লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ
[বর্তমানে যে কোরআন আমরা পাঠ করি, তাকে বলা হয় “উসমানী কোরআন”; খলিফা উসমানের শাসন আমলে এ সংকলন করা হয়; সংকলন করার সময় আয়াত প্রকাশ হবার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি; এর কারণে নবী মুহাম্মদের প্রথম প্রকাশ করা সূরা আলাকের প্রথম ৫ আয়াত সংকলিত হয়েছে কোরআনের ৯৬ নং অবস্থানে; মিনায় অবতীর্ণ হওয়া শেষ হজ্জের সময়কার আয়াত চলে এসেছে সূরা বাকারায়; ৩১ তম বারে প্রকাশ হওয়া সূরা ফাতিহা আছে কোরআনের ১ নং অবস্থানে!
যেহেতু কোরআনে নবী মুহাম্মদের জীবনের প্রতিরূপ ক্রমশ প্রকাশিত হয়েছে, তাই কোরআন ও নবী মুহাম্মদের মানসপট বোঝার সহজ উপায় হচ্ছে, আয়াত প্রকাশ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে কোরআন অধ্যায়ন করা; কিন্তু দুঃখের বিষয়, ১৪০০ বছরের ইতিহাসে এ বিষয়ে কাজ হয়েছে খুব সামান্য।
২০০৮ ইং সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে আমি মাথা ঘামানো শুরু করি; প্রায় শতাধিক নবী জীবনী, ১৫ টি হাদিস সংকলন, কোরআনের ৫০ টির বেশি বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদ, ২০ টির মত তাফসীর এবং ১৫ টি শানেনুযুল গ্রন্থ অনুসারে আমি আপাত অসাধ্য কাজটিতে হাত দিই; আজ ৮ বছর পর, আমি প্রায় বেশির ভাগ কাজ গুছিয়ে আনতে পেরেছি; ধর্মকারীর বন্ধুদের জন্য কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশ করা শুরু করলাম; প্রতি পর্বে থাকবে ধারাবহিকভাবে ছয় অংশ। অনুবাদের ভাষা ৫০ টির বেশি বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।]
নবী মুহাম্মদ দ্বারা প্রথম প্রকাশ; সূরা আলাক (৯৬) (জমাট রক্তপিণ্ড) ৫ আয়াত:
১ .পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন,
২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
৩. পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
৪. যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,
৫. শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না।
নবী মুহাম্মদ দ্বারা দ্বিতীয় প্রকাশ; সূরা আল মুদ্দাসসির (৭৪) (কম্বল আচ্ছাদিত ব্যক্তি) ৭ আয়াত:
১. হে চাদরাবৃত!
২. উঠুন, সতর্ক করুন,
৩. আপন পালনকর্তার মাহাত্ম্য ঘোষণা করুন,
৪. আপন পোশাক পবিত্র করুন,
৫. এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।
৬. অধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দেবেন না;
৭. এবং আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে সবর করুন ।
নবী মুহাম্মদ দ্বারা তৃতীয় প্রকাশ; সূরা আছর (১০৩) (মহাকাল/সময়) ২ আয়াত:
১. কসম যুগের (সময়ের),
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৪র্থ প্রকাশ; সূরা আয-যারিয়াত (৫১) (বিক্ষিপ্তকারী বায়ুরাশি) ৬ আয়াত:
১. কসম ঝঞ্ঝাবায়ুর।
২. অতঃপর বোঝা বহনকারী বায়ুর কসম।
৩. অতঃপর মৃদু চলমান জলযানের,
৪. অতঃপর কার্য-বিভাগকারী বায়ুর কসম,
৫. তোমাদেরকে প্রদত্ত ওয়াদা অবশ্যই সত্য।
৬. এবং বিচার অবশ্যম্ভাবী।
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৫ম প্রকাশ; সূরা আত্ব তাকাসূর (১০২) (প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা) ২ আয়াত:
১. প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে মুগ্ধ রাখে,
২. এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৬ষ্ঠ প্রকাশ; সূরা আত্ব-তূর (৫২) (তূর পাহাড়) ৮ আয়াত:
১. কসম তূর পর্বতের,
২. এবং লিখিত কিতাবের,
৩. উন্মুক্ত পত্রে,
৪. কসম বায়তুল-মামুর তথা কাবা গৃহের,
৫. এবং সমুন্নত ছাদের,
৬. এবং উত্তাল সমুদ্রের,
৭. আপনার পালনকর্তার শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
৮. তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারবে না।
Leave a Reply