বাংলাদেশের হিন্দুরা কি জমজমের পানিতে ধোয়া তুলসি পাতা? কিংবা পাহাড়িরা… বা কিছুদিন আগে যে সাঁওতালদের পক্ষ হয়ে লীগার-পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন–সেই সাঁওতালদেরও কি কোনো দোষ-ত্রুটি-ভুল-ভ্রান্তি নাই? কিংবা এদের মধ্যেও কি কেউ ‘অপরাধ’ করে না?
এক কথায় উত্তর–আছে, অনেকই আছে। তবুও আপনি সামগ্রিক ভাবে দেশের এইসব হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, পাহাড়ি, সাঁওতাল–ইত্যাদি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলনে শামিল হন, রাষ্ট্র ও সমাজে এই সব পিছিয়ে-পড়া, অত্যাচারিত, অবহেলিতদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই। ব্যক্তিগত ভাবে এদের কে কবে কী দোষ করেছে, কী অপরাধ করেছে–সেসব তখন আপনার কাছে বিবেচ্য হয় না।
ওদিকে নারীরা শুধু রাষ্ট্র ও সমাজের কাছেই শোষিত, অত্যাচারিত, অবহেলিত, অধিকারবঞ্চিত নয়, নিজের পরিবার, এমনকি খুব ‘আপনজনের’ কাছেও এরা নানান ভাবে নিপীড়নের শিকার। নিজের পরিবারেও এরা পুরুষের সমান অধিকার পায় না। ধর্ম থেকে শুরু করে আইন-আদালত, ঘর থেকে শুরু করে বাইরে–প্রতিটা পদক্ষেপেই নারীরা নিগৃহীত হয়ে আসছে, হচ্ছে।
তবুও যখন নারীবাদ অর্থাৎ নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও সাম্যের কথা বলা হয়, ঠিক তখনই আপনি নারীরা কবে কোথায় কীভাবে কী দোষ করেছে, কী অপরাধ করেছে–সেসবের ফিরিস্তি তুলে ধরেন; ব্যক্তিগত ভাবে কোন নারী কেমন খারাপ–সেসবের লিস্ট করতে বসেন; নারীরা পুরুষের সমান অধিকার পেলে ভবিষ্যতে ‘নারীতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করে পুরুষদের ঠ্যাঙাবে বলে আর সবাইকে ভয় দেখান–আর সব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের অধিকারের আন্দোলনের বেলায় কিছু বলেন না, শুধু নারীদের বেলাতেই এই কাজগুলা কেন করেন?
Leave a Reply