• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

অথর্ববেদের ইন্দ্ৰজাল

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / অথর্ববেদের ইন্দ্ৰজাল
December 28, 2016

সুকুমারী ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন–“বৈদিক যুগে দীর্ঘকাল পর্যন্ত অথর্ববেদকে সংহিতাসাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি।”

কেন করা হয় নি, সেটা জানতে আগে চারটি বেদের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে হবে। “…ঋগ্বেদ আবৃত্তির উপযোগী কাব্য, সামবেদ সংগীতের জন্য স্তোত্র এবং যজুর্বেদ অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য ধর্মানুষ্ঠানকেন্দ্ৰিক গদ্য নির্দেশাবলী সরবরাহ করত।”

কিন্তু অথর্ববেদের বিষয়বস্তুই কী?
“অথর্ববেদের বিষয়বস্তুকে অন্তরঙ্গভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি যে, এই সংহিতার অধিকাংশ সূক্তই নূতন বিষয়ভিত্তিক, যা ঋগ্বেদের ভাববৃত্তের তুলনায় সম্পূর্ণ অভিনব।”

কিভাবে অভিনব?
“…গৃহ, নারী, রাজা ও সৈন্য এখন মনোযোগের কেন্দ্ৰ-বিন্দুতে, এবং দৃষ্টিভঙ্গি মূলত ইন্দ্ৰজালের উপযোগী।”

আগের তিনটি বেদে পুরোহিতরা নানান অনুষ্ঠান প্রার্থনা মন্ত্র গান করে দেবতাদের সাহায্য চাইত যাতে দেবতারা প্রকৃতিকে মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। আর অথর্ববেদে বাস্তববাদী আরেকশ্রেণীর মানুষ ‘ইন্দ্ৰজালের’ সাহায্যে প্রত্যক্ষভাবে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত, যা তখনকার দিনের ভাববাদী মানুষের কাছে ‘জাদুর মত’ ব্যাপার ছিল।

এই ইন্দ্ৰজাল বা জাদুশক্তিটা হলো ‘টেকনোলজির’ ব্যবহার। একটি উদাহরণ–আগে রোগ-শোক হলে পুরোহিতেরা মন্ত্র পড়ে ঝাঁড়-ফুঁক-তাবিজ-কবজের ব্যবস্থা করে টাকা রোজগার করত। কিন্তু ‘জাদুকররা’ রোগ-শোকে ভৈষজ অর্থাৎ সরাসরি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করত। এছাড়া শিশু-চিকিৎসা, ধাত্রীবিদ্যা ও শল্যচিকিৎসার মত বিষয়গুলোর প্রয়োগও কমবেশি ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই টেকনোলজির ব্যাপারটা বেশি কার্যকরী ছিল, এবং লোকে এটাকেই প্রাধান্য দিতে শুরু করল। ফলে জনসাধারণের কাছে আগের তিনটি বেদের গুরুত্ব হ্রাস পেতে শুরু করল।

তারপর একটা পর্যায়ে এসে “বৌদ্ধধর্মের উত্থান ও বিস্তারের ফলে বৈদিক ধর্ম যখন প্ৰবল প্ৰতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হয়েছিল, খুব সম্ভবত তখনই অথর্ববেদ সংহিতা-সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।” (অনুমান করি, এই জাদুকরশ্রেণীরাই হলো সেই বিখ্যাত চার্বাকরা, যারা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম বা পুরোহিতদের সমসাময়িক। এরা বরাবরই সংখ্যায় অল্প ছিল, পুরোহিতদের কূটনীতির সাথে পেরে না ওঠার ফলে এদের অস্তিত্ব বিপন্ন হলেও এদের বস্তুবাদী জ্ঞানটা কোনো না কোনো ভাবে থেকে যায়। পরেরদিকে পুরোহিতদের সাথে বস্তুবাদীরা সরাসরি সংঘাতে না জড়িয়ে ‘বিজ্ঞানের’ মাধ্যমে জনগণের ভাববাদী বিশ্বাসের ভিত অনেকটাই নড়িয়ে দেয়।)

“পুরোহিতদের মধ্যে এই উপলব্ধি সঞ্চারিত হয় যে, ঐক্যবদ্ধ না হলে তাদের পতন অনিবাৰ্য। রক্ষণশীল ধর্মের সম্পদশালী পুরোহিতদের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত ছিল বৈপ্লবিক ঘটনা এবং নিশ্চিতভাবে এতেই বৈদিক ধর্মের আয়ুষ্কাল বহুগুণ বর্ধিত হয়েছিল।” অর্থাৎ নিজেদের ভাববাদের পাশাপাশি চার্বাকদের বস্তুবাদ অর্থাৎ নাস্তিক্যবাদকেও ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা পরে তাদের ধর্মের অংশ হিসাবে ঘোষণা দেয়। অর্থাৎ বস্তুবাদী জ্ঞানকে তারা অথর্ববেদে স্থান দিয়ে চারি-বেদ সম্পূর্ণ করে। এমনকি বুদ্ধকেও পরে হিন্দুধর্মের অবতার হিসাবে ঘোষণা দেয়।

Category: পাল্লাব্লগTag: দর্শন, ধর্ম
Previous Post:সাইমুম (উপন্যাস: পর্ব ২১)
Next Post:পুতুলের হক কথা – ২৮

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top