• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

কোন এক সময়ের সৃষ্ট ঈশ্বর শুধুমাত্র সেই সময়ের মানুষের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে – আসিফ মহিউদ্দীন

You are here: Home / চুতরাপাতা / কোন এক সময়ের সৃষ্ট ঈশ্বর শুধুমাত্র সেই সময়ের মানুষের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে – আসিফ মহিউদ্দীন
February 12, 2012

একটা দেশ বা অঞ্চল থেকে উঠে আসা ধর্ম সর্বদাই সেই অঞ্চলের মানুষের জাতিগত মনস্তত্ব এবং তাদের সভ্যতার মূল সুর ধারন করে। এই অর্থে প্রাচীন ধর্মগুলো এবং সেই সেই আঞ্চলিক দেবতারা বা একেশ্বর ও তার বৈশিষ্ঠ্যসমুহ সেই অঞ্চল এবং তার মানুষদের, তাদের সভ্যতার প্রকৃতি অনুধাবন এবং পর্যবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপুর্ন।

আফ্রিকার ধর্মগুলোকে দেখা যায়, তাদের দেবতারা সাধারণ দৃষ্টিতে কুৎসিত এবং ভয়ংকর। তাদের ছোট ছোট গোত্র গড়ে ওঠে আরেক গোত্রের সাথে যুদ্ধ করে, প্রজন্মের পর প্রজম্ন হানাহানি এবং মারামারি করে। তাই সেই সব ধর্মের দেবতাদের মূর্তির হাতে থাকে যুদ্ধাস্ত্র, তারা হয় শক্তিশালী, তাদের চেহারা হয় আতংক সৃষ্টি করার মত। বস্তুত তারা এমন এক দেবতার কল্পনা করে, যারা তাদের পাশের গোত্রের আক্রমন থেকে রক্ষা করবে, তাদের মেরে কেটে হত্যা করবে।

গ্রীস এবং রোমের দেবতাদের দেখা যায়, তারা বীর এবং নারীলোভী। জিউসের লাম্পট্য সর্বজনবিদিত, একই সাথে গ্রীক জাতি বীর এবং যোদ্ধার জাতি হবার কারণে তার অধিকাংশ দেবতাই তীর ধনুক হাতুরী নিয়ে চলাফেরা করেন। কিন্তু দেবতাদের যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে চলাফেরা এবং সারাক্ষণ মারমার কাট কাট মানসিকতার কোন অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না।

প্রাচীন ইহুদী ধর্মের একেশ্বর ইয়াহওয়েহ (ইংরেজীতে জিহোভা) ছিলেন প্রবল প্রতাপশালী, হিংসুক, স্বার্থপর, যুদ্ধবাজ, নারী নির্যাতক, ভিন্ন মতাবলম্বীর প্রতি আক্রমনাত্মক এক অশুভ ঈশ্বর। খুনের বদলা খুন, চোখের বদলা চোখ এই আইনগুলোও প্রাচীন ইহুদী আইন, মাটিতে অর্ধেক পুঁতে পাথর ছুড়ে হত্যা করা, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা সেই ঈশ্বরের নির্দেশ। সেই ঈশ্বর ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা পোষণ করতো, এবং ইহুদীদের পৃথিবীর শ্রেষ্ট জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তাই আজো ইজরাইল থেকে মুসলিমদের বিতাড়িত করা হয়, ফিলিস্তিনীদের উপরে অত্যাচার করা হয়। কারণ ইহুদীদের ঈশ্বর ইহুদীদের মনস্তত্ব থেকে আলাদা কিছু না, দীর্ঘদিনের জাতিগত বৈশিষ্ঠ্যগুলোই দানা বেধে তাদের ঈশ্বরের চরিত্র সৃষ্টি করেছে।

খৃষ্টধর্মটা ইহুদী ধর্মেরই আপডেটেড ভার্শন, তবে তার সাথে ছোট ছোট প্যাগান ধর্মগুলোর এবং তাদের দেবতাদের লৌকিক চরিত্রের মিশ্রন খৃষ্টধর্মটিকে শক্তিশালী করেছে, খৃষ্টধর্মের এই এডপ্টেশন পাওয়ার তাদের মূল শক্তি এবং তাদের ব্যাপক বিস্তারের কারণ। কিন্তু ইহুদী ধর্মের থেকেই আসার কারণে এই ধর্মের ঈশ্বরও মোটাগাদের সাম্প্রদায়িক, এই ধর্মের ঈশ্বর বিধর্মীদের প্রতি ততটাই নৃশংস যতটা ইহুদী ধর্ম ছিল। যীশুর মা নারী হবার পরেও এই ঈশ্বর নারীকে শুধুমাত্র সন্তান জন্মদানের মাধ্যমই ভেবেছে।

