• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

সতীদাহ প্রথা এবং হিন্দুধর্ম

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / সতীদাহ প্রথা এবং হিন্দুধর্ম
March 12, 2017

আজকাল হিন্দু নামে পরিচিত জনগোষ্ঠীর আবার ‘হিন্দুধর্ম’ শব্দটায় আপত্তি আছে। একটু লেখাপড়া জানা অনেকেই ‘সনাতন ধর্ম’ বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। আবার যারা একটু বেশি ‘পিছলা’ তারা এ বিষয়ে চুপ থাকেন। তারা আস্তিক বটে, তবে ধর্ম হিসেবে যে আসলে কোন ধর্ম পালন করেন–তর্কের সময় কোনটা বললে সুবিধা হয়–সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না।

তো ‘সনাতন ধর্ম’ বলতে তারা বুঝাতে চান–যে ধর্ম সৃষ্টির প্রথম থেকেই ছিল, এখনো আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো–পরিবর্তন হয় নি, এমন ধর্ম দুনিয়ায় নেই। বিষয়টা যখন বাংলা মাধ্যমে, তখন ধর্মটাকে বাংলাদেশের হিসাবে দেখি–হিন্দুরা যে সনাতন ধর্মের কথা বলেন, তার শুরুটা বেদ দিয়ে–অর্থাত বৈদিক ধর্ম। কিন্তু এই বৈদিক ধর্ম এবং আর্যদের সাথে বাংলাদেশের হিন্দুদের সরাসরি কোনো যোগসূত্রই নেই। বৈদিক ধর্মও বিলীন হয়ে গেছে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মধ্যে, যার শুরু প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে। দেড় হাজার বছর আগে বাংলাদেশে ব্রাহ্মণেরা আসতে শুরু করে। তখন বাংলার শাসক ও জনগণের ধর্ম হলো বৌদ্ধ। এছাড়া অগণিত কৌমসমাজ ছিল যারা এসব প্রথাগত ধর্মের সংস্পর্শে তখনো এসে পারে নি। হাজার বছর আগের চর্যাগীতিতে দেখা যায় যে কিছু নিচুস্তরের মানুষদের মধ্যে বৌদ্ধধর্মের ছোঁয়া লেগেছে। তারপরেই সেনযুগে (এক হাজার বছর আগে থেকে) বাংলাদেশে সেই ব্রাহ্মণেরা দক্ষিণ ভারত থেকে আসা ‘হিন্দু’ সেন রাজাদের সহযোগিতায় একটা জগাখিচুড়ি মার্কা ‘হিন্দুধর্ম’-এর প্রচলন ঘটায়। সেই থেকে এই দেশের মানুষ ‘হিন্দু’ এবং সেই সব ব্রাহ্মণেরা বাদে সবাই ছিল ‘শূদ্র’।

তো এই হিন্দুধর্মে নানান কুসংস্কার ছিল, আছে, থাকবে। তার একটি হলো–সতীদাহ প্রথা। প্রশ্ন হলো–হিন্দুধর্মে (হিন্দুধর্মের শাস্ত্রে) কি সতীদাহ প্রথা আছে? ‘পিছলা’ হিন্দুমাত্রই এই প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ বলবে। তাদের যুক্তি–যদি বিষয়টা শাস্ত্রে থাকবেই, তাহলে রাজা রামমোহন রায় কিভাবে শাস্ত্র থেকেই দেখিয়েছিলেন যে সতীদাহ প্রথা শাস্ত্রবিরোধী?

শাস্ত্রপ্রসঙ্গে কিছু কথা–হিন্দুশাস্ত্র মানে শুরুতে মানে প্রথমে চতুর্বেদ; তারপর ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ, বেদাঙ্গসূত্র; তারপর নানা মুনির নানা মতের সংহিতা; তারপর পুরাণ ইত্যাদি। যতই সনাতন ধর্ম বলা হোক না, বিষয়টা সনাতনে থেমে ছিল না, নিত্য নতুন মতের সংমিশ্রনে পরিবর্তিত হতে হতে এই পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রথম দিকে একরকম নিয়ম ছিল, পরের দিকে অন্য নিয়ম হয়েছে। যদিও বিয়েশাদি যজ্ঞাদি ইত্যাদি নানা অনুষ্ঠান বৈদিক মতেই হয়ে থাকে।

তো যেহেতু রাজা রামমোহন রায় শাস্ত্রবিচার করেই দেখিয়েছিলেন যে সতীদাহপ্রথা শাস্ত্র বিরোধী, সেহেতু আমরা ধরে নিতে পারি পরের দিকের শাস্ত্রগুলিতে সতীদাহপ্রথার বিপক্ষে কিছু বলা আছে, যা দেখিয়ে তিনি নিজের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু আমরা যদি একেবারে আগের দিকে যাই–বৈদিক যুগে–তাহলে অথর্ববেদে আমরা পাই–(অথর্ববেদের অষ্টাদশ কাণ্ডের ৩য় অনুবাদের প্রথম সূক্তের সবগুলো (১০টি) ঋকের অনুবাদ এখানে তুলে দিচ্ছি। অনুবাদ নেয়া হয়েছে শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামীর অনুবাদকৃত অথর্ববেদ থেকে।)

