• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

শখ এবং সভ্যতা

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / শখ এবং সভ্যতা
May 23, 2017

ভাবছি ‘শখ’ জিনিসটা কীভাবে এলো।

সাঁওতালেরা চাষাবাদ শেখার আগে নিশ্চয়ই পশু শিকার করত, মাছ ধরত। তাদের ইতিহাসে দেখি তারা শীতকালে বা শীতের শেষে আশেপাশের কোনো পুকুর বা ডোবায় দলবেঁধে মাছ ধরতে যায় শখ করে।

আমার মত সমাজের নিম্নবিত্ত বা নিচুস্তরের মানুষদের মধ্যে এখনো ওসব আছে। শীতের শুরুতেই এঁটেল মাটি দিয়ে গুলি বানিয়ে সেগুলো নাড়ার আগুনে পুড়িয়ে দলবেঁধে গুলটি নিয়ে বক, পানকৌড়ি, বুনোহাঁস, আরো কত কী শিকার করতে যেতাম পাথারে। অথবা গ্রামের পগার, ঝোপজঙ্গল বা বাঁশঝাড়ে পাখি খুঁজতাম ডাহুক, কানাকোকা, বটগাছে হরিয়াল। আর এখন সেভাবে বন্যা হয় না বলে আশেপাশের নালা বা ডাঙ্গায় পানি থাকে না। ছোটবেলা থাকত। ছোটরা সেখানে বড়শি দিয়ে, বাঁধ দিয়ে পানি সেঁচে, বা গামছা দিয়ে মাছ ধরতাম। বড়রা সবাই মিলে যেত বিলের মধ্যে কারো পুকুর বা ডোবায়। সারা পুকুর কচুরিতে ভরা থাকত। সেগুলো তুলে যার যার জায়গা করে সারাদিন খেপলা জাল দিয়ে কৈ, শিং, মাগুর, শোল, নানা প্রকারের কার্প জাতীয় মাছ। এর কোনোটাই জীবিকা নয়, শখ।

আমাদের মুসলিম গ্রামগুলোতে ফুলের বাগান খুব একটা দেখা না গেলেও বিশুদের মত হিন্দুগ্রামগুলোতে প্রায় সবার বাড়িতে কমবেশি ফুলের বাগান থাকত। তবে হিন্দু-মুসলিম উভয় গ্রামেই শীতকালে সবজি বাগান দেখা যেত। প্রায় সবাই চালের উপর বা উঠানে জাঙলা দিয়ে লাউ, কুমড়া, শিম ইত্যাদি ফলাত। আর বাড়ি সংলগ্ন জমিতে কপি, টমেটো, ঢেঁড়শ, মরিচ ইত্যাদির চাষ করত। এগুলোর যত্ন নেয়া, বেড়া দেয়া, নিয়মিত পানি দেয়া–বাড়ির মেয়েরাই বেশি দেখাশোনা করত।

ইদানিং হয়তো সেসব আর তেমন একটা দেখা যায় না। কিন্তু ওই যে আমরা এককালে জীবিকার প্রয়োজনে পশু শিকার করতাম, মাছ ধরতাম, চাষাবাদ করতাম–এখনো সেগুলো হয়তো আমাদের রক্তে প্রবাহমান–তাই এখনো সুযোগ সুবিধা পেলে আমরা শখ করে পশু-পক্ষী পালি, বন্দুক নিয়ে শিকার করতে যাই, বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যাই, কেউ টবে বাগান করি, ফুল-ফল ফলাই। এককালের জীবিকাই পরবর্তীকে শখে পরিণত?

আরো কিছু ব্যাপার আছে–এই যে সাধারণ বনভোজন–এটা কি আমাদের সেই আদিম কালের যৌথসমাজব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে না? এছাড়া গ্রামের দিকে আরেক প্রকার বনভোজনের ব্যাপার ছিল, এখনো হয়তো কোথাও কোথাও এসব থাকতে পারে–গ্রাম্য ভাষায় আমরা বলতাম বনভাত। মাঘী পূর্ণিমা রাতে চাল বাদে প্রায় আর সব কিছুই অন্যের রান্নাঘর, জমিজমা, পুকুর থেকে চুরি করে এনে দলবেঁধে রান্না করে খাওয়া। এছাড়াও মাঝে মাঝে কারো মুরগি চুরি করে রাতে কোথাও রেঁধে খাওয়ার ব্যাপার তো ছিলই।

আমার কেন জানি এর সাথে তখন কোরান আর বেদের সেই গণিমতের মালের কথা মনে পড়ে। অন্যের জিনিস লুট করে এনে সবাই মিলে ভাগ করে নেয়া বা ভোগ করা। ভাগ করে নেয়ার কথাই বরং কোরানে বেশি। কিন্তু আরো আগে বৈদিক যুগে তখন যজ্ঞ হচ্ছে, আর তাতে মন্ত্র উচ্চারিত হচ্ছে এমন–হে ইন্দ্র, তুমি আমাদেরকে লুণ্ঠিত অন্ন ভাগ করে দাও। অর্থাৎ এক দিকে যজ্ঞ হচ্ছে, আরেকদিকে লুট করে আনা জিনিস বা চাল রান্না হচ্ছে, সেগুলোর ভাগ (অন্ন) পাবে সবাই। সেই চিত্রই তখনকার কবিরা কবিত্ব করে ঋকের আকারে লিখে গেছেন।

আদিম কালের আরো অনেক কিছুই আমাদের রক্তে প্রবাহিত। চুরি, ডাকাতি, লুট, ধর্ষণ, খুন… সময়ের তালে তালে আমাদের জীবিকা পরিবর্তন হচ্ছে বা নতুন জীবিকা আসছে, সেই সাথে সভ্যতার তাগিদে অনেক কিছুকে আমরা অপরাধ হিসাবে গণ্য করছি, আর কিছু কিছু শখ হিসাবে। সময়ের আবর্তে যারা অপরাধ জিনিসটাকে বুঝতে শেখে না, তারা আদিম-বর্বর-অসভ্য হিসাবে রয়ে যায়, বাকিরা সভ্যতার দিকে ধাবিত হয়।

Category: পাল্লাব্লগ
Previous Post:সৌদি আরব কি ইসলামী সন্ত্রাসীদের পক্ষে না বিপক্ষে? – ৪
Next Post:কোরানে বিজ্ঞান

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top