ইসলাম ধর্মও একইভাবে ইহুদী ধর্মের আপডেট ভার্শন। এই ভার্শনটি যতটা না তৎকালীন আধুনিক ধর্ম খৃষ্ট ধর্ম থেকে নিয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশী নিয়েছে ইহুদী ধর্ম থেকে। এবং আরবীয় বর্বর জাতিগোষ্ঠীর সমস্ত বর্বরতাই এই ধর্মের ঈশ্বর আল্লার চরিত্রে বিদ্যমান। তাই আল্লা নারীকে শষ্যক্ষেত্র বলে ঘোষনা করে, বিধর্মীদের হত্যা করতে বলে, তাদের উপরে জিজিয়া কর আরোপ করতে বলে।
ইসলাম ধর্ম যখন পারশ্য হয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করে, তখন ইসলাম এবং আল্লার সেই আরবীয় বর্বর চরিত্রের ব্যাপক পরিবর্তন আসে। আমরা দেখতে পাই, সেই সময়ে সুফীবাদ শক্তিশালী হয়, হত্যা লুন্ঠনের বদলে আল্লা হয়ে ওঠেন প্রেম আর আধ্যাত্মিকতার উৎস। ইরাক ইরানের উন্নত সভ্যতা ইসলামকে পরিবর্তন করে দেয়, ধ্যান, প্রজ্ঞা আর আধ্যাত্মিকতার বিকাশ ঘটে। ভারতে যখন এই আধ্যাত্মিকতা এবং ভালবাসার সুফীবাদ প্রবেশ করে, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মের শোষণে পিষ্ট, বর্ণবাদের যাতাকলে নির্যাতিত প্রচুর মানুষ এই ধর্মটি গ্রহন করে। কিন্তু আধুনিক সময়ে ওয়াহাবীবাদ ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠার ফলে, ওয়াহাবী বাদের মূল প্রেরণা আদি আরবীয় বর্বর ইসলাম বলেই এই সময়ে ইসলামের ভেতরে ব্যাপক মৌলবাদের ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। আধ্যাত্মিক আল্লা আবার হয়ে ওঠেন বর্বর হিংসুটে রাজা, যার তোষামদি না করলেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে ভারতবর্ষে ঈশ্বর প্রশ্নে ইউরোপ এবং পারশ্য থেকে আসা আর্যরা এবং এই অঞ্চলের লোকিক দেবতারা এক মিশ্র ঈশ্বরের জন্ম দেয়। এই কারণে হিন্দু ধর্মে যেমন একেশ্বরও রয়েছে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র-বড়বড় দেবতাও রয়েছে। দেবতা-অবতার-একেশ্বর সবকিছু মিলে মিশে এক মিশ্র ধর্মের নাম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। আর্যদের নিয়ে আসা কঠোর বর্ণবাদ এবং এই অঞ্চলের মানুষদের ক্রমশ কোনঠাসা করে তাদের শোষনের পিরামিডে সর্বনিম্নে পাঠিয়ে দেয়া এই অঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করে। এই ধর্মেও তাদের দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের মনস্তত্বের সাথে সংগতিপুর্ণ, গাজাখোর শিব আর কালীর তান্ডব এই অঞ্চলের মানুষেরই বৈশিষ্ট্য। একই সাথে কৃষ্ণের লাম্পট্য, দেবতাদের যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব, দুর্গার দশহাতে দশ অস্ত্র ধারণ করা সবই এই অঞ্চলের সেই সময়ের অবস্থার ইতিহাস ধারণ করে।

আর একেবারেই এই অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া বৌদ্ধ ধর্মটির(আসলে দর্শন) প্রবক্তা সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ ঈশ্বর প্রশ্নে নিশ্চুপ ছিলেন। তার(এবং চার্বাকদের) নিরেশ্বরবাদী দর্শন, লৌকিকতা এক শান্তিবাদী ধর্মের প্রবর্তন করে, যার কারনে এই সময় পর্যন্ত বৌদ্ধদের ভেতরে তীব্র কোন মৌলবাদ, হিংসা, হানাহানি, ঘৃণা দেখতে পাওয়া যায় না। যদিও ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু ধর্মের প্রভাবে ইতিহাসে বৌদ্ধরা বেশ কিছু যুদ্ধ চালিয়েছে, কিন্তু এই ধর্ম বা দর্শনের মূল সুর যেহেতু ঈশ্বর কেন্দ্রিক নয়, তাই মানবতার দিকেই তাদের ঝোঁক দেখতে পাওয়া গেছে।

এই সমস্ত বিষয় এক এক করে পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, কোন এক আঞ্চলিক ঈশ্বর সৃষ্টি, তার উপরে নিজেদের বৈশিষ্ট্য আরোপের চেষ্টা সবসময়ই সেই অঞ্চলের মানুষের সাধারণ বৈশিষ্ট্যই ধারণ করে। সমস্যা হচ্ছে মানুষ ক্রমশ সভ্য হয়, আধুনিক হয়, মননশীল হয়, মানবিক হয়, সভ্য হয়, এভাবেই সভ্যতা এগিয়ে যায়। আর কোন এক সময়ের সৃষ্ট ঈশ্বর শুধুমাত্র সেই সময়ের মানুষের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বলে ঈশ্বরটিও সেই সময়ের মানূষদের মত অসভ্য, বর্বর এবং হিংসুটে থেকে যায়। মানুষ পালটে যায়, সভ্য হয়, ঈশ্বরটি আর পাল্টায় না। সে সেই একই রকম অসভ্যই থেকে যায়।

বিঃদ্রঃ ধর্মানুভুতি নিজ দায়িত্বে রাখুন। স্ট্যাটাস পড়ে আহত বা নিহত হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন। এখানে ল্যাদানো নিষেধ।

—আসিফ মহিউদ্দীন
Saturday, February 11, 2012 at 11:25am

Category: চুতরাপাতাTag: আসিফ মহিউদ্দীন, ঈশ্বর, ধর্ম
Previous Post:কোরান সংকলন নিয়ে কিছু চুতরাপাতা
Next Post:সোনার বাঙলাদেশ আর রইলো না

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top