• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

মাদ্রাসাছাত্রের নাস্তিক হয়ে ওঠার গল্প

You are here: Home / ধর্মকারী / মাদ্রাসাছাত্রের নাস্তিক হয়ে ওঠার গল্প
July 25, 2016
লিখেছেন শুভ্র আহমেদ
একজন মানুষ হুট করেই নাস্তিক হয়ে যায় না। নানা সময় নানা কারণের ভেতর দিয়া আসার ফলে মানুষ নাস্তিক হয়। আমিও সেভাবেই হয়েছি। প্রথমত, জন্মগতভাবে সব মানুষই নাস্তিক। একটু চিন্তা করলেই সেটা বোঝা যায়। জন্মের সময় আমার ধর্ম ছিল না। আমার কোনো স্মৃতি ছিল না, কোনো আদর্শ, কোনো জ্ঞান কিছুই ছিল না। আমার পরিবারের হাত ধরেই আমার মুসলিম হবার দীক্ষা। পারিবারিকভাবে আমি তাই একজন মুসলিম হয়ে বড় হতে থাকলাম। স্কুলে কিছুদিন পড়ার পর আমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেলাম। আমি মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রদের মত ফাঁকিবাজ ছিলাম না। নিয়মিত ক্লাসে যেতাম। নিয়মিত পড়া শিখতাম। ভাল ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে আমি পরিচিতি পেয়ে গেলাম।
আমাদের পাড়ায় আমাদের এক খেলার সাথী ছিল হিন্দু। মাঝে মাঝেই আমার মনে হত, আহা রে, আমরা সব বন্ধুরা জান্নাতে যাব, অথচ এই একটা বন্ধু দোযখে যাবে। এটা ভাবলে খুব কষ্ট হত। বন্ধু দোযখে যাবে – এটা মানতে চায় না মন, আবার মনে হত, সবই আল্লাহর ইচ্ছা। তবুও মনটা খুঁতখুঁত করত। একটা ভাল ছেলে কেন শুধু শুধু দোযখে যাবে? এটা ছিল একেবারে কচি বয়সে ধর্ম নিয়ে আমার সংশয়। 
ছোটবেলা থেকেই হুমায়ুন আর জাফর ইকবালের বই পড়ার অভ্যাস। বই পড়লে মানুষের চিন্তাশক্তি বাড়ে। তাই বলা যায়, মাদ্রাসায় পড়লেও আমি সীমাবদ্ধ মানসিকতার হইনি। একদিন জাফর ইকবালের একটা বই পড়তে গিয়ে আবার সেই জিনিসটা মাথাচাড়া দিল: কেন হিন্দুরা বেহেশতে যাবে না, যদি তারা ভাল লোকও হয়? কেন আইনস্টাইন, নিউটন, বাফেটরা দোযখে যাবে? এই ভাবনাটা আমাকে সবসময় পীড়া দিত। 
আমি একসময় মাদ্রাসা থেকে হেফজ শেষ করলাম। গ্রামের মসজিদে শুরু করলাম তারাবী পড়ানো। তখন আলেম হবার জন্য আবারো ভর্তি হই আরেক মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে। এদিকে কোরান অনুবাদ পড়তে গিয়ে সুরা তাওবা পড়ে ভয়ানক আঘাত পেলাম। এগুলো শান্তির বাণী! খুনের আদেশ, হামলার আদেশ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এসব দেখে রাগে-দুঃখে চোখে পানি চলে এল। তখন ভাবলাম, আমার বোঝার ভুল। এটা আল্লাহর হুকুম। আল্লাহ যা করে, ভালর জন্য করে। আল্লাহ ভাল জানে, তাই এরকম করেছে। আমি সামান্য বান্দা, কতই বা জ্ঞান আমার!… যদিও নিজেকে এসব বলে প্রবোধ দিতাম, তবুও ভেতরে ভেতরে খচখচ করত। মনে হত, পরম করুণাময়ের এ কী বিচার! 
মাদ্রাসায় সেরা কোরানে হাফেজ হিসাবে গোলাম মুস্তফার বিশ্বনবী বইটা উপহার পাই। এই বইটা পড়তে গিয়ে বনু কুরাইজার গণহত্যা পড়তে গিয়ে কেঁপে উঠি। নবী এই জিনিস করেছেন, মানতে কষ্ট হয়। আমার মনে হয়, এগুলো মিথ্যা। সব জাল হাদিস। মহানবী এমন হতেই পারেন না। নিজেকে বললাম, গোলাম মোস্তফা তো আলেম না। তিনি নির্ঘাত কোনো ভুল করছেন। আমার নবী এমন হতেই পারেন না। 
