময় কাটানোর জন্য একবার ব-দ্বীপ প্রকাশনীর ‘জিহাদ’ বইটি পড়ছিলাম কোন একটা জায়গায় অপেক্ষা করার সময়। আমার সাথে একজন হিন্দু এবং ধার্মিক শ্রদ্ধেয় দাদা ছিলেন। বইটি দেখে কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করলেন তিনি। এরপর মন্তব্য করেছিলেন, বইটা নিশ্চই ইসলামবিরোধী। ‘জিহাদ’ বইটি তাঁর ভালো লাগেনি, কারণ তিনি ‘জামাতে ইসলামের’ একজন সমর্থক। উল্লেখ্য, প্রকাশনী সম্পর্কেও তিনি ভালো মন্তব্য করেননি। আমার কেন যেন তখন মনে হয়েছিলো, ব-দ্বীপ প্রকাশনীর ওপর আক্রমন আসবে। গত বইমেলার পরের ঘটনা ছিল এটি। তারা প্ল্যান না করে হঠাৎ করে কিছু করে না। তাঁর অন্যান্য মুসলিম বন্ধুর সাথে তাঁকেও আমি গুনগুন করে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুনেছি। খুব মজা পাই যখন এদের মত ‘বিধর্মীদেরকে’ পাকিস্তানী আদর্শের দেশের জন্য সোচ্চার হতে দেখি। মুসলিম এবং বিধর্মী কিছুসংখ্যক লোক ইসলামকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা ইসলামের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় যেতে চায়। যাবে যে খুব শিঘ্র, সে আলামত স্পস্ট। তাদের ফাঁদে ধরা দেয় সরলপ্রান ধর্মান্ধ মানুষের দল। এমনিতেই এদেশে হিন্দুদের সম্পত্তি খুব একটা নেই। ইসলাম এলে যদি ধরে নিই সব সম্পত্তি মুসলমানের দখলে আসবে, তাহলে কতজন মুসলমান জমিদার হবেন? সাধারণ ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী এদের কী লাভ হবে? চাকরি আর ব্যবসাতে হিন্দুদের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না? সব কিছু মুসলমানের দখলে থাকবে? কোনো হিন্দুর প্রমোশন হবে না? কোনো বিধর্মী সিইও, ডিজি, ডিসি, প্রধান বিচারপতি হতে পারবে না? আমরা কি একবারও চোখ খুলে পাকিস্তান, আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়ার দিকে ফিরে তাকাতে পারি না? সেখানে ভালো চাকরী, ভালো ব্যবসা করে কতজন মুসলমান শান্তিতে আছেন? অনেক সময় এবং সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা নিজেদের গড়বার, দেশকে গড়বার, ধ্বংসকে ঠেকাবার জন্য। পারিনি আমরা। সময় শেষ হয়ে গেছে। নিজেদেরকে ওরা অনেক বেশি সংগঠিত করেছে এবং করছে। ক্ষমতার এমন এমন জায়গায় ওরা পৌঁছে গেছে যে, অনেক কলকাঠি এখন ওদের হাতে। খুব শিঘ্র হয়তো একটা কিছু ঘটবে।
৩৯.
প্রায় চার দশক ধরে এই দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মগজ ধোলাই চলছে। অনেকে বাবা-মা হয়ে গেছে। এদের সন্তানদের মগজ ধোলাইয়ের জন্য বাইরের কারো দরকার নেই। ঘর থেকে ধোলাই-করা মগজ নিয়ে এরা বাইরে বের হয়।
৪০.
মাদ্রাসা শিক্ষার ফলে যে-মানসিকতার জন্ম হয়, তাকে মাদ্রাসার বাইরে ছড়িয়ে দেয় ওয়াজ মেহফিল। যারা মাদ্রাসায় পড়েনি, তারাও ওয়াজ থেকে একটা অসভ্য, নোংরা, রুচিহীন, সন্ত্রাসী মানসিকতা নিয়ে ঘরে ফেরে।
Leave a Reply