১) মেয়েদের পোশাকের স্বাধীনতার কথা বললে, বিশেষ করে ‘জিন্স-টিশার্ট’-এর ব্যাপারে অনেকেই একটাযুক্তি হাজির করেন–বাংলাদেশ ইউরোপ-আমেরিকা নয়… (যুক্তিটা আমাদের সুধী নাস্তিক সমাজের কাছে অগ্রহণযোগ্য।)
২) বেশ কিছুদিন আগে ৫৭ ধারায় মামলা খাওয়া এক পুলিশের দালালের স্নাপশট পোস্ট পূর্বক ট্রল করাতে সে ৫৭ ধারা বাদেও সাইবার বুলিং মামলা এবং পায়ের তলার মাটি সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল। এবং এই বিষয়টায় সুধী নাস্তিক সমাজ সেই দালালের ইয়েটা মুখের ভেতর নিয়ে চুষছিল বিধায় কোনো প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসে নি।
৩) বিললানিপু অন্যের ইনবক্সের স্নাপশট পোস্ট করে ৫৭ ধারায় মামলা খাওয়ায় বিললানিপুTকি চাটা সুধী নাস্তিক সমাজ প্রতিবাদে মুখর। হিপোক্রেট শুরু আস্তিকরাই হয় না।
৪) ৫৭ ধারা অবশ্যই আপত্তিজনক। তবে বর্তমান বিষয়টাকে একটু ভিন্ন এঙ্গেল থেকে দেখার চেষ্টা করা যেতে পারে–যৌনতা… (বাচ্চারা এবং যাদের ফোনসেএণ্ডক্স বা সেএণ্ডক্সচ্যাট নিয়ে আইডিয়া নেই, তারা দূরে থাকতে পারেন।)
৫) খালুজাননামায় খালাম্মার উল্লেখ করেছিলাম যিনি আমাকে সেএণ্ডক্সচ্যাটে দীক্ষা দিয়েছিলেন। প্রথমদিকে তিনি একটা প্রশ্ন করেছিলেন যে, আমার কথা ভেবে তিনি নিজে নিজে ইয়ে করেন, এতে আমার কোনো আপত্তি আছে কিনা… কী উত্তর দেব, ভেবে পাচ্ছিলাম না–এরকম ব্যাপারে আসলেই আমার আপত্তি থাকা উচিত, কি না। অনেক ভেবে বোধহয় এরকম কিছু বলেছিলাম যে, আমার যেহেতু কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তাই ভালোমন্দ কিছু বলার অপেক্ষায় রাখে না।
আবার দীর্ঘকাল কারো সাথে চ্যাট বা কথা হওয়ার পরে ‘ভালোবাসি’ বলে ফেলার ‘অপরাধে’ সেই সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবার কারো সাথে দু-তিনদিন কথা বলার পরে হুট করে মেসেজ–এই, আমাকে একটু আদর করো… বা, সরাসরি–এই, আমাকে সুদো… –প্রথমে থ হয়ে যাওয়াতে ভেড়া, গাধা, ইত্যাদি টাইপের ট্যাগও খাইছি…
৬) (ক) আপনাকে আমার পছন্দ হইছে।
(খ) আপনাকে আমার ভালো লাগে।
(গ) আপনাকে আমি ভালোবাসি।
(ঘ) আপনার সাথে সেএণ্ডক্স করতে ইচ্ছে করছে।
–এই কথাগুলোর মধ্যে কোনটা অপরাধ এবং কেন?
–ক এবং খ বাদ দিয়ে কেউ সরাসরি গ-তে চলে গেলে যদি অপরাধ না হয়, তাহলে ক, খ এবং গ বাদ দিয়ে একেবারে ঘ-তে চলে গেলে অপরাধ হবে কেন?
৭) যৌনতা নৈতিকতার ভিত্তি হতে পারে কি না, এই নিয়ে হুমায়ুন আজাদের প্রচুর লেখালেখি আছে। তিনি সিদ্ধান্ত টেনেছেন–যৌনতা নৈতিকতার ভিত্তি হতে পারে না। এমনকি বহুগামিতা থেকে শুরু করে বহুবিবাহের পক্ষেও তার মত আছে। কে কতজনের সাথে লাগালাগি করবে, কতজনের সাথে একসাথে লাগালাগি করবে, এইটা যারা লাগালাগি করছে–একান্তই তাদের ব্যাপার। কোনো সুধী নাস্তিককে এবং যারা হুমায়ুন আজাদকে ভালো পান, আজ পর্যন্ত ওইসব কথাবার্তার প্রতিবাদ করতে দেখি নাই। তাহলে তারাই বা কাউকে ভালো-মন্দ প্রমাণ করতে এই যৌনতার বিষয়টা তুলে আনে কেন, মাথায় ঢোকে না!
৮) ইউটিউবে অনেক ভিডিও দেখা যায়– মেয়েরা ছেলেদেরকে সেএণ্ডক্সের প্রস্তাব দিলে ছেলেদেরকে আমতা আমতা করতে দেখা যায়। আর ছেলেরা যদি এই কাজ করে, মানে একেবারেই অচেনা মেয়েদেরকে হুট করে সেএণ্ডক্সের প্রস্তাব দেয়, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়–মেয়েরা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে।
আমাদের দেশে এই ধরনের প্রস্তাব মানেই ‘কুপ্রস্তাব’–বিশাল অপরাধের পর্যায়ে পড়ে যায়; মেয়েরা প্রচণ্ড অপমানিত ফিল করে, চোখ-মুখ লাল করে দৌড়ে পালায়, কান্নাকাটি করে, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করতে পারে।
এই রকম পরিস্থিতিতে ‘বাংলাদেশে ইউরোপ-আমেরিকা নয়’–এই ধরনের যুক্তি দেয়া বাদে আমাদের সুধী নাস্তিক সমাজ আর কী কী বলতে পারে?
Leave a Reply