বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকাগুলোয় প্রায় প্রতিদিনই ইছলামী একটি-দু’টি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতোদিন কখনও ওসবের পাশ মাড়াইনি। এখন মনে হচ্ছে, অনেক কিছু মিস করেছি। আজ ইত্তেফাকে একটি নিবন্ধ পড়ে পুরাই হাহাপগে অবস্থা। মনে হলো, একটি বিনোদনী সিরিজ চালু করা যেতে পারে পাঠকেরা তাদের চোখে পড়া লেখার লিংক পাঠাতে থাকলে। শুধু পত্রিকার নিবন্ধ কেন, ইছলামী অজস্র বইও (যেমন, মোকছেদুল মোমেনিন) অনন্ত বিনোদনের খোরাক হতে পারে। মোদ্দা কথা, পাঠকদের ইনপুট আশা করছি।
আজ যাচ্ছে প্রথম পর্ব। বিশেষ অংশগুলো হাইলাইট করে দিচ্ছি। ব্র্যাকেটবদ্ধ অংশগুলো আমার মন্তব্য ও প্রশ্ন।
লেখক: মো.এনামুল হক | বৃহস্পতি, ৯ জুন ২০১১, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮
কেয়ামত এর আরবী অন্য একটি শব্দ হলো আসসাআহ যার অর্থ হলো সমস্ত মাখলুকাতের জীবনের শেষ সময়। যখন জগতের সবকিছু ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে। আসসাআহ-এর ব্যাপারে কুরআনুল করিম ও হাদিসে রাসূলে অনেকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনে সূরা আরাফের ১৮৭ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, আপনাকে জিজ্ঞেস করে কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? আপনি বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তো অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে।
কেয়ামতের প্রাথমিক আলামতসমূহ
কেয়াতের ছোট ছোট আলামতগুলোর অন্যতম হলো-
১। এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা পূর্বে কখনো ঘটেনি এবং ঘটার কোন ধারণাই ছিল না।
২। অমুসলিমদের হাতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদ আহরিত হবে। (নিশ্চয়ই আল্লাহপাক সমস্ত খনিজ সম্পদ শুধু মুছলমানদের জন্য বরাদ্দ করিয়াছেন)
৩। মানুষ তার বাসস্থানকে শিল্প কারুকার্জ দিয়ে সুশোভিত করাকে গুরুত্ব দিবে।
৪। জমিনের অংশসমূহ নিকটবর্তী হয়ে যাবে। (মানে কী? কেউ বুঝিয়ে বলবেন?
)

৫। শিক্ষায় বিপ্লব ঘটে যাবে কিন্তু দ্বীনি শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যাবে। (ইছলামের শিক্ষাভীতি আবারও প্রমাণিত)
৬। মহিলারা অশ্লীলতায় ডুবে যাবে। মহিলাদের সৌন্দর্য চর্চা কেন্দ্রের ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। (ভাইয়েরা, মাইয়াগুলারে সামলান! নাইলে কিয়ামতের আর দেরি নাই!)
৭। মহিলারা পুরুষের আকৃতি ধারণ করবে আর পুরুষ মহিলার আকৃতি ধারণ করবে। (মানে কী? পুরাই চিন্তিত তাপস পাল হইয়া গেলাম!
)

৮। কিছু মুসলমান মদ পান করবে অন্য নামে। (কবি এইখানে কী বুঝাইতে চাহিয়াছেন?
)

১০। অভিনন্দন ও অভিবাদন মানুষের কাছে অভিশাপ হয়ে যাবে।
১১। জমিনের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক বিধ্বংসী ভূমিকম্প সংঘটিত হবে।
১২। হঠাত্ মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাবে আর হত্যা গুম বৃদ্ধি পাবে।
১৩। মানুষ কথায় সুন্দর হবে, আর কাজে অসুন্দর হবে।
১৪। কন্যা সন্তানরা তার মায়ের শাসনে থাকবে এবং মায়ের অনুকরণীয় হবে। (সমগ্র নারীজাতির প্রোতি আকুল আবেদন: আপনারা আপনাদিগের মাতাদিগের শাসন মানিবেন না এবং তাঁদেরকে অনুকরণও করিবেন না)
১৫। বেপর্দা ব্যক্তিরাই সমাজের নেতৃত্ব দিবে।
১৬। সমাজের নিকৃষ্ট এবং রাখাল শ্রেণীর লোকেরা সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ করবে। (অর্থাৎ ইসলামে রাখাল শ্রেণীকে নিচু প্রকৃতির মনে করা হয়। স্বয়ং নবীজি এককালে রাখাল ছিলেন না?)
১৭। জগতের লোকেরা সুউচ্চ টাওয়ার নির্মাণে একে অপরে প্রতিযোগিতা করবে। (খাইসে! আরব জাহানেই তো এই প্রতিযোগিতা শুরু হইসে!)
১৮। মানুষ তার সন্তানের চাইতে কুকুর লালন পালনকে বেশি প্রাধান্য দিবে।
১৯। নারীরা চুলের খোপা মাথার ওপরে এমনভাবে বাঁধবে যেন উটের পিঠের উঁচু জায়গার মতো দেখাবে। (অর্থাৎ কেয়ামত নিকটবর্তীকরণে নারীর কেশবিন্যাসেরও ভূমিকা আছে)
২০। দুনিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা অতিদ্রুত ও সহজ হয়ে যাবে। (ইছলাম উন্নতি ও অগ্রগতির বিরোধী। তারা অন্ধকারে থাকতেই পছন্দ করে।)
২১। কাল বা সময় তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাবে। (হা হা হা… লা-জবাব! সময়ের স্পিড বাইড়া যাবে? সেইটা ক্যামনে? কেউ বুঝায়া দিবেন?
)

