লিখেছেন মেসবাহ উস সালেহীন
আমাদের জীবনে ঈশ্বরের প্রভাব বেশি, নাকি শয়তানের প্রভাব বেশি? আমার স্কুল লাইফের এক বন্ধু আছে, সে মনে করে, পৃথিবীতে ঈশ্বর নামে কেউ থাকুক বা না থাকুক, শয়তান অবশ্যই আছে। শয়তান আছে বলেই এত যুদ্ধবিগ্রহ, খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ ও সহিংসতা ঘটছে পৃথিবীজুড়ে। আল্লাহ যদি থাকত কিংবা আল্লাহর ক্ষমতা শয়তানের চেয়ে বেশি হলে তিনি নিশ্চয়ই এইসব ঘটনা থামাতেন। সেটা যেহেতু হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য দু’টি উপসংহার টানা যায় — হয় আল্লাহ নেই অথবা শয়তানের চেয়ে দুর্বল শক্তির একজন আল্লাহ আছে।
আমার ব্যক্তিজীবনের কাজকর্ম দেখেও একই রকম মনে হত। শয়তান আমাকে সব সময় খারাপ কাজ করতে মোটিভেট করছে, তাই আমি আকাম-কুকাম করে যাচ্ছি দিনের পর দিন। কিন্তু ভাল কাজ করা হয় না খুব বেশি। কারণ হয়তো আল্লাহ/ঈশ্বর ভাল কাজ করার মত যথেষ্ট পরিমাণ মোটিভেট করতে পারে না।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে “দ্য স্টরি অফ গড” নামে একটা প্রোগ্রাম দেখিয়েছে। প্রোগ্রামের হোস্ট হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা মরগ্যান ফ্রিম্যান ।এই সিরিয়ালের ৫ নাম্বার এপিসোডের নাম where does evil exist? সিরিয়ালটা সম্পর্কে কিছু রিভিউ লেখার চেষ্টা করছি।
সাধারণত প্রতিটা এপিসোড এক ঘন্টার হয়। কোনো একটা বিষয় ধরে বিভিন্ন সমসাময়িক কিংবা প্রাচীন ধর্মের বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করা হয়। একেবারে শেষের দিকে কোনো একজন বৈজ্ঞানিক ব্যক্তিত্বের ইন্টারভিউও নেয়া হয়। তবে এই ৫ নাম্বার এপিসোডে এসে একেবারে প্রথমেই একজন ডক্টর কেন্ট কেলির কাছে মরগ্যান ফ্রিম্যান গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, “আপনার জানাশোনা কোনো রোগী আছেন, যার ভেতরে শয়তান থাকে?” কেন্ট কেহলি তাকে নিয়ে গেলেন একজন সাইকোপ্যাথ-এর কাছে। এপিসোডে এই অপরাধীর নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি মুখের কোনো ছবিও প্রকাশ করা হয়নি। এই লোকটা আমেরিকার একটা জেলে লম্বা সময়ের জন্য সাজা ভোগ করছে। অনেক কম বয়স থেকেই সে খুন, ধর্ষণ এবং লুটপাট করত। মর্গ্যান ফ্রিম্যান তাভেভিতরে সেই উত্তেজনা এলেই অপরাধ করতে ইচ্ছা করে, করেও ফেলি।”
মরগ্যান ফ্রিম্যান তাকে শেষ প্রশ্ন করলেন, “আমি জানি, আপনার সাজা শেষ হতে অনেক দিন লাগবে। আমি একেবারে সাধারণ মানুষ নই। আমার নিজের হাতেও অল্প কিছু ক্ষমতা আছে। আমি আপনাকে এই জেল থেকে বের করে নিয়ে যেতে পারব। আপনি বের হতে চান?”
