আস্তিক-নাস্তিক নিয়ে তর্কের কোন শেষ নাই। অর্থাৎ ঈশ্বর আছেন কি নাই, এই মিমাংসা কোনদিন আসবে কিনা, আমরা জানি না। যুক্তি-তর্কের যেখানে শেষ, সেখান থেকেই বিশ্বাসের সূত্রপাত। আর এই মানুষের এই বিশ্বাসকে পুঁজি করেই কেউ ধর্ম বানায়, কেউ সেই ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে। এবং যুক্তি-তর্কে পরাস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত আমরা বলতে বাধ্য হই- ধর্ম ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার।
ধর্ম ব্যক্তিগত ব্যাপার- এই কথাটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। আমি আমার ধর্ম পালন করি ব্যক্তিগত ভাবে। ধর্ম নিয়ে আমার চিন্তাভাবনা, লেখালেখি- সবই ব্যক্তিগত। আমার ব্লগ, আমার ফেসবুক ওয়াল- আমার ব্যক্তিগত ডায়েরি। আমার ওয়েবসাইট আমার ব্যক্তিগত বিচরণক্ষেত্র। এখানে আমি আমার মত করে ধর্ম পালন করি। আমি যতক্ষণ না দেশের সার্মভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর কিছু না করছি, যতক্ষণ কোন মানুষের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু না করছি, ততক্ষণ রাষ্ট্র কোন ভাবেই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাতে পারে না। তেমনি পারেন না আপনি বা আপনারা।
এখানে আমি কাউকে জোর ধরে আনি না। আমার কর্মকাণ্ড আপনাদের ভালো না লাগলে পাগল-ছাগল মনে করে এড়িয়ে যাবেন, আনফ্রেণ্ড করে দেবেন, ব্লক করে দেবেন। আমার ব্লগে আপনারা না এলেই পারেন। আমার লেখা আপনাদের কাছে ভয়ংকর লাগে, কিন্তু আপনাদের দৃষ্টিতে ভয়ংকর লেখার যে সংজ্ঞা, সেই সংজ্ঞার আলোকে এর চাইতেও হাজারগুন ভয়ংকর লেখা ইন্টারনেটে, বিজ্ঞানের বইতে ছড়িয়ে আছে।
ব্লগে দেখেছি ধর্ম নিয়ে পোস্ট দিলেই সবার হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কিন্তু অন্য টপিকের কোন পোস্টে কারো দেখা নাই। কে ধর্মের বিরুদ্ধে লিখল না লিখল, সেটা নিয়েই সবার আগ্রহ। আপনি ধর্মের পক্ষে, নাস্তিকতার বিপক্ষে লিখলে অন্য একজন ধর্মের বিপক্ষে, নাস্তিকতার পক্ষে লিখতে পারবে না কেন? আপনি ধর্মের পক্ষে লিখলে কোন নাস্তিক আপনার কল্লা ফেলতে যায়না। তাহলে উল্টাটা কেন হবে! আপনি ধর্ম মানেন, তাই আপনারই সব বলার অধিকার থাকবে?
এখন এই লেখালেখির জন্য কয়েকজন ব্লগারকে ফাঁসি দিয়েই যদি মনে করেন ধর্মের জয় হয়েছে, তাহলে বলব ধর্মের এমন করুণ দশা অনেক কাল হয় নাই। বিপক্ষ মতের কয়েক জনকে জানে মেরে ফেলে আপনারা বলতে চাইছেন আপনার ধর্ম শ্রেষ্ঠ এবং শান্তির ধর্ম! নাস্তিকদের সামান্য কিছু লেখালেখির স্রোতে যদি আপনার ইমান, বিশ্বাস, ধর্ম ভেসে যায়, তাহলে সেই দায় নাস্তিকদের কেন হবে? (এখানে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, নাস্তিকরা আপনার কাছে গিয়ে নাস্তিকতার দাওয়াত দেয় নাই। আপনিই যেচে তাদের সান্নিধ্যে গেছেন।)
দুদিন আগে ফেসবুকে একটা কৌতুক দেখলাম (হুবহু মনে নেই, নামটাও স্মরণে নেই, যিনি লিখেছেন তার সূক্ষ্ণ চিন্তা-ভাবনার তারিফ করছি)-
এক মহিলা পুলিশে ফোন দিয়ে অভিযোগ করলেন যে পাশের বাড়ির এক ভদ্রলোক উলঙ্গ হয়ে নিজের ঘরে চলাফেরা করছেন এবং সেজন্য তার (মহিলার) কোন একটা অনুভূতিতে আঘাত লাগছে।
পুলিশ এলো। এসে ভদ্রলোকের কথা জিজ্ঞেস করল। মহিলাটি জানালা দেখিয়ে দিলেন।
পুলিশ জানালা দিয়ে কিছু দেখতে পেল না।
তখন মহিলা বললেন, জানালার নীচে একটা টুল দিয়ে তার উপর দাঁড়িয়ে দেখলে তবেই দেখা যায়।
Leave a Reply