তসলিমা নাসরিনের আজকের সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশ জুড়ে ছিল উনার আত্মজীবনীমূলক লেখালেখি। তিনি কেন কোনো কিছু লুকাননি বা সজ্ঞানে কিছু লুকাতে চাননি–এসব নিয়েই আলোচনা।
যারা উনার আত্মজীবনীর প্রথম বই “আমার মেয়েবেলা” পড়েছেন, তারা জানেন সেখানে তিনি সত্য প্রকাশ করে তার মামা-চাচা সবাইকে ন্যাংটা করে দিয়েছেন। তারা উভয়েই ছোটবেলায় উনার গায়ে হাত দিয়েছিলেন। আরেক মামা তো উনার এক কাজিনকে পুরো প্রেগন্যান্ট বানিয়ে মেরেই ফেললেন। এসবের কোনো বিচার হয়নি। সেই বয়সে উনি কিছু করতেও পারতেন না। যখন বড় হলেন, তখনও কিছু করার ছিল না, শুধু এই লেখালেখি বাদে।
আমাদের সমাজে চাইল্ড এবিউজ ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল, কেউ জানিনা। কিন্তু এধরনের ঘটনা যে অনেকদিন ধরেই হয়ে আসছিল এবং এখনো ঘটে চলছে সেটার প্রমাণ এখনকার মিডিয়াতে এ ধরনের ঘটনার খবর অহরহ আসছে। বিবিসির করা একটা প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছিল, তাতে রীতিমত গা শিউরে উঠে যে দেশের প্রায় ৯০ ভাগ শিশু তাদের বাবা চাচা মামা খালু ফুপা কাজিনসহ নিকট আত্মীয়দের হাতেই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অথচ বাহিরে এরা সবাই ধর্মপ্রাণ মানুষ!
তসলিমা নাসরিন এদের মুখোশ খুলে দিতে কলম ধরেছেন। খুব সম্ভবত উনার হাত ধরেই এগুলো প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সেসব দেখে আর সবারও সাহস বেড়েছে, বিশেষ করে এই চাইল্ড এবিউজ নিয়ে কথা বলার, প্রতিবাদ করার, অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করার। সবগুলোর বিচার না হলেও কিছু কিছু তো হচ্ছে। সেই সাথে আমরা আমাদের বাচ্চাদের ব্যাপারে কিছুটা হলেও সতর্ক হতে পারছি যাতে এ ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা তাদের জীবনে না ঘটে।
সত্যের চেয়ে বড় অস্ত্র আর হয় না।
Leave a Reply