২২। দাসী ও সমাজের নিকৃষ্ট মেয়েরা যে সন্তান জন্ম দেবে সে সমাজের অন্যতম নেতা হবে। (ইসলামে শ্রেণীভেদ এতো প্রকট! দাসীর গর্ভে সুসন্তানের জন্ম হতে পারে না বরে ইছলামের ধারণা! নবীজির পুত্র ইব্রাহিমের জন্ম তো তাঁর দাসী মরিয়মের গর্ভে হয়েছিল!)
২৩। অবৈধ জারজ সন্তানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। (তার মানে, ইছলামের দৃষ্টিতে জারজ বৈধও হইতারে? … ধুর! কী জিগাই! ইব্রাহীমই তো নবীজির জারজ পুত্র! তাঁর পুত্র কখনও অবৈধ হইতারে?)
২৪। সমাজে সম্মানিত কুলীন ভদ্রলোকগুলো কোণঠাসা হয়ে যাবে আর নিকৃষ্ট অসম্মানী লোকগুলো বেপরোয়া সাহসী হবে।
২৫। বড়কে সম্মান করবে না। ছোটকে স্নেহ করবে না।
২৬। সমাজে নেতা নেতৃত্ব বেড়ে যাবে বিশ্বস্ততা কমে যাবে।
২৭। উলঙ্গ আর বেহায়াপনার প্রতিযোগিতায় নারীরা ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হবে। (বোঝা যাইতেসে, নারীজাতির কারণেই কেয়ামত চইলা আসবে)
২৮। জেনা ব্যাভিচার আর মদপান বেড়ে যাবে।
২৯। প্রকৃত আত্মীয়দের ছেড়ে বন্ধু-বান্ধবদের আতিথেয়তা বেড়ে যাবে। (অপ্রকৃত আত্মীয় বইলা কিছু আছে নাকি?)
৩০। সমাজে ফাসাদ দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করবে। (ফাসাদ মানে বুঝি নাই)
মুসলিম শরিফে বর্ণিত, হযরত হুযাইফ বিন উসাইদ আল গিফারি (রা.) বলেন, আমরা যখন কোন বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনায় রত ছিলাম তখন রাসুল (স.) আমাদের নিকট আগমন করলেন এবং বললেন তোমরা কি বিষয়ে আলোচনা করছো। তারা জবাবে বলল, আমরা কেয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছি। রাসুল (স.) তখন বলেন, কেয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না এই আলামতগুলো দেখতে পাবে। সেগুলো হলো:(১) দুখান বা ধোয়ার উদগীরণ হবে ২) দাজ্জালের আবির্ভাব ৩) দাব্বাতু মিনাল আরদ ৪) পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া। ৫) ঈসা ইবনে মারইয়ামের অবতরণ ৬) ইয়াজুজ মাজুজের প্রকাশ ৭) পরপর তিনটি চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর পশ্চিম অংশে ও পূর্ব অংশে আর ৮) আরব উপদ্বীপে ৯) ইয়ামেনের ভূমি থেকে আগুন বের হবে। যা মানুষকে তাড়িয়ে নিয়ে একত্রিত করবে। ১০) পশ্চিম দিক থেকে সূর্যের উদয় ও পূর্বদিকে অস্তগমন। (হাহাপগে! এইসবে কোন নাদানে বিশ্বাস করে?
)

সংক্ষিপ্তাকারে কেয়ামতের বড় আলামতসমূহের আলোচনা:
১) দুখান-যার অর্থ ধোয়া বা ছাই- এই ধুয়া শেষ যুগে আসবে যা আবহাওয়াকে গভীরভাবে দূষিত করবে। যার প্রভাবে মুমিনগণ সর্দি ও কাশিতে ভুগবে। আর কাফেরগণ নেশাগ্রস্ত হয়ে তার নাক, কান ও পশ্চাদ দিয়ে বের হবে। (ডরাইসি!
) এর প্রভাব ৪০ দিন-রাত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেছেন, অতএব আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন যখন আকাশ ধুয়ায় ছেয়ে যাবে যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে, এটা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা দুখান আয়াত-১০-১১)। রাসুল (স.) দুখান সম্পর্কে বলেন, এটা হলো এমন এক ধুয়া যা পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত আচ্ছন্ন করে ফেলবে যার স্থিতিকাল হবে ৪০ দিন-রাত।

