শ্রীজাতের ইণ্টারভিউ পড়িলাম। বয়স ৪০ হওয়ার আগেই নয়টা-পাঁচটার কামলা ছাড়িয়া দেবার ইচ্ছে ছিল উনার; তাহা ৪০-এ পৌঁছানোর অনেক আগেই ছাড়িয়া দিয়াছেন। সৃজনশীল মানুষগুলিকে যন্ত্রের মত কামলা দিতে বাধ্য করা হইলে বা দিতে বাধ্য হইলে সৃজনশীলতাও ব্যহত হইতে বাধ্য।
২) আমেরিকা আসিবার পূর্বে বয়স ১০-১৫ বৎসর বাড়াইয়া লইয়া আসিতে পারিলে বেশ ভালো হইত বলিয়া মনে লয়। তাড়াতাড়ি রিটায়ার করা যাইত। ওদিকে কেহ বয়স জিজ্ঞাসা করিলে বেশি বাড়াইয়া কহিতে পারি না, পাছে আবার জিজ্ঞাসা করিয়া বসে–‘মুক্তিযুদ্ধের সময় কই আছিলেন?’ তাই মিথ্যা করিয়া বলি, বয়স আমার ২৩। আমৃত্যু তেইশেই থাকিতে চাই।
৩) মানুষ কেনো যে অপরের ফার্মে চাকুরী খুঁজিয়া বেড়ায়, কিভাবে যে দিনের পর দিন অন্যের হুকুম তামিল করিবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করিয়া লয়, এবং পরিশেষে চাকুরী পাইয়া ফার্মের মুরগীর মত ৯টা-৫টা আপিস শেষে বাড়িতে ফিরিয়া কাজের লোকদিগের উপর এটা-সেটা করিবার হুকুম জারী করে–তাহা এক পরমাশ্চার্যের বিষয় বৈকি!
৪) নিজের সৃষ্টিশীলতার দিকে নজর না দিয়া কে কী করিল না করিল, সেই সব খুঁটিনাটি জিনিস লক্ষ্য রাখা, কে তাহাকে ধান-দুর্বা, কলা-বাতাসা, পেন্নাম-সিজদা দিয়া সন্তুষ্ট করিল না করিল–সেই হিসাব রাখা, এবং বিশেষ কইরা মানবজাতির বেডরুমে উঁকি-ঝুঁকি মারা এবং তাহাদের যৌনজীবন লইয়া এত ব্যস্ত থাকিবার জন্য মহামান্য ভগবানেশ্বরাল্যার সৃষ্টিশীলতার কী পরিমাণ ক্ষতি হইতেছে তাহা আস্তিককুলের কর্মকাণ্ড দেখিলেই বুঝিতে পারা যায়। আর মহামান্য ভগবানেশ্বরাল্যা কার হুকুমেই বা এই সব কার্যে ব্যস্ত, তাহা ভাবিয়া পাই না।
৫) ভগবানেশ্বরাল্যার মেশিনে নাকি কোনো ত্রুটি নাই। ধর্ম-ক্যানভাসারদের এই কথাটি মানিয়া লইতে পারিলাম না। ভগবানেশ্বরাল্যার মেশিনে যদি ত্রুটি না-ই থাকিবে তাহা হইলে দুনিয়াতে এত বিকলাঙ্গ মালামাল উৎপন্ন হইতেছে কিরূপে!
Leave a Reply