লিখেছেন নাস্তিক ফিনিক্স
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস নিয়ে পড়তে পড়তে এক জায়গাতে হোঁচট খেতে হল। লেখাটা অনেকটা এই রকম: “১০৭ বছরের নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে (১৯০১-২০০৮) নোবেল পেয়েছেন ৪ জন মুসলিম – ১ জন সাহিত্যে, ২ জন পেয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার এবং মাত্র এক জন বিজ্ঞানে। অথচ বিশ্বের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মুসলিম।
মজার ব্যাপার হলো, সেই একই ১০৭ বছরের ইতিহাসে বিশ্ব জনসংখ্যার নিরিখে ০.০২% ইহুদিরা জিতে নিয়েছে ১২৯ টি নোবেল পুরস্কার: শান্তিতে – ৮ টা, সাহিত্যে – ১০ টা ; বিজ্ঞানে – ১১১ টা। কেন মুসলিমদের এই দুরবস্থা?
১. সমগ্র আরব দুনিয়া গত এক হাজার বছরে যতো বই অনুবাদ করেছে, শুধু স্পেনেই ততোগুলো অনূদিত বই প্রকাশিত হয় মাত্র এক বছরে।
২. ৫৭ টা মুসলিম দেশ আছে বিশ্বে। আর সেই দেশগুলোতে গড়ে ১০টি করে বিশ্ববিদ্যালয় আছে। মোট ৬০০-রও কম। শুধু ভারতে ৮৪০৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমেরিকায় ৫৭৫৮ টি।
আরব দুনিয়ায় ২২ টি দেশ, গড়ে প্রত্যেক দেশে ১০ টি করে বিশ্ববিদ্যালয় ধরলে মোট ২২০টি। আরব দুনিয়ার জনসংখ্যা ৩৯ কোটি। আবার গড় করি, তাহলে প্রত্যেক ১৭ লক্ষ ২৭ হাজার আরবীয় পিছু একটি করে বিশ্ববিদ্যালয়। আরব দুনিয়ার গায়ে লাগে থাকা ৮০ লক্ষ লোককে নিয়ে ছোট্ট একটি ‘শয়তান’ দেশ ইসায়েলে রয়েছে ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়। গড়ে ২ লক্ষ ২৮ হাজার পিছু একটি করে বিশ্ববিদ্যালয়।
৩. মুসলিম ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ৫৭ টি এবং এদের নিয়ে গঠিত OIC বা Organisation of Islamic Conference. নিচের Graphical Representation-এ খুব সুন্দর করে এদের সাথে বাকি দুনিয়ার প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষার হার তুলনা করা হয়েছে।
(২০১৩ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী)
৪. ওপরের তিনটি তথ্য পড়ে আপনি যদি মনে করে থাকেন যে মুমিন বান্দাদের শিক্ষার এই অবনতি কেবল এই একবিংশ শতাব্দীতে, তাহলে আপনি ভুল করছেন। অনেক ইতিহাসবিদ দাবি করেন, ইসলামের শুরুর সময়টা বেশ তরতাজা, শিক্ষার একটা ঝড় এসেছিল আরব দুনিয়ায়। কিন্তু বিখ্যাত ইতিহাসবিদ Donald Quataert-এর দাবি অনুযায়ী – ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে মুসলিমদের শিক্ষার হার ছিল ২% থেকে ৩%।
শেষ করবো সারা দুনিয়ার মমিন মমিনাদের বাপ-দেশ, মহানবীর দেশ সৌদি আরব-এর মহান শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে।
- সৌদি আরবে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত কোনও হাই স্কুল ছিল না।
- সৌদি আরবে মহিলাদের জন্য প্রথম বিদ্যালয় স্থাপন করা হয় ১৯৫০ সালে।
- ২০০৮ এর তথ্য অনুযায়ী, ২ কোটি ৬০ লক্ষ সৌদি আরববাসীর জন্য মোটে ২৫০ টি পাঠাগার ছিল।
- ২০০৬ পর্যন্ত সৌদি আরবের সমস্ত পাঠাগারে মহিলা ও মমিনাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
(তথ্যসূত্র: Prophets and Princes – Mark Weston)
Leave a Reply