লোকটা বলল, “না, আমি বের হতে চাই না। আমার নিজের ওপরে নিয়ন্ত্রণ নেই। বাইরে বের হলে আমি হয়ত আবার কোন অপরাধ করে ফেলতে পারি। পুলিশ আমাকে এখানে এনে রেখেছে, এটা আমার প্লাস পুরো সোসাইটির ভালোর জন্যই। আমার এখানে থাকাই ভাল হবে।”
জেলখানার সেল থেকে বের হয়ে মরগ্যান ফ্রিম্যান গেলেন নিউরোসায়েন্টিস্ট-এর চেম্বারে। জিজ্ঞেস করলেন, “এই লোকের সমস্যা কী?” ডাক্তার বললে, “এর ব্রেইনের প্যাটার্ন নরমাল নয়। জন্মগতভাবেই এর ব্রেইনে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। এর ব্রেইনের অরবিটাল ফ্রন্টাল করটেক্স-এর গঠন স্বাভাবিক মানুষের অর্বিটাল ফ্রন্টাল কর্টেক্স-এর সাথে মেলে না। প্রতি ১ মিলিয়ন (১০ লাখ) মানুষের ভেতরে ১ জনের ব্রেইনে এই ধরনের অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে।”
মর্গ্যান ফ্রিম্যান এর পরে গেলেন মিশরে। মেনা নামে এক ফেরাউনের পিরামিডের ভিতরে ঢুকলেন। এই মেনা ৩৫০০ বছর আগের মিশরের শাসনকর্তা ছিলেন। তার পিরামিডের হায়ারোগ্লিফিকসে অনেক ইউজুয়াল জিনিসপত্রই আছে – মৃত্যুর পরে ফারাও-এর আত্মা কীভাবে অভিযানে যাবে, সব কিছু খোদাই করা আছে। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেটা দেখানো হল – পিরামিডের গায়ে খোদাই করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজা মেনার হৃদপিণ্ড বের করে একটা দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা হচ্ছে। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপামাপির এই কাজটা করতেছেন দেবতা ওসাইরিস (আন্ডার ওয়ার্ল্ডের দেবতা); তবে দাঁড়িপাল্লার অপর পাল্লায় কোনো বাটখারা রাখা নেই, বাটখারার জায়গায় বসে আছেন সত্যের বেদী, তার নাম মাত। মাত-এর স্বামী দেবতা থোথ প্যাপিরাস কাগজে পাপ-পুণ্যের হিসাব লিখছেন।
মিশরীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী, কেউ পাপ কাজ করলে তার হৃদপিণ্ড ওজনে ভারী হয়ে যায়। ‘ভারী হৃদয়’ শব্দটা বাংলা ভাষায় আমরা দুঃখ- কষ্ট অর্থে ব্যবহার করি, কিন্তু মিশরীয়দের কাছে এর অর্থ ছিল পাপী হৃদয়। যার হৃদয় যত ভারী হবে, দাঁড়িপাল্লায় তার হৃদয় তত বেশি ঝুকে যাবে, ওসাইরিস তাকে তখন সেই অনুপাতে শাস্তি দেবেন। ফারাও মেনার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তার দাড়িপাল্লা কোনোদিকে হেলে নেই। তার করা পাপ আর পুণ্যের পরিমাণ একেবারে সমান সমান।
