• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

ছেলেভোলানো খুতবা

You are here: Home / ধর্মকারী / ছেলেভোলানো খুতবা
August 9, 2016
লিখেছেন অন্নপূর্ণা দেবী
বায়তুল মোকাররমে গেলো শুক্রবার, অগাস্টের পাঁচ, ২০১৬ তারিখে জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা পাঠ (সংবাদসূত্র) করা হয়েছে। খুতবার শুরুতে কোরানের যে দুটো আয়াত সংযোজন করা হয়েছে, সেগুলো হলো:

১. আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদের মৃত বলবে না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না। (সূরা বাকারা: ১৫৪)। ২. মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদের কখনো মৃত মনে করবে না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত। (আলে ইমরান: ১৬৯)

এরপর বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে বলা হয়েছে, কবরে নবীগণ মৃত নন, বরং জীবিত থাকেন। যে রাতে নবী মেরাজে গিয়েছিলেন, সে রাতে নবী মুসার কবরের পাশ দিয়ে এসেছিলেন এবং সেখানে তিনি দেখেছিলেন যে, মুসা কবরের ভেতরে নামাজ পড়ছিলেন (একবার ভাবুন, কবরের ভেতর মৃত মানুষ নামাজ পড়ে)! মাঝে আরেকটা হাদিস সংযুক্ত করা হয়েছে এমন: আল্লাহতালার পক্ষ থেকে একদল ফেরেশতা নবীর উম্মতের সালাম নবীর কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজে নিযুক্ত আছে। শেষের দিককার হাদিসে বলা হয়েছে, নবীর কবরের পাশে যারা নামাজ আদায় করবেন – নবী নিজেও তা শুনতে পান, এমনকি কেয়ামতের দিনের নামাজও তিনি শুনতে পাবেন। এ থেকে এটাই বোঝানো হয়েছে যে, কেয়ামত পর্যন্ত নবী তাঁর কবরে জীবিত থাকবেন। তখন নবীকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি কীভাবে নামাজ শুনবেন? তিনি তো তখন মরে পচে মাটির সাথে মিশে যাবেন। নবী তখন উত্তর দেন, ‘মহান আল্লাহ মাটির জন্য আমার দেহ ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস-১০৪৭)। 
মানুষের জন্য অনেক কিছুই হালাল বা হারাম শুনেছি, তবে মাটির জন্য কিছু হারাম, এমন কথা এই প্রথম শুনলাম। সর্বশেষে একটা “বৈজ্ঞানিক প্রমাণ” হাজির করা হয়েছে। তা হলো – ওপরের হাদিসগুলো থেকেই নাকি এটা প্রমাণ হয় যে, হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) রওজায় জীবিত অবস্থায় এখনো আছেন। সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত একমাত্র তারই আদর্শ, মত এবং পথকে অনুসরণ করা। এক্ষেত্রে ভ্রান্ত কোনও দলমতের প্রতি বা জঙ্গিবাদের প্রতি মুসলিম উম্মাহকে উদ্বুদ্ধ করা যাবে না।
লে বাবা! হয়ে গেলো জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা। প্রথম দুই আয়াত কী বলে? আয়াতগুলোতে কি নবীদের কবরে জীবিত থাকার কথা বলা হয়েছে, নাকি অন্য কিছু, আসুন একটু দেখে নিই। ওপরে প্রথমে উদ্ধৃত সূরা বাকারার ১৫৪ নাম্বার আয়াতটি রচিত হয়েছে বদরের যুদ্ধের প্রসঙ্গে। বদরের যুদ্ধে চোদ্দজন মুসলমান শহীদ হয়েছিলেন। তখন কেউ কেউ সেই শহীদদেরকে মৃত বলে উল্লেখ করেছিলেন। সে কারণেই এই এই আয়াত নাজিল যে, আল্লাহর পথে যারা নিহত হয়, তাদের মৃত বলবে না, বরং তারা জীবিত। এখানে নবীর মৃত্যুর কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে ইসলামের নামে জিহাদ করতে গিয়ে যারা শাহাদাত বরণ করে, তাদেরই কথা। 
আর সূরা আলে ইমরানের আয়াতটি রচিত ওহুদের যুদ্ধের প্রসঙ্গে। মদিনায় মক্কার মুশরিকরা আক্রমণ করতে আসার খবর পেয়ে মোহাম্মাদ যুদ্ধক্ষেত্র নির্ধারণের জন্য সভা ডাকেন, সেই সভায় অধিকাংশ যুবকের মতানুসারে শহরের বাইরে ওহুদ ময়দানে যুদ্ধের স্থান নির্ধারণ করা হয়। তখন কোনও কোনও প্রবীণ ব্যক্তি ঘরবাড়িকে দুর্গ বানিয়ে শত্রু মোকাবেলার পক্ষপাতী ছিলেন। মোহাম্মাদ তাদের সিদ্ধান্ত না মানায় কেউ কেউ যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার পথ থেকে ফিরে আসেন। তাদের ফিরে আসা দেখে কারোর কারোর যুদ্ধের মনোবল কমে যায় – এমন অভিযোগ পরে করা হয়। ওহুদের যুদ্ধে ৭০ জন মুসলিম মারা যায় এবং সে যুদ্ধে মুসলিমরা হেরেও গিয়েছিল। কিছু কিছু সাহাবী নবীকে প্রশ্ন করেছিল, কেন নবী এই যুদ্ধে হেরে গেছেন? তখন রসূলের নির্দেশ অমান্য, হতাশা এবং অন্তর্দ্বন্দ্বকেই যুদ্ধের পরাজয়ের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কোরানে আয়াতের মাধ্যমে বলা হয়, মুমিনরা নিজেদের দোষেই নিজেরা পরাজিত হয়েছে (আলে ইমরান: ১৬৫)। সবাইকেই একদিন না একদিন মরতে হবে, আল্লার রাস্তায় মরলে তা হয় বীরত্বপূর্ণ মৃত্যু, এবং অন্যভাবে পালিয়ে মরলে তা হয় কাপুরুষতা। সুতরাং তোমারা আল্লার পথে যুদ্ধ করো, নবীর নির্দেশ মেনে চল, নিহত হও, সবই আল্লাহতায়ালার সামনেই যাবে। এই সম্পর্কে সূরা আলে ইমরানে আরও দুটো আয়াত আছে। 

