লিখেছেন : তসলিমা নাসরিন
ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে শশী লজের ছবি। আমরা একে শশী লজ বলতাম না। বলতাম রাজবাড়ি ইস্কুল। এ আমার জীবনের প্রথম ইস্কুল। এই ইস্কুলে আমি ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হয়েছিলাম। এক বছরই পড়েছি। আমি বেবি ওয়ান টু পড়িনি। সোজা থ্রি। ক্লাস ফোর থেকে বিদ্যাময়ী ইস্কুলে পড়ি। রাজবাড়ি ইস্কুলের কথা এখনো মনে আছে। মাঠে হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা খেলতো ছেলে মেয়েরা। বাকি নামে একটা ছেলে ছিল, ফাইভে পড়তো। টিচারের ছেলে। ওকে বিশাল বড় দেখাতো। ওই বয়সেই বাকির বেশ দাপট ছিল ইস্কুলে। পপি ওর বোন আমার ক্লাসে পড়তো। ও রূপকথার পরীর মতো দেখতে ছিল।
মাঠে খেলার চেয়ে আমার ভালো লাগতো শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে বসতে, জলে পা ডুবিয়ে রাখতে।
আমরা বইয়ের ভেতর ফার্ন গাছের পাতা রাখতাম। প্রচুর ফার্ন গাছ ছিল সিঁড়ির কাছে। কেন রাখতাম? পড়া মনে থাকবে বলে? নাকি এমনি?
আমি আর আমার দুই মামা বাড়ি থেকে হেঁটে আসতাম ইস্কুলে। ইস্কুল থেকেও হেঁটে বাড়ি ফিরতাম। রোদে বৃষ্টিতে হাঁটার জন্য আমাদের নাম লেখা ছাতা ছিল।
মুসলমান মৌলবাদিদের দেশে এখনও ইস্কুলের ভেতর ওই ভাস্কর্যটি আছে কি? শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে এখনও আছে। আশা করছি থাকবে।
Leave a Reply