“এ পুর্বোবর্তিনী স্ত্রী সহধর্মচারিণী বলে পতির অনুষ্ঠিত যাগাদিকর্মের ফলরূপ স্বর্গাদি লোক বরণ করতে চায় । হে মরণশীল মানষ, এ স্ত্রী ভূলোক থেকে নির্গত তোমার কাছে অনুমরণের জন্য পুরাতন ( স্মৃতি-পুরাণাদি প্রসিদ্ধ ) ধর্ম অনুপালনের জন্য যাচ্ছে । সে অনুমরণে গমনশীল স্ত্রীর জন্ম-জন্মান্তরেও এ ভুলোকে পুত্রপৌত্ৰাদি ও ধন দাও ।। ১ ।।
হে ধৰ্মপত্নী, এ জীবলোকের উদ্দেশে পতির কাছ থেকে উঠে এস । যে মৃত পতির কাছে শয়ন করেছ, সেখানে দৃষ্ট প্রয়োজনের অভাবে তার কাছে থেকে চলে এস । তোমার পাণিগ্রহণকর্তা পতি অপত্যাদিরূপে জন্মলাভ করেছে ।৷ ২ ৷।
মৃতদেহের কাছে নীয়মান জীবিত যুবতী নারীর জন্য গাভীর আস্তরণ দেখছি । ( জীবিত যুবতীর মৃত গোদেহের আস্তরণ অযুক্ত-এ জেনেছি) । গাভী গাঢ় অন্ধকারে অচ্ছন্ন, হিতাহিতজ্ঞানশূন্য, অতএব এ গাভীকে মৃতদেহের কাছ থেকে আমাদের দিকে নিয়ে আসব ৷৷ ৩ ৷৷
হে অবধ্য গাভী, ভূলোক জেনে ইন্দ্ৰাদি দেবগণের উদ্দেশে যাগের জন্য দধি দুগ্ধ হবি প্রভাতির নিষ্পাদন-কর্ত্রী তুমি এস, তোমার পালকের সেবা কর, এ মৃত পুরুষকে স্বর্গলোকে প্রেরণ কর ।। ৪।।
নদীর জলের ওপর প্ররূঢ় ভমিসংস্পর্শরহিত অবকা ও নদীতীরবর্তী বেতসে রক্ষণসমর্থ সারভূতাংশ বিদ্যমান । ( বেতস ও অবকার অপসারত্ব তৈত্তিরীয় সংহিতায় বলা হয়েছে )। হে অগ্নি, তুমি জলের পিত্তরূপ অবকা ও বেতস প্রভাতির দ্বারা তোমার উপশম করছি । ৫ ।।
হে অগ্নি, তুমি যে পুরুষকে দগ্ধ করছ, তাকে দাহ-জনিত উষ্ণতা পরিহার করে আবার সুখী কর। ( এ জন্য পূর্বে জলের পিত্তরূপে অগ্নির জলকার্যত্ব বলা হয়েছে ) । এ দহনপ্রদেশে কাম্বূ নামক ওষধি ও বিবিধ শাখাযুক্ত দীর্ঘ কাণ্ডবিশিষ্ট দূর্বা উৎপন্ন হোক ৷৷ ৬ ৷৷
হে প্ৰেত, তোমার পরলোক গমনের জন্য গার্হপত্য জ্যোতি, অপর আহার্য-পচনাখ্য জ্যোতি, তৃতীয় আহ্বনীয় জ্যোতির সাথে তুমি মিলিত হও, অগ্নিসংস্কারজনিত দেবশরীরের দ্বারা তুমি শোভন হও, তারপর উৎকৃষ্ট দেবলোকে ইন্দ্ৰাদি দেবগণের প্রীতির বিষয় হও ।। ৭ ।।
হে প্রেত, তুমি এ স্থান হতে ওপরে উঠে দ্রুত গমন কর। অলৌকিক অন্তরিক্ষলোকে তোমার আবাসস্থান ( গৃহ ) কর । সেখানে বহির্য(?) অগ্নিষ্বাত্ত প্রভৃতি পিতৃদেবতার সাথে একমত হয়ে সোমপানে তৃপ্ত হয় । ( সোমযাগে নরাশংস নামক সোমরসের ভাগ পিতৃগণের, তা উপভোগ করে হৃষ্ট হও ) । ৮।।
হে প্রেত, এখান থেকে প্রচ্যুত হও, তার জন্য হস্তপাদাদির সাথে শরীর একত্র কর, তোমার হস্তপাদাদি যেন পরিত্যক্ত না হয়, সেরূপ শরীরের অবয়ব মধ্যদেহও যেন ত্যাগ না কর। যে স্থানে তোমার মন নিবিষ্ট হয়েছে, সে স্বর্গাদি লোকে প্রবিষ্ট হও । সেরূপ যে ভূপ্রদেশে তুমি প্রতি হও, সে স্থান লাভ কর। ৯ ৷।
সোম্য ( সোমার্হ ) পিতৃদেবগণ যজমান আমাকে তেজের সাথে যুক্ত করুক । সেরূপ সকল দেবগণ মাধুর্যযুক্ত ঘৃতের দ্বারা আমাকে লিপ্ত করুক, দীঘকাল দর্শনের জন্য রোগাদি থেকে আমাকে পার করুক এবং জরাকাল পর্যন্ত আমার অন্ন জীর্ণ করে আমার বর্ধন করুক । ১o ॥”