ইসলামী বিশ্বাসেও এই ধরনের দাঁড়িপাল্লার একটা কনসেপ্ট আছে। কেয়ামত-এর ময়দানে আল্লাহ দাঁড়িপাল্লা নিয়ে সব বান্দার পাপ-পুণ্যের হিসাব করতে বসবেন। এই দাঁড়িপাল্লার নাম মিজান। দাঁড়িপাল্লার এক পাশের পাল্লাতে পাপ আর অন্য পাশের পাল্লাতে পুণ্য রাখা হবে (পাপ আর পুণ্য ছোট ছোট চকলেটের মত কঠিন বস্তু বলে মনে হচ্ছে, যেগুলা পাল্লাতে রাখা যায়), নেকীর পাল্লা বেশি ভারী হলে সে বেহেস্তে যাবে, পাপের পাল্লা ভারী হলে তাকে দোযখে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী প্রতীক দাঁড়িপাল্লা এসেছে এই হাশরের ময়দানের মিজান থেকেই। জামায়াতের একটা নির্বাচনী স্লোগান আছে, যা করে আল্লায়, ভোট দেব পাল্লায়। ধর্ম বাদে আমাদের সংস্কৃতিতেও এই দাঁড়িপাল্লা ঢুকে গেছে ভালভাবেই। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে এই দাঁড়িপাল্লা আছে। দেশে এবং বিদেশের আরো বিভিন্ন জায়গায় আইন-আদালত সংক্রান্ত বিষয়ে দাঁড়িপাল্লার ছবি দেখা যায়।
খ্রিষ্টান ধর্মবিশ্বাস মতে, মানুষের সবার ভেতরেই অপরাধ করার একটা ইচ্ছা থাকে। কারণ মানুষের আদি পিতা আদম একটা আদি পাপ করে বসেছিল। ইডেন গার্ডেনে তাকে নিষিদ্ধ গন্ধম ফল খেতে নিষেধ করা হয়েছিল, তারপরেও সে শয়তানের প্ররোচনায় ওটা খেয়েছিল। বংশানুক্রমে তার সেই আদি পাপ সব মানুষের ভেতরে ঢুকে গেছে। সবাই এজন্যই অপরাধ করতে চায় ।
মধ্য এশিয়ার প্রাচীনতম ধর্ম হচ্ছে জরাথ্রুস্ট ধর্ম। ৩৫০০ বছর আগে ইরানে এসেছিল এই একেশ্বরবাদী ধর্ম। এই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা জরাথ্রুস্ট।আগুনকে এরা পবিত্র বলে মনে করে। এদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আহুর মাজদা সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। জগতে পরস্পরবিরোধী দুটো শক্তি বিদ্যমান, একটা হচ্ছে আশা (সবকিছু শৃংখলার মধ্যে আনতে চায়) এবং আরেকটি হচ্ছে দ্রুজ (সবকিছুকে বিশৃংখল করতে চায়) বস্তুজগত, প্রাণীজগত এবং মানুষের মনের ভেতরে সবসময় এই দুই শক্তির লড়াই চলতে থাকে। একজন ধার্মিক জরাথ্রুস্টের কাজ হচ্ছে – এই ভাল শক্তিকে জিততে সাহায্য করা, সবসময় পরিষ্কার কাপড়চোপড় পরা, ভাল চিন্তা করা, ভাল কাজ করা ইত্যাদি। তাহলেই খারাপ শক্তি পরাজিত হবে। দ্রুজ অবশ্য পুরোপুরি ধ্বংস হবে না, ভাল-খারাপের এই লড়াই চলবেই চিরকাল। (এই ধর্ম বিষয়ে আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।
জরাথ্রুস্ট মতবাদে কোনো শয়তানের ডেভেলপড কনসেপ্ট নেই। ইহুদিদের আদি কেতাব ওল্ড টেস্টামেন্টেও নেই। নিউ টেস্টামেন্ট বাইবেল এবং পরে কোরানে শয়তান চলে এসেছে। শয়তান/স্যাটান/ইভল একজন মানুষের মতই প্রাণী। কিছু কিছু বর্ণনায় দেখা যায়, তার লেজ আছে, শিং আছে। এই শয়তানের কাজ হচ্ছে মানুষকে খারাপ কাজ করতে মোটিভেট করা। শয়তান মানুষের ব্রেইনে ঢুকে তাকে অবচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। একে সাধারণ মানুষ দেখতে পায় না, কিন্তু সাধু-সন্ন্যাসী নবী-রাসূলরা মাঝে মাঝে তাকে দেখতে পায়।ইসলামী মিথ অনুযায়ী, রোজার এক মাস ইবলিশ শয়তানকে বন্দী করে রাখা হয়। ফলে এই ১ মাস কোনো মানুষ অপরাধ করার জন্য শয়তানের কাছ থেকে অসোয়াছা (মোটিভেশন) পায় না। বাস্তব জীবনে আমার কিন্তু তেমন কিছু মনে হয় না। বছরের ১১ মাস যে-পরিমান অপরাধ হয়, এই এক মাসে তার চেয়ে বেশি বৈ কম অপরাধ হয় না।
