সব আস্তিক খারাপ না…
সব নাস্তিক খারাপ না…
সব মুসলমান খারাপ না…
সব হিন্দু খারাপ না…
সব পুরুষ খারাপ না…
সব নারী… আর কইয়েন না, নারী নরকের দ্বার…শয়তান আসে নারীর বেশ ধরে…
২) – রবীন্দ্রনাথ নাকি বৌদির…
— দেখুন, লেখককে বিচার করতে হবে তার লেখা দিয়ে, ব্যক্তিজীবন দিয়ে নয়…
– নজরুল নাকি…
— দেখুন, লেখককে বিচার করতে হবে তার লেখা দিয়ে, ব্যক্তিজীবন দিয়ে নয়…
– আজাদ নাকি…
— — দেখুন, লেখককে বিচার করতে হবে তার লেখা দিয়ে, ব্যক্তিজীবন দিয়ে নয়…
– রুদ্র নাকি…
— দেখুন, লেখককে বিচার করতে হবে তার লেখা দিয়ে, ব্যক্তিজীবন দিয়ে নয়…
– তসলিমা নাকি…
— আর কইয়েন না, শালী একটা পুরাই বেশ্যা, খাঙ্কি, পতিতা, মাগী… এত্তগুলা বিয়া করছে… একটার সাথেও ঘর করতে পারে নাই… তারপর কত পুরুষের সাথে শুইছে, হ্যাতে নিজেও গুইনা শেষ করতে পারবে না…
৩) আস্তিকাবালীয় যুক্তি : আপনি সমপ্রেমীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন, আপনি কি সমপ্রেমী?
নাস্তিকাবালীয় যুক্তি : আপনি ন্যুডিস্টদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন, কিন্তু আপনি নিজেই তো ন্যাংটা হন না। আগে নিজের কিছু ন্যাংটা ছবি দেন পারলে…
৪) গত বছর অভিযোগ উঠেছিল–তসলিমা নাসরিন ব্লগারদের টাকা মেরে খেয়েছেন। বিষয়টা নিয়ে কোনো আইডিয়া ছিল না। তাই যারা অভিযোগ তুলেছিল, তাদেরকে বিনীত অনুরোধ করেছিলাম–প্রমাণ দেন। আর এতেই খুব সম্ভবত সর্বপ্রথম তনান্ধ, তনার মুরিদ, তনার চ্যালা, ইত্যাদি ট্যাগ খেয়েছিলাম। এবং তখন থেকেই খেয়াল করলাম, কেমন যেন একটা বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, অনেকেই এড়িয়ে যাচ্ছেন। বেশিরভাগই নাস্তিক-মুক্তমনা।
যখন কেউ দাবী করে–আল্যা আছে/আল্যা নাই, তখনও বলি প্রমাণ দেন। কই, তখন ত কেউ এসে আল্যান্ধ, আল্যার মুরিদ, আল্যার চ্যালা ইত্যাদি ট্যাগ দেয় না। যে কোন অভিযোগ, যে কোনো দাবীর স্বপক্ষে যদি প্রমাণ না দেখাতে পারেন, তাহলে সেগুলো হুদাই কেন দাবী করবেন?
বিষয়টা শুধু তনার ব্যাপারে নয়, আরো যে কারো ব্যাপারে অভিযোগ উঠলেও প্রমাণ চাইব। ব্লগ-ফেসবুকে অনেকরেই ডিফেণ্ড করেছি, এমনকি পিয়ালের চটি লেখার অভিযোগের সূত্র ধরে ফারামি-ফাত্তা-মালদের সাথেও বিশাল তর্ক হয়েছিল। তারা পর্যন্ত ট্যাগাইতে সাহস করে নাই। কিন্তু এখন অহরহ ট্যাগানো হয়ে শুধু তনাকে নিয়ে কোনো অভিযোগ তুললে তার প্রমাণ চাইলে।
কিন্তু খেয়াল করেন, প্রোপিক-কাভারপিকে আমরা পছন্দের মানুষদের ছবি দেই, তাদের বাণী সম্মিলিত ব্যানার টানাই, তাদের পক্ষে যুক্তি দেই, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে ডিফেণ্ড করি–তখন কিন্তু তাদের নাম ধরে কেউ ট্যাগায় না। শুধু তনার বেলাতেই এটা হয় কেন?