এই গেলো মূল অনুবাদ। এবার শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী এই সূক্তটি নিয়ে নিজস্ব একটু টীকা যোগ করেছেন–সতীদাহপ্রথার বিরোধীতা করে–দেখা যাক–

“টীকা : ১-১০ । তৃতীয় অনুবাকে সাতটি সূক্ত, তার প্রথম সূক্তের প্রথম ঋকে ভার্যার সহমরণের কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী সূক্তে যদি এ জগতের ভোগাকাঙ্ক্ষী থাকে, তাহলে তাকে নিবৃত্ত হতে বলেছে । এ দেখে মনে হয়-এ সহমরণ প্রথা ছিল একেবারেই ঐচ্ছিক । ‘সতীদাহ’ প্রথায় পরবর্তী কালে কোথাও কোথাও অত্যাচার হয়েছে সত্য, কিন্তু তা শাস্ত্রানুমোদিত নয়, কারণ বিধবাদের অনুষ্ঠেয় বিধি শাস্ত্রে দেখা যায় । সহমরণ ঐচ্ছিক না হলে বিধবাগণের আচরণের বিধান শাস্ত্রে থাকত না । তবুও ঐচ্ছিক সহমরণ আমাদের কাছে নিষ্ঠুর কার্য মনে হয় ।”

এবার যদি প্রশ্ন করা হয়–হিন্দুধর্মশাস্ত্রে সতীদাহপ্রথার স্বপক্ষে বিধান বা উদাহরণ আছে?
এক কথায় উত্তর হবে–“হ্যাঁ!”

অথর্ববেদের অষ্টাদশ অধ্যায়ের তৃতীয় অনুবাকের প্রথম সূক্তের প্রথম ঋকে সহমরণের কথা বলা হয়েছে। এখানে স্ত্রী স্বামীর সাথে সহমরণে যেতে চাচ্ছে, সে কথা বলা হয়েছে। এবং একই সাথে এই স্ত্রীটির যদি আবার জন্মান্তর ঘটে, পৃথিবীতে আসে, তাহলে যেন তার ছেলে-নাতিপুতি ও ধনসম্পদ লাভ হয়–সেজন্য আশীর্বাদ করা হচ্ছে। পরের ঋকে আবার স্ত্রীলোকটিকে ইচ্ছে হলে উঠে আসতে বলা হয়েছে। তার কারণ পৃথিবীতে তার (অপত্যাদি) সন্তানেরা আছে, তাদের দেখাশোনার ব্যাপার আছে।

তখনকার দিনে এমনিতেই কাজের লোক কম ছিল। এমনিতেই মানুষ মরে যেত। তারপর আবার এভাবে কেউ মরে গেলে সমাজের আরো সমস্যা। তাই চিতা থেকে উঠে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এটাকেই অনেকে ‘ঐচ্ছিক’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু যে যাই বলুক না কেন, বেদে সতীদাহপ্রথা বা সহমরণের উল্লেখ এবং উদাহরণ আছে। সেটা হয়তো বাধ্যতামূলক ছিল না তাদের জন্য যাদের সন্তানাদি থাকত। তাদের বেলা অনুরোধ করা হত ফিরে আসতে। কিন্তু যারা নিঃসন্তান ছিল, তাদের বেলায় কি ওই ২য় ঋকটা প্রযোজ্য হত? মনে হয় না। এ জন্যই পরবর্তীকালে নিঃসন্তান স্ত্রীদেরকে সহমরণে বাধ্য করা হত।

Category: পাল্লাব্লগTag: হিন্দুধর্ম
Previous Post:মুহাম্মদের চিঠি – শাসকদের কাছে পত্রবাহক প্রেরণ!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৬১): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত পঁয়ত্রিশ
Next Post:নিত্য নবীরে স্মরি – ২৭৭

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top