লিখেছেন : চার্বাক কাজী
নারীবাদ শব্দটিকে অনেকেই বৈষম্যমূলক বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এটি বৈষম্যমূলক নয়; বরং এটি প্রচলিত পুরুষতন্ত্রের বিপরীতধর্মী এবং সেইজন্যেই সাংঘর্ষিক। পুরুষতন্ত্র হল একটি ব্যবস্থা যেখানে আইন কানুন পুরুষের স্বপক্ষে, সামাজিক এবং পারিবারিক বিধি ব্যবস্থা পুরুষের স্বপক্ষে, এককথায় সমাজ সংসারে যাবতীয় যা কিছু সবই পুরুষের স্বপক্ষে, সবই পুরুষকেন্দ্রিক হয়।
ভাষাতাত্ত্বিক ও ভাষা-দার্শনিকেরা বলেন, বস্তুজগতের অধিকাংশ শব্দই বাইন্যারি বা বিপরীতধর্মী, যেমন সাদা-কালো, ছোট-বড়, ভালো-মন্দ ইত্যাদি; নারী ও পুরুষ তেমনই দুটি শব্দ। ভাষা-দার্শনিকেরা এই বৈশিষ্ট্যকে চিহ্নিত করেছেন “বাইনারি অপজিশন” হিসেবে। এভাবেই পুরুষতন্ত্রের বিপরীতে নারীবাদের সৃষ্টি।
সুতরাং নারীবাদ শব্দটি বা ধারণাটি বৈষম্যমূলক নয়, পুরুষতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যেই নারীবাদের সৃষ্টি।
একজন মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকারের দাবি হলো নারীবাদ; পরিবার, কর্মক্ষেত্র ও সমাজে নারীর হীন মর্যাদা সম্পর্কে সচেতনতা অর্জন এবং এই অবস্থা পরিবর্তনে নারী ও পুরুষের সচেতন সক্রিয় উদ্যোগ হল নারীবাদ।
নারীর অধিকার আদায়, সমতা অর্জন এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক আন্দোলন হল নারীবাদ।
© চার্বাক কাজী
Leave a Reply