৫) কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। সমালোচনার কোনো সীমারেখাও নির্ধারণ করে দেয়া যায় না। যদিও ইদানিং অনেকেই এই কাজটি করেন–কে কী কিভাবে কার কেমন সমালোচনা করবে, কেমন করবে না, কী উচিত, কী উচিত না–এইসব জ্ঞান দিয়ে স্ট্যাটাস প্রসব করতেছেন। যে কেউ যে কোনো ভাষায় সীমাহীন সমালোচনা করতে পারে। তবে সমালোচনা আর গালির মধ্যে পার্থক্যটা ভুলে গেলে কেমনে কী!
আরেকটা ব্যাপার–কী উচিত আর কী উচিত না–এর কোনো নির্ধারিত কেতাব আমাদের নেই। কেউ কিছু বললে বা করলে আমি বড়জোর প্রশ্ন তুলতে পারি–এটা করা উচিত হয়েছে কি-না… উচিত হলে তার পেছনে যুক্তি কী…
৬) তনার পোস্ট পইড়া আমি ভালো করেই বুঝছি এইটার সাথে রুদ্রর সম্পর্ক আছে। একজনরে কইলাম যে, আমার রুদ্রানুভূতিতে আঘাত লাগছে। কইল–প্রমাণ করেন যে এইটা রুদ্ররে নিয়া লেখা। আমার মাথা গরম হয়ে গেছে। মাথার চুল ছিঁড়ছি। হাত পা কামড়াইছি। কিন্তু কেমনে প্রমাণ করব সেইটা বুঝতেছি না। ওদিকে পোস্টটা যতবার মনে আসে, ততবার সারাদেহে চুলকানি…মনে হয় কেউ শরীরে আগুন ধরাই দিছে। কিন্তু তর্ক কেমনে করব বুঝতেছিলাম না। পুরাই বাচ্চাদের মত আচরণ। শেষে কইলাম, খেলুম না, আমি অহন ‘মাটিতে সেহরি খাইয়া’ ঘুমাইতে যামু…
৭) তর্কের সময় আবেগী হয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কোনো কিছুর দাবী যখন করবেন, চাই আপনার সেই দাবী প্রতিষ্ঠিত হোক। কিন্তু সেখানে যুক্তি-প্রমাণের বদলে আবেগী হয়ে গেলে মারা খাবেন নিশ্চিত। তখন বাচ্চাদের মত কাঁদবেন, হাত-পা ছুঁড়বেন, মাথার চুল ছিঁড়বেন, আর নানান রকম ট্যাগিং করে বিপক্ষের হিন্দি চুল ফেলাবেন…
৮) যুক্তিতর্কের সময় নো ছাড়। সেটা যে কেউ হন না কেন। আপনার যুক্তিতর্কের গ্রাউণ্ডে যদি ফাঁক-ফোকর থাকে তো সেখানে অনেক কিছু ঢুকে যেতে পারে… কিন্তু কোনো কিছুই ব্যক্তিগত নয়। এখানে কোনো বিতর্ক প্রতিযোগিতা হচ্ছে না যে জিতে গেলে প্রাইজ পাব। এসব শুধুই নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার জন্য…
৯) ধর্মটাকে সামান্য একটা ডাল মনে করি, আর পুরা বটগাছ হলো পুরুষতান্ত্রিকতা। ধর্ম পুরুষতান্ত্রিকতার সামান্য একটা হাতিয়ার মাত্র। সামান্য কমনসেন্স দিয়ে ধর্মের শিকড় উপড়ে ফেলতে পারলেও পুরুষতান্ত্রিকতার শিকড় অনেক গভীরে…আমাদের অস্থি-মজ্জা-রক্ত-শিরা-উপশিরায় পুরুষতান্ত্রিকতার শিকড় গ্রোথিত। তাই অনেক বড় বড় নাস্তিক-মুক্তমনাকেও দেখা যায় নারী নিয়ে কথা প্রসঙ্গে নারীর দেহ, যৌনতা, স্থূল কৌতুক তুনে আনেন। পুরুষতান্ত্রিকতা এমন ভাবেই মিশে আছে যে অনেক নারীকেও দেখা যায় বুঝে-না-বুঝে পুরুষতান্ত্রিকতা জয়গান গাইতে।
১০) পুরুষতান্ত্রিকতার ধারক-বাহকদের জন্য নতুন দুইটা শব্দ পাইছিলাম–“পুরীষের বাচ্চা”। কিন্তু Annopurna Debi কইলেন, “পুরুষকে পুরীষ বললেও ওতো গায়ে লাগে না যতোটা লাগে পুরুষ বললে, কারণ তারা জানে কোন কোন স্থানে পুরীষ থেকে জঘন্য।” শালার পুরীষের বাচ্চাদের জন্য কোনো বিশেষণই দেখি যথোপযুক্ত না। আমার এত সাথের শব্দ দুইটাও দেখি বিফলে গেল!
Leave a Reply