• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

ও মোর বানিয়া বন্ধু রে, একটা তাবিজ বানাইয়া দে…

You are here: Home / চুতরাপাতা / ও মোর বানিয়া বন্ধু রে, একটা তাবিজ বানাইয়া দে…
June 14, 2013

১.
আমাদের বংশের তাবিজ কবজ তদবীর ঝাড়ফুঁক পানি পড়া চুন পড়া মাটি পড়া ইত্যাদির ব্যবসা অনেক পুরানো। ঠিক কবে থেকে এর শুরু, তার ইতিহাসটা ভালো করে শোনা হয় নাই। আসলে ভালো করে শোনার আগেই দাদা চলে গেলেন। তখনো অনেক ছোট ছিলাম বলে এসবের প্রতি ততটা আগ্রহ জন্মেছিল না। তিনি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকলে হয়তো সব জানতে পারতাম। আর পারিবারিক সূত্রে এই ব্যবসাটাও হয়তো পেশা হিসাবে গ্রহণ করতাম। আমার মত কুঁড়ে মানুষের জন্য একেবারে খাপে খাপ হত।

ছোটবেলা যতটা দেখেছি তাতে বুঝেছিলাম এটা বংশানুক্রমিক ব্যবসা হলেও ততটা পেশা হিসাবে নিতে পারেন নাই কেউই। আমার বাবা তো এসবে একেবারেই আগ্রহ ছিল না।  জমিজমাই বরাবর আমাদের প্রধান আয়ের উৎস। তাছাড়া আধুনিক চিকিৎসার সহজলভ্যতা এবং মানুষের সচেতন হওয়ার ফলে এটা এমনিতেই বেশিদিন টিকত না। বাবার আগ্রহ না থাকাতে দাদার কাছ থেকে বংশানুক্রমিক ভাবে ওসবের ভারটা এসে পড়ে আমার উপরে, সেই ছোটবেলা থেকেই।

দাদা ছোটবেলাতেই আমাকে মাঝে মাঝে এটা সেটা শিখিয়ে দিতেন। তাছাড়া বয়স হওয়াতে নিজে ছোটাছুটি করতে পারতেন না বেশি। আমাকেই মুখে বলে দিতেন। আমি মুখস্তর মত করে অনুসরণ করতাম আর সেগুলা করে দিতাম। এবার দাদা নিজেই কিভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন এবং আমাকেও সতর্ক করে দিলেন, সেই গল্পটা বলি-
দাদার এক বোন দুটো ছেলে রেখে বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই মারা যান। তারপর তাদের বাবাও মারা গেলে দাদা তার এই এটিম দুই ভাগিনাকে আমাদের বাড়িতেই নিয়ে আসেন। তারা বড় হলে বড় চাচাকে বিয়ে দিয়ে তাদের জমিজমা বুঝিয়ে ভিন্ন বাড়ি করে দেন আমাদের বাড়ির পাশেই।

ছোট চাচা প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। একবার পক্স হয়ে মর মর অবস্থা থেকেও বেঁচে যান। কিন্তু মুখে স্থায়ী কালো দাগ থেকে যায়। এরকম অনেক কারণেই তিনি প্রথমে বিয়ে করতে চান নাই। আর যখন বিয়ে করেন তখন অনেক বয়স হয়ে যায়। সেই হিসাবে চাচীর বয়স ছিল খুব কম। গরীবের ঘরের সুন্দরী মেয়ে। ঠিক পুতুলের মত দেখতে এই চাচীর খুব ভক্ত হয়ে পড়েছিলাম খুব ছোটবেলায়। চাচী আমাকেও অনেক ভালোবাসতেন। আর চাচীও যখন যা করতে বলতেন, করে দিতাম।

তো বিয়ের অনেকদিন হয়ে গেলেও বাচ্চা-কাচ্চা হচ্ছিল না চাচীর। পরে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ আর আমার দাদার তাবিজের গুণে (!) বাচ্চা আসল। কিন্তু কিছুদিন পর শুনলাম বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। চাচী অনেক কাঁদল। আমি বুঝতাম, বড় চাচী এই ছোট চা্চীকে সহ্য করতে পারত না, খুব হিংসা করত, খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খোঁটা দিত। আর ছোট চাচীও বোকার মত অভিমান করে বেশিরভাগ সময় কান্না করত আর না খেতে থাকত। আমি চাচীর ঘরের আশেপাশ দিয়ে ঘুরতাম, যদি চাচী কিছু খাইতে চায় বা কিছু এনে দিতে বলে!

