লিখেছেন শূন্যের গুণফল
আমাদের আশেপাশে অনেক ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া যায়, তারা রাস্তা বা কোথায় কোনো আরবি লেখা যদি দেখে, তাহলে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। চুমা দেয়, সালাম করে, কোথায় রাখবে, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে – হোক না সেটা চটি গল্প বা কোনো গালাগাল।
অথচ অামাদের মাতৃভাষা বাংলায় যদি ভাল কোনো লেখাও থাকে, তা নিয়ে এদের কোনো ভাবাবেগ হয় না। তা দিয়ে পাখির পায়খানাও পরিষ্কার করে। অনেক আবার প্রস্রাব করার পর ব্যবহার করে।
কেন নিজের মাতৃভাষার প্রতি হীনমন্যতা, অসম্মান? অথচ অারবি লেখা, যার অর্থই অনেকে জানি না, তার প্রতি দরদ উথলে পড়ে কেস?
আবার অনেক মসজিদে দেখা যায়, খুৎবা পাঠ করা হয় আরবি ভাষায়। প্রশ্ন জাগে, সেই মসজিদে অারবি-জানা কয় জন মুসল্লি সেখানে যায়? সংখ্যাটি নিশ্চয়ই নগণ্য বা এমনকি শূন্যও হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আর কতদিন এভাবে পরভাষার প্রতি টান তৈরি করা হবে? কতদিন আমরা ইমামের ঔ মুখস্থ করা হোক বা জানা হোক অজানা ভাষা শুনে মাথা দোলাতে থাকব? কতদিন রাস্তায় পড়ে থাকা অাঁকাবাঁকা আরবির প্রতি দরদ থাকবে, অথচ আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে হেয় করব?
অারবি মহানবীর মাতৃভাষা, তাই বলে কি আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, আমাদের বাংলাকে আগে মর্যাদা দেয়া উচিত নয়?
পাকিস্তানী আমল থেকে আমাদের মাতৃভাষাকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে কাঠমোল্লারা, এখনও তা চলছে। আমাদের তা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। কাঠমোল্লারা আরবি শ্লোক উদ্ধৃত করে সেটার নিজের মতো ব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করছে, প্রয়োজনে হিংস্র করে তুলছে সাধারণ মুসল্লিদের।
যা বলতে চাচ্ছি, আসলে আরবি ভাষাকে যতই পবিত্র মনে করা হোক না কেন, তাতেও খারাপ কথা লেখা থাকে ও থাকতে পারে। ভাষা হিসেবে আরবি বাকি যে কোনও ভাষার মতোই – বিশেষ মর্যাদা পাবার যোগ্যতা তা রাখে না। অথচ আমরা আরবি ভাষা বিষয়ে যতটা আবেগাপ্লুত হই, আপন ভাষা বাংলার ক্ষেত্রে তা হই না। এই মনোভাব পরিবর্তনের সময় এসেছে।
Leave a Reply