যেহেতু এখনো বেঁচে আছি, সেহেতু ধরেই নেয়া যায় আমাকে ধরাই দেয়ার মত বড় বিশ্বাসঘাতকতাটা এখনো কেউ করে নাই। তবে ভার্চুয়ালে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছে একজন নাস্তিকের কাছ থেকেই–রাজিউর রহমান, উরফে রাজসোহান, সামুর ব্লগার। পারভেজ-সবাকপাখি–এদের খুব ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিত। কাজ করত নাকি এক জামাতি প্রতিষ্ঠানে। শাহবাগ আন্দোলনের সময় কাজ ছেড়ে দিয়ে বেকার। এ গল্প শুনে আমি একজনকে বলে কম্পিউটার রিলেটেড কিছু আউটসোর্সিং-এর কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। সে রাজি হলে অগ্রীম কিছু টাকাও নাকি তাকে দিয়েছিল। কিন্তু সে দুই দফা টাকা নিয়েও কাজ করেনি। মাঝখান থেকে আমি লজ্জায় পড়ে যাই। সেই প্রথম ভার্চুয়াল জগতে মানুষকে বিশ্বাস করার ব্যাপারে ধাক্কা লাগে। আর তাও কিনা একজন নাস্তিকের সূত্র ধরে!
এর আগেও একবার এই প্রতারণার বিষয়টা নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম। রাজিউরও প্রতিবাদ করতে আসে নাই। ব্লক করে রেখেছে আগে থেকেই। আমিও আর মাথা ঘামাইনি। এর প্রতিশোধ নিতে তার নামে অহেতুক স্ক্রীণশট বানিয়ে কোনো কুৎসা রটাতে যাইনি। তবে এই কাজটা আস্তিক-নাস্তিক অনেকরেই করতে দেখা যায়। অজুহাত হিসাবে তারা এইসব টাকা-পয়সা সংক্রান্ত প্রতারণার কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু প্রতারণা সংক্রান্ত প্রমাণাদি হাজির না করে এরা একাউণ্ট হ্যাক করে, ব্যক্তিগত চ্যাট-সেএণ্ডক্সচ্যাট-এর স্ক্রিণশট বা এগুলা বানিয়ে বানিয়ে পাবলিক করে, বা গলাকাটা ন্যুড পিকচার পাবলিক করে–অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে হ্যারাজ করার যতপ্রকার কুৎসিত ফন্দি আছে, সব প্রয়োগ করে। কিন্তু ভেবে দেখে না যে একটা অপরাধের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এরা আরো হাজারটা অপরাধ করে ফেলছে।
আবার অনেক সময় দেখা যায়, প্রতারণার বিষয়টা ভূয়া, বাস্তবতা হলো তার লেখালেখির জন্য তাদের কোনো না কোনো অনুভূতিতে আঘাত লাগছে, বিশেষ করে ধর্মানুভূতি। লেখার জবাব লেখা দিতে দিতে না পেরেই এরা সেক্যুয়ালি মিথ্যা কুৎসা রটায়, এবং বাকিরা কোথায় তার প্রতিবাদ করবে, তা নয়, উলটা এসব আবার তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে! অনেকে মেয়েদেরকেও দেখা যায় এই দলে যোগ দিতে। এই জন্যই বুঝি অনেকে বলে থেকে যে মেয়েদের বড় শত্রু আসলে মেয়েরাই!
কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরলে ব্যাপারটা সহজ হয়। তা না করে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে একাউণ্ট হ্যাক করা, প্রাইভেসি ভঙ্গ করা, আড়ালে কার সাথে কী সম্পর্ক করছে না করছে, কার সাথে সেএণ্ডক্সচ্যাট করছে, কার সাথে সেএণ্ডক্স করছে–এসব ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে নাড়াচাড়া করলে অপরাধীর সেই আসল অপরাধটা ঢাকা পড়ে যাবে, উলটা আপনারাই যৌন-নির্যাতনের নতুন অপরাধে দণ্ডিত হবেন।
===============
ব্যক্তিগত ভাবে আড়ালে বসে কারো কোনো ক্ষতি না করে কী করতেছি না করতেছি, সেইটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। কেউ গোপনে, জোর করে, চুরি করে, হ্যাক করে কারো এই গোপনীয়তা ভঙ্গ করলে সেইটা তার অপরাধ। সেসব আবাল এইসব অপরাধ কইরা আবার জোর গলায় সেইটা বইলা বেড়ায়, আবার আরেকদল আবালে সেইগুলারে সাপোর্ট করে–এদের কাউরেই সোদার টাইম নাই।
ইনবক্সে কী হয় না হয়, বেশিরভাগই মিচুয়াল। এই গুলা নিয়া লাফানোর কিছু নাই। কেউ অযাচিত ভাবে ডিস্টার্ব করলে বরং সেগুলার স্নাপশট বেশি প্রকাশ করা উচিত। যাদের মাথায় এই সামান্য জিনিস ঢোকে না, যারা অপরাধ কারে কয় সেইটাই বোঝে না, তাদেরকে আর কী কইতাম! এগুলা দেখার দায়িত্ব সরকার-প্রশাসনের। কেউ এই রকম ভাবে কোনো ক্রাইম করলে যাদের সামর্থ আছে তারা এগিয়ে আসুন–পুলিশ-প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করুন।
আর ফাইনালি, সেএণ্ডক্সচ্যাট, ন্যাকেড পিক বা সেএণ্ডক্সভিডিও–ফাঁস হইলেই বা কী, না হইলেই বা কী! প্রভার পক্ষে ছিলাম, আছি, থাকব। সে দেখাই দিছে আবাল পুরুষদের এইসব বালছাল কর্মকাণ্ডে কিছুই যায় আসে না–তার থিকা শেখার অনেক কিছু আছে। সো-হোয়াট বইলা ড্যাম-কেয়ার টাইপের মনোভাব আয়ত্বে আনতে পারলে এই সবকিছুরে বালছাল মনে হবে। সামনে আগাই যাইতে হইলে এইভাবেই আগাইতে হয়। জাস্ট সামনে আগাইয়া যান…
Leave a Reply