কিন্তু না, পরে জানি, মহানবী নিজেই হত্যা করেছেন বনু কুরাইজার ৮০০ পুরুষকে, দাসী বানিয়েছেন মেয়েদের আর শিশুদের। শিশুদের দাস বানানোটা মেনে নিতে পারি না। খুব কষ্ট হয়। আবার নিজেকে বলি, নবী আল্লাহর নির্দেশেই করেছেন। সব আল্লাহর হুকুম। মৌলানা হবার জন্য ৯ বছর পড়তে হয়। আমি পড়ছি তখন ২য় বর্ষে। সেই সময় ফেসবুকে এলাম। ফারাবির লেখা অনেক ভাল লাগত। ফারাবির ফলোয়ার হলাম। এইটা ২০১১ সালের কথা। তখন ফারাবির মাধ্যমেই বিভিন্ন নাস্তিক পেজের দেখা পেলাম। এসব পেইজে মহানবীকে নিয়ে আজেবাজে পোস্ট দেখে বুক কাঁপতে লাগল। মনে হত, এদেরকে যদি কেউ আমার সামনে এনে দিত, তবে কুপিয়ে মগজ বের করতাম। 
তা সত্ত্বেও ঠিক করলাম, এদের লেখাগুলো পড়ব। ফারাবি যেরকম লিখে জবাব দেয়, আমিও সুন্দর সুন্দর নোট লিখে জবাব দেব। নাস্তিকদের লেখা পড়ি, যাচাই করি, কিন্তু উত্তর খুঁজে পাই না। কী উত্তর দিব! নাস্তিকরা যা বলছে, তা তো সত্যি। নাস্তিকরা বলল, কোরানে মেয়েদের শস্যক্ষেত্র বলা হয়েছে। আমি মাদ্রাসার ছাত্র, আমি জানি কথাটা সত্য। আমি অস্বীকার করতে পারি না। অস্বীকার করলে কোরানের আয়াতকেই অস্বীকার করা হবে। নাস্তিকরা লেখে, বনু কুরাইজার নির্মমতা, জয়নব কেলেংকারি, দাসপ্রথা, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাদের কথার ৭৫% ই কোরান-হাদিসের কথা। বাকিটা হয়ত অজ্ঞতা। কিন্তু ৭৫% কথাই তো কোরান-হাদিস থেকেই বলছে। 
ঠিক এই সময় থেকেই আমি পড়াশুনায় অমনোযোগী হতে থাকি। নামাজ পড়ার আগ্রহ পাই না। কোরান তেলাওয়াত করি না। আমার কট্টর ধার্মিক বাবা ধর্মের অনর্থক নিয়মকানুন পালনে আমাকে বাধ্য করত। যেমন – টিভি দেখা যাবে না। ক্রিকেট খেলা দেখতে পারি না, বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে পারি না, মেয়ে কাজিনদের সাথে গল্প করতে পারি না, কোনো মেয়ে কাজিনের সাথে বা গ্রামের কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখলেই প্রচণ্ড খারাপ ব্যবহার করত আমার বাবা। সব মিলিয়ে বিদ্রোহী হতে থাকল আমার মন। 
ধর্মবিশ্বাস তখন অনেকটাই নষ্ট। তবে ধর্ম না মানলেও নাস্তিকরা ধর্মের বিপক্ষে লিখছে, এটা মানতে পারতাম না। তখনও মনে হত, ধর্ম না থাকলে মানুষ খারাপ হয়ে যাবে। পরকালের ভয়ে অনেকে খারাপ কাজ করে না… ইত্যাদি ভাবতাম। নিজে যদিও প্রায় নাস্তিকই হয়ে গেছি, তবু ভাবতাম, আমি ভাল বলেই আমার আর ধর্মের প্রয়োজন নেই। কিন্তু অন্যদের আছে। এই ধারণাটা নাস্তিক হবার পরও অনেকদিন ছিল। 
কিন্তু একদিন এক নাস্তিক একটা প্রশ্ন করল, ধর্মই যদি মানুষকে সৎ রাখতে পারে, তাহলে মুসলিম দেশগুলাই সবচেয়ে খারাপ কেন আজ? মুসলিমরা সব দিক থেকে পিছিয়ে কেন? এই প্রশ্ন আমাকে মানতে বাধ্য করল, অন্তত ইসলাম ধর্ম একেবারেই অপ্রয়োজনীয় জিনিস। 
মাদ্রাসায় পড়তাম বলে মাদ্রাসার বাইরের জগতটার ব্যাপারে ধারণা ছিল না। নাস্তিক হবার পর পাঞ্জাবি-পায়জামা ছেড়ে দিয়ে প্যান্ট-টিশার্ট ধরলাম। নবীর সুন্নত হিসেবে এক মুঠি দাড়ি ছিল। কামিয়ে ফেললাম। বাবা-মা’র সাথে সম্পর্ক এতটাই খারাপ হল যে, ঘরে থাকাই দায়। বুঝলাম, ধর্ম – বিশেষত ইসলাম – কী চিজ! বুঝলাম, এই নোংরা জিনিস যতদিন দুনিয়াতে থাকবে, দুনিয়ার অকল্যাণ। এটি সন্তানকে মা-বাবার কাছে ঘৃণ্য করে তোলে। এরপর থেকেই আমি মন থেকে সমর্থন করি ধর্মবিরোধীদের। নব্য নাস্তিক হিসেবে আমি গর্বিত।
Category: ধর্মকারীTag: রচনা
Previous Post:গরুপূজারি গাধাগুলো – ১৫৮
Next Post:ইউরোপীয় আত্মঘাতী সুশীলতা

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top