শয়তান কেন এই কাজ করছে? এর অনেক দার্শনিক এবং ধর্মীয় ব্যাখ্যা আছে। ইসলামি মিথ অনুযায়ী, শয়তান একজন পুণ্যাত্মা জ্বিন (ফেরেস্তার মর্যাদায় উন্নীত) ছিল। তাকে একবার আল্লাহ আদেশ করেছিল আদম নবীকে সেজদা করতে। শয়তান দ্বিধায় পড়ে গেল, কারণ আল্লাহ বাদে অন্য কাউকে সেজদা করা উচিত না, আবার সেজদা করতে আদেশ করেছে আল্লাহ নিজে। সে তখন টেকনিক্যাল কারণ দেখাল— আমি আগুন দিয়ে তৈরি, আদম মাটির তৈরি, আমি ওকে সেজদা করতে পারি না (পৃথিবীতে এখন ১১৮ মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রাচীন আরবের রসায়নবিদেরা জানত মাত্র ৫ টা মৌলের কথা – মাটি, পানি, আগুন, বাতাস আর আলো (নূর) তারা সবকিছু এই ৫ টা মৌল দিয়েই ব্যাখ্যা করতে চাইত। যেমন, মানুষ মাটির তৈরি, জ্বিন আগুনের তৈরি, ফেরেস্তা/আল্লাহ নূর দিয়ে তৈরি ইত্যাদি) আল্লাহ তখন ক্রুদ্ধ হয়ে তার সব সম্মান প্রত্যাহার করে নিল। শয়তান তখন প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আদম এবং তার বংশধরদের ক্ষতি করা শুরু করল।
শয়তান নামক এত জলজ্যান্ত একটা প্রাণীকে দেখা যায় না কেন? যে কোনো প্রাণীর দেহেই একটা বা অনেকগুলা কোষ/অণু থাকতে হবে।একটা অণুর ব্যাসার্থ এক ন্যানোমিটারের চেয়েও ছোট। একটা বা অল্প কয়েকটা কোষ নিয়ে যদি কোনো প্রাণী গঠিত হয়, তখন সেই প্রাণীকে আর খালি চোখে দেখা যায় না। যেমন, ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়া – এগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। তবে শয়তানের যেসব বর্ণনা আমরা পাই, সেখানে শয়তানের এত ছোট বর্ণনা আমরা দেখি না। শয়তানের সাইজ মোটামুটি মানুষের মতই বলে আমরা দেখি।
অনেকগুলা অণু মিলে যদি কোনো পদার্থ গঠন করে, সেক্ষেত্রে অণুগুলোর মাঝে যদি অনেক গ্যাপ থাকে, তাহলে এদেরকে খালি চোখে দেখা যায়না। যেমন – বাতাস, গ্যাসম বেলুনের গ্যাস কিংবা জলীয়বাষ্পকে দেখা যায় না। কিন্তু অণুগুলোর মাঝখানে যদি অনেক কম ফাঁক থাকে, তখন সেই পদার্থকে দেখা যায়। সব কঠিন আর তরল পদার্থের অণুগুলোর মাঝে গ্যাপ কম থাকে বলে এদেরকে দেখা যায়। সকল উদ্ভিদ আর প্রাণীর দেহের কোষগুলো একে অপরের সাথে খুব শক্তভাবে আটকে থাকে, কারণ সবগুলো কোষের একে অপরের সাথে রক্ত/অক্সিজেন/খাবার আদানপ্রদান করতে হয়। এই কারণে সব জানোয়ারকেই দেখা যায়, অদৃশ্য কোনো জানোয়ার নেই। শয়তানের ক্ষেত্রে কোষগুলোর মাঝে অনেক বেশি গ্যাপ রেখে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