প্রথমবার বাচ্চা নষ্ট হওয়ার পর থেকে যখন আবার নতুন করে তাবিজ বানাতাম, তখন মাঝে মাঝে দাদাকে বলে ফেললাম, দাদা, এই তাবিজে তো কোন কাজ হয় বলে মনে হয় না। বাচ্চা তো নষ্ট হয়ে যায়। দাদা কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তারপর ধমক দিতেন, তোরে যা বলছি তাই কর। সেবার বাচ্চা ভালোভাবেই হলো। কিন্তু কিছুদিন পরই আবার মারা যায়। সবাই মিলে পুকুরের ওপাড়ের বাঁশবাগানের নিচে বাচ্চাটাকে কবর দিয়ে এল।
এর পর থেকে দাদা সহজে কাউরে তাবিজ বা পানি পড়া- এসব দেন নাই। সবাইরে বলতেন শহরে গিয়ে ভালো ডাক্তার দেখাতে।

 

২.
সেবার ফসলাদি খুব ভালো হয়। দুই চাচায় ভিন্ন হয়ে গেল। ছোট চাচা আলাদা ঘর উঠালো। চাচাকে আগের তুলনায় হাসিখুশি দেখতাম। চাচীর স্বাস্থ্যও অনেক ভালো হলো। অনেক দিন পর পর মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরতাম। তখন হঠাত দেখে মনে হত চাচী যেন অনেক বড় হয়ে গেছে। দেখতে আর সব মহিলাদের মত লাগত। তারপর একদিন চাচী বলল দাদাকে বলে তাবিজ বানিয়ে দিতে। তার মানে চাচী আবার প্রেগন্যান্ট।

দাদাকে বললাম, কিন্তু তিনি কিছুতেই রাজি হলেন না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, বানাবা না কেন? বলল, এতে আসলেই কোন কাজ হয় না। অনেকে বিশ্বাস করে একটু মনের শান্তি পায়। এর বেশি কিছু না। শেষে আমাকে সব বলে দিলেন। আমি নিজেই কাগজে লিখলাম। ভাঁজ করে তাবিজে ঢুকিয়ে মোম দিয়ে মুখ বন্ধ করলাম। কালো সুতায় বেঁধে চাচীর গলায় ঝুলাই দিলাম।

এইবারে কোন সমস্যা ছাড়াই ছেলে হল। চাচী আর বাচ্চা দুইজনেই সুস্থ। এরপর থেকে কেউ এলেই দাদা আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন। ছোটবেলা দেখতাম বয়সে ছোট কিন্তু ব্রাহ্মণ, এমন কাউরে বড়রা প্রণাম করে। দাদা মারা যাওয়ার পর খেয়াল করলাম, লোকে দাদাকে যেমন সম্মান করত, এই তাবিজ দেয়ার পর থেকে আমাকেও সেভাবে সম্মান করতে শুরু করছে। ছোটবেলা এসব দিলেও কিন্তু ধীরে ধীরে আমিও ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে পরে এসব কমিয়ে দিলাম। লোকজনরে ডাক্তারের কাছে পাঠাতাম। এখন লোকজন এমনিতেই বোঝে, যে এসবে কাজ হয় না। তবুও কেউ কেউ চিকিৎসা করিয়েও যখন কোন ফল পায় না, তখন আসে। ফিরিয়ে দিতে পারি না!

Category: চুতরাপাতাTag: কুসংস্কার
Previous Post:আওয়ামী মুসলিম লীগের পুনরুত্থান
Next Post:আওয়ামী লীগ আর জামাত এক বিছানায়?

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top