(২) দাজ্জালের আবির্ভাবঃ- সহি বুখারি ও মুসলিম শরিফের বর্ণনায় তার প্রকার সময় স্থিতি ও শেষ সম্পর্কে বর্ণনা করে বলা হয়েছে। দাজ্জালের পরিচয় সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (স.) বলেন: দাজ্জালের চক্ষুসমূহ হবে টেঁরা দুই চোখের মাঝখানে আরবিতে কাফের লেখা থাকবে যা সকল শিক্ষিত অশিক্ষিত মুসলমানগণ পড়তে পারবে। আর তার শরীর হবে মোটা তার কাছে আগুন থাকবে পানিরূপে আর পানি থাকবে আগুনরূপে। (wtf?) রাসুল (স.) তার প্রকাশের স্থান সম্পর্কে বলেন, মাসিহে দাজ্জাল বের হবে শাম ও ইরাকের মাঝখান থেকে। সে দুনিয়ায় অবস্থান করবে ৪০ দিন যার একদিন হবে এক বত্সরের সমান আরো একদিন হবে এক মাসের সমান, আরো একদিন হবে এক সপ্তাহের সমান, আর বাকি দিনগুলো হবে আমাদের দিনগুলোরই মতো। সে আল্লাহর জমিনে ফাসাদের প্রসারণ ঘটাবে এবং তাকে আল্লাহ এমন কিছু অলৌকিক শক্তি দেবেন যা দেখে কাফের, ফাসেক এবং মোনাফেকরা বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। আর মুসলমানগণ ইমানের ওপর অটল থাকবে কেননা মুমেনগণ মুজেজা আর এই অলৌকিকতার মাঝে পার্থক্য করতে পারবে। দাজ্জালের শেষ সময়ে ঈসা ইবনে মারইয়াম প্রকাশ পাবে। তার একটি কাজ হবে এই দাজ্জালকে বাবে লুদে হত্যা করা। রাসূল (স.) সব সময় এই দাজ্জালের ফিতনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতেন।
৩। দাব্বাতু মিনাল আরদঃ এই দাব্বাতুল আরদ মানুষের মাঝে ফাসাদের সময় শেষ যুগে বের হবে। আল্লাহর আদেশ ছেড়ে সত্য দ্বীনকে পরিবর্তন করে দিবে। যার ব্যাপারে মানুষেরা বলাবলি শুরু করবে। হাদিসের ভাষায় তার শরীর হবে ৬০ গজ লম্বা, তার থাকবে চারটি পা, দুইটি ডানা ও পালক। এটি বের হবে মসজিদে হারামের নিকটবর্তী সাফা পাহাড়ের নিচ থেকে, যে আরবিতে কথা বলবে। এটি. তিনদিন বের হবে, মানুষ দেখবে কেউ বের হবে না।
৪। ঈসা ইবনে মারইয়ামের অবতরণ: হাদিস শরিফে ঈসা (আ.)-এর অবতরণ কেয়ামতের আলামতের অন্যতম। ঈসা (আ.) পূর্ব দামেস্কের কেন্দ্রীয় মসজিদের মিনারে অবতীর্ণ হবেন। তিনি এসে কোন নুতন ধর্মের বা দাওয়াতের বা নবুয়তের দিকে ডাকবেন না বরং তিনি মুসলমানদের ইমামের পিছনে সময় মতো নামাজ পড়বেন। ক্রুশসমূহকে ভেঙ্গে ফেলবেন, এই কথার বাস্তবতায় যে, তিনি হত্যা বা ক্রুশবিদ্ধ হন নাই। বরং আল্লাহ তাকে উঠিয়ে নিয়েছেন এবং তিনি শূকরকে হত্যা করবেন, মদ ফেলে দেবেন এগুলো হারাম হওয়ার কারণে। ঈসা (আ.) দাজ্জালকে খুঁজতে খুঁজতে বাবে লুদের নিকট পেয়ে তাকে হত্যা করবেন। (হায় রে, ইছলামী দিবাস্বপ্নদোষ!
)

৫। ইয়াজুজ মাজুজের আত্মপ্রকাশ সর্বশেষ চেষ্টায় দুটি বাঁধকে দুর্বল করে ভেঙ্গে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবে এবং তারা দুনিয়াতে প্রচণ্ড রকমের ফ্যাসাদে ভরপুর করবে। দুনিয়ার সকল স্থানে ফাসাদের বিস্তৃতি ঘটাবে। তার পা হবে লম্বা, সাগর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সকল পানি শুষে নিবে। (নিশ্চয়ই তা হবে সুপার ডাইপারসমৃদ্ধ)
Leave a Reply