লিখেছেন কৌশিক
আমার পকেটে এখন হালাল টাকা। আমাকে একটা কম্পিউটার কেনার জন্য ইসলামী ব্যাংক চল্লিশ হাজার টাকা কর্জ দিয়েছিল। অন্য ব্যাংক থেকে নিলে তাদের ছ’হাজার টাকা সুদ দিতে হতো। কিন্তু আল্লাহর নবীর প্রবর্তিত ইসলামী ব্যাংকিং এর কারণে আমাকে এই হারাম কাজ থেকে মুক্ত করেছে। ইসলামী ব্যাংককে এখন সাত হাজার টাকা আমি মুনাফা দেব – তারা যে আমাকে মাসে মাসে কিস্তি শোধ করার সুযোগ দিলেন, এই জন্য আল্লাহর উপরে রাজিখুশি হয়ে আমি তাদেরকে এই বেশি অর্থ দান করে দিচ্ছি, তারা আমার উপরে কোন জবরদস্তি করে নাই।
আমাদের ডঃ নায়েক বলেন, ইসলামিক ব্যাংকিং-এর কারণে অমুসলমানরাও এখন দলে দলে এই ব্যাংকগুলোতে একাউন্ট ওপেন করতেছে। বিশ্বের সকল মুদ্রা ধুয়ে-মুছে অচিরেই সব হালাল হয়ে যাবে। জানেন, এই ব্যাংকে কোন বেশ্যাখানা, ক্যাসিনোর পয়সা স্থান পায় না। কাপড়ে নাপাকি লাগলে যেমন সে স্থানটুকু ধুয়ে ফেললেই পরিষ্কার হয়ে যায় – তেমনি সেই নাপাকি টাকা এলেও ইসলামি ব্যাংক সেগুলো ইসলামী ফাউন্ডেশনের দুস্থ তহবিলে দিয়ে দেয়। সোবহানাল্লাহ – অর্থ যে মানুষকে পবিত্র করে দিতে পারে, তার নজির এই ব্যাংক।
আমার কম্পিউটার হালাল টাকায় কেনা। আমি এই কম্পিউটারে রহমত বরকত নাজিল হতে দেখি। এইচটিটিপি লিখে সোজা আমি খোদাতায়ালার সাথে কানেক্টেড হয়ে যাই। আমার কাছে মনে হয়, পৃথিবীর মানুষের জন্য নবীয়ে করিম কত সুন্দর অর্থব্যবস্থা রেখেছেন – মানুষ যদি তা জানতো! এই যে যাকাতের ব্যবস্থা রেখেছেন তা তো গরীবদের জন্য নেয়ামত স্বরূপ! এই ব্যবস্থা আমরা পালন করি বলেই গরীব তালেবানরা আজ আল্লাহর রাস্তায় দ্বীনি ইলম শিখতে পারতেছে।
তাছাড়া আমাদের দেশের যে অমুসলমান কাফেরেরা রয়েছেন, তাদেরকেও ভালবেসে আল্লাহতায়ালা কত সুন্দর ব্যবস্থা রেখেছেন। এই সমস্ত কাফের এই দেশে থাকার জন্য যদি জিজিয়া কর প্রদান করতো, তাহলে দেশের মানুষ তাদের উপরে কোনো অত্যাচার করতো না। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন হলে তারা অর্থের বিনিময়ে এই নশ্বর জীবনে ভোগবিলাস করতে পারতো।
আমাদের মসজিদের হাফেজ হেকমত সাহেব বলেন, এই যে আজকে দেখতেছেন ইহুদী-নাসারারা পৃথিবীতে এত শানশওকাতে আছে তার কারণ কী? এর কারণ হচ্ছে, ওদের এই একটাই জীবন। এখানে যত ইচ্ছে আনন্দ-ফূর্তি করে লউক, মৃত্যুর পরে তাদের জন্য রয়েছে বেসম্ভব শাস্তির ব্যবস্থা! কিন্তু ইমানদারদের জন্য এই জীবন হচ্ছে জেলখানা, শষ্যক্ষেত্র – এখানে সুখে থাকার কথা চিন্তা করা হারাম। মৃত্যুর পরের মৃত্যহীন জীবনে সুখ-শান্তির ব্যবস্থা করার জন্য এই জীবনে আল্লাহর রাস্তায় চলতে হবে। সেজন্য এই পৃথিবীতে মুসলমানদের জীবনে কোনো শান্তি আসবে না।
এ জন্য এক বিন্দু রক্ত যদি অবৈধ অর্থে প্রতিপালিত হয়, কাল কেয়ামতের ময়দানে সেই অংশ জাহান্নামের আগুনে না জ্বালানো পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে না।
এখন পর্যন্ত ইসলামিক ব্যাংকে টাকা রেখে আমার কোন লস হয় নাই – বরঞ্চ তারা লাভ দেয় আরো বেশি। আল্লাহর রাস্তায় চলে বলে তাদের সুদ দেয়া লাগে না – কেবল প্রফিটই হয়। কখনও আমাদের লস শেয়ার করতে হয় না। আল্লাহ আমাদের ইসলামিক ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সুদ পরিহার করে নিশ্চিত মুনাফা অর্জন করার সুযোগ দান করুক।
Leave a Reply