হিন্দুধর্মে আলাদা কোনো শয়তান নেই। তাদের ধর্মে ৩৩ কোটি দেব-দেবী। কিছু কিছু দেবতা মানুষের ক্ষতি করে, এদেরকে বলে অসুর। এই অসুরকেও নিয়মিত পূজা দেওয়া হয়। মানুষের বিপদ-আপদে এরাও অনেক সাহায্য করে থাকে।
আরেক প্রকার বিপজ্জনক জিনিস আছে হিন্দু মিথলজিতে, সেটা হচ্ছে অতৃপ্ত আত্মা। কারো যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় (আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি), তাহলে তার আত্মা মুক্তি পায় না। পৃথিবীতেই তার আত্মা ঘুরে বেড়ায় এবং মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজে বেড়ায়। অনেক সময় আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে আত্মাটা। স্বপ্নের মাধ্যমে কিংবা ‘ভয়েস মেসেজ’ পাঠিয়ে এমনকি সম্পূর্ণ মানবশরীর নিয়ে এসেও আত্মাটা হাজির হতে পারে। আরো অনেক ভৌতিক উপায়ে মেসেজ পাঠানো তো আছেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত ছোটগল্প ‘কাদম্বরী’-তে এই ধরনের একটা সিচুয়েশন আছে। সবাই জানত, কাদম্বরী মারা গেছে। কাদম্বরী যখন বাড়িতে ফিরে এল, সবাই বলল, এটা কাদম্বরীর অতৃপ্ত আত্মা, ওকে মানুষ হিসেবে কেউ গ্রহণ করল না। কেউ তার কথার কোনো গুরুত্ব দিল না। কোনো উপায় না পেয়ে কাদম্বরী তখন বাড়ির পুকুরে ডুব দিয়ে আত্মহত্যা করল। গল্পের শেষ লাইনে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “কাদম্বরী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই।”
এইসব অশুভ আত্মার মুক্তির জন্য কিছু ধর্মীয় রিচুয়াল করে পিন্ডি দিতে হয়, বিশেষত কাশী, গয়া কিংবা কোনো তীর্থস্থানে গিয়ে পিন্ডি দিতে পারলে ভাল। তখন আত্মা মুক্তি পায় এবং নতুন কোনো দেহতে পুনর্জন্ম লাভ করে।
এই এপিসোডের শুরুতে যেমন একজন সাইকোপ্যাথকে দেখানো হল, শেষেও আরেকজন প্রাক্তন সাইকোপ্যাথকে আনা হয়েছিল। তিনি আমেরিকার বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ আন্দোলনের একজন কর্মী।এখন তিনি সবকিছু ছেড়ে দিয়ে ভাল মানুষ হয়ে গিয়েছেন। মরগ্যান ফ্রিম্যান জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি ঘৃণার জগৎ ছেড়ে ফিরে আসলেন কীভাবে?” তিনি বললেন, “আমি প্রেমে পড়েছিলাম, বিয়ে করলাম, আমার একটা বাচ্চা হল। বাচ্চা হওয়ার পরে মনে হল, এই বাচ্চাকে আমি এই ঘৃণায় পরিপূর্ণ পৃথিবীতে বড় করব না, ওর জন্য একটা বেটার পৃথিবী বানাতে হবে। তাই আমি সব ছেড়ে দিয়েছি। আমার শরীরে অনেক ট্যাটু ছিল। লেজার ট্রিটমেন্ট করে সেইসব ট্যাটু সরাতে অনেক যন্ত্রণা হত। আমি মনে করতাম, এই যন্ত্রণাই আমার শাস্তি। আমার খারাপ কাজের জন্য আমি লেজার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে শাস্তি ভোগ করেছি। এখন আমি এক মানুষ । আমার ভেতরে কোনো অপরাধবোধ নেই, কারণ আমি আমার শাস্তি ভোগ করেছি।
* বর্তমান এপিসোডের ভিডিও লিংক
Leave a Reply