মডারেট হিন্দু উবাচ : হিন্দুধর্ম কোনো ধর্ম নয়, ইহা একটি লাইফস্টাইল।
মডারেট মুসলিম উবাচ : ইসলাম কোনো ধর্ম নয়; ইসলাম হলো পরিপূর্ণ জীবনবিধান।
–এই টাইপের স্লোগান কি মুসলমানরা হিন্দুদের কাছ থেকে নিয়েছে, নাকি হিন্দুরা মুসলমানদের কাছ থেকে নিয়েছে?
২) হিন্দুদের সাথে তর্ক করতে গেলে সবসময় মাথায় রাখবেন যে, তারা আপনার সাথে তর্ক করতেছে, মিটিমিটি হাসতেছে আর মনে মনে বলতেছে–“আমরা যে কত পিছলা, সে ব্যাপারে আপনাদের কুনো আইডিয়াই নাই!”
৩) আগে প্রায়ই শুনতে হত–“এত যে নাস্তিক হইছেন, আমাদের নাস্তিক বানাইতে আইছেন, আর আপনার মা-বাবারে নাস্তিক বানাইতে পারছেন? আমাদের ধর্ম নিয়ে না লিখে পারলে আগে তাদেরকে নাস্তিক বানিয়ে দেখান।” কিংবা, “আপনি নাস্তিক হলে, আপনার বুরখাওয়ালী বুরখা পরে কেন?” এখনও হয়তো অনেকে এসব বলে। তবে কসম মাউণ্ট সিনাই হাসপাতালের, ব্লগ-ফেসবুকে এত ঘ্যান-ঘ্যান প্যান-প্যান করি ঠিকই, কিন্তু কাউকে নাস্তিক বানাতে হবে–এরকম কোনও উদ্দেশ্য মনে কাজ করে না। সেটা মা-বাবা-ভাই-বোন-বুরখাওয়ালী–যে কারো ধর্মই হোক না কেন।
৪) কাউকে নাস্তিক বানানোর উদ্দেশ্য নাই। বরং ধর্ম যেমন ব্যক্তিগত বিষয়, তেমনি ধর্ম পালন করাটাও ব্যক্তিগত অধিকার বলেই মনে করি। হিন্দু হোক, মুসলিম হোক, সবাই যাতে সুস্থ-স্বাভাবিক-নিরাপদে যার যার “ধর্ম” পালন করতে পারে, মন থেকে সেটাই চাই। সেই সাথে নাস্তিকদেরও লেখালেখির অধিকারকে সম্মান করতে হবে।
৫) ব্যক্তিগত ভাবে কে কী বিশ্বাস করল না করল, কে কী ধর্ম পালন করল না করল–যার যার ব্যাপার। যতক্ষণ না কারো ক্ষতি করছে, ততক্ষণ কারো কিছু বলার থাকতে পারে বলে মনে হয় না।
৬) লেখালেখি করে ভালো ভালো কথা বলে যদি কাউরে লাইনে আনা যেত তাহলে এতদিনে রবীন্দ্র-রোকেয়া-নজরুল যা লিখছে, তাতেই কাজ হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু এত বছরেও তাতে তেমন কোনো কাজ হয় নাই, তাই লেখালেখি করা ফাউল জিনিস। সাথে ধর্ম নিয়ে আলোচনা জাস্ট আজাইরা ক্যাচাল।
৭) অনেকে আছে প্রচলিত ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, ধর্মীয় নিয়মকানুন মানে না, কিন্তু সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে। তাদের এই বিশ্বাসটা কেমন, এই সৃষ্টিকর্তা কেমন, সেটা নিয়ে তেমন আলোচনা/তর্ক কারো সাথে হয়নি। ইচ্ছে আছে জানার…
৮) সৃষ্টিকর্তা আছে কিনা, আমরা জানি না। তবে প্রথাগত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মে-ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত ভগবানেশ্বরাল্যা যে ভূয়া সেটা সেসব গ্রন্থে উল্লেখিত অদ্ভুত-অবৈজ্ঞানিক, অসংগতি, স্ববিরোধিতা কাহিনী আর কথাবার্তাগুলোই যথেষ্ট।
৯) সৃষ্টিকর্তার দাবী যারা করে, সেটার প্রমাণ করার দায়িত্বও তাদের। আমরা বড়জোর সেই প্রমাণ দাবী করতে পারি। কারো সেসব দাবী করার অধিকার যেমন আছে, তেমনি প্রমাণ না পেলে সেসব দাবী-দাওয়া ভূয়া- মিথ্যা-অবৈজ্ঞানিক বলা, সেসব নিয়ে হাসাহাসি, স্যাটায়ার করার অধিকারও অন্যদের আছে।
১০) চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী… আলোচনা-তর্ক-বিতর্ক-আলোচনা-লেখালেখি–এসবে যে কাজ হয়, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কাজ হয় চোরাদের যদি ধর্মীয় কাহিনী শুনাইতে/পড়াইতে পারা যায়। ধর্মগ্রন্থ না পড়ে বা ধর্মীয় কাহিনী না জেনে লাইনে আসছে, এমনটি দেখা যায় না। ধর্মে যেসব অদ্ভুত-অবৈজ্ঞানিক, অসংগতি, স্ববিরোধিতা কাহিনী আর কথাবার্তা আছে, জাস্ট সেগুলা সঠিক রেফারেন্সসহ তুলে ধরা যেতে পারে। অনেকে নানা ভাবে পিছলাবে। পিছলাক। যার বোঝার, সে এমনিতেই বুঝবে; …এমনিতেই লাইনে আসবে।
Leave a Reply