১. আর তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাক আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা ও করুণা সে সবকিছুর চেয়ে উত্তম। (আলে ইমরান: ১৫৮) ২. আর তোমরা মৃত্যুই বরণ কর অথবা নিহতই হও, অবশ্য আল্লাহ তা’আলার সামনেই সমবেত হবে। (আলে ইমরান: ১৫৯)

আলে ইমরানের ১৬৯ নাম্বার আয়াতে মূলত বলা হয়েছে, যারা জিহাদ করে আল্লার রাস্তায় মৃত্যুবরণ করবে, তারা জীবিত এবং আল্লার কাছ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত। সেখানেও নবীর একার কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে, ইসলাম রক্ষায় জিহাদ করে, যুদ্ধ করে যারা মারা যাবে, তাদের কথা। খুতবার শুরুতে যে দুটো আয়াত ব্যবহার করা হয়েছে, সে দুটোই ইসলাম রক্ষার জন্য আল্লার পথে জিহাদ করে শহীদ হওয়ার জন্য উস্কানিমূলক লোভী আয়াত। এর পর ধান ভানতে শিবের গীতের মত কয়েকটি হাদিস দিয়ে কবরে জিহাদীরা জীবিত থাকে সেগুলো বলে বলা হলো: এ কারণেই নবীর আদর্শ ছাড়া অন্য কোনও আদর্শে দীক্ষিত হয়ে জঙ্গি হওয়া যাবে না। নবীর আদর্শে কী বলেছে? ইসলাম রক্ষায় যুদ্ধ করতে, জিহাদ করতে, শহীদ হয়ে কবরে গিয়ে জীবিত থাকার স্বাদ পেতে। সেটা কি জঙ্গিবাদ নয়? সেটা কি সন্ত্রাস নয়? 
তো বিষয়টা কী দাঁড়ালো? মূর্খ বাঙালি কিছুই না জেনে, কিছুই না বুঝে, কিছুই অনুধাবন না করে লামছাম ভেবে নিয়ে খুব বুঝে গেলো – ইসলাম জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। হাউ ফানি! মরে গেলে মাটির নিচে কবরে মৃত মানুষ পচবে না, গলবে না, মাটির সাথে মিশবে না, বরং জীবিত থাকবে, এইসব ফালতু সস্তা মার্কা পাগলের প্রলাপ দিয়ে বাংলার মানুষকে বোঝানো হচ্ছে – ইসলাম জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না বা এটা একটা খুব জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা; বাস্তবে যা কিনা আগা-গোড়া মিথ্যা বানোয়াট অবৈজ্ঞানিক আলাপন এবং যার শুরুই করা হয়েছে জিহাদের ডাক দিয়ে।
Category: ধর্মকারীTag: কোরানের বাণী, রচনা
Previous Post:বেদ্বীনবাণী – ৭২
Next Post:I-slam

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top