খোদার ঘরে নালিশ করতে দিলো না আমারে
পাপ-পূণ্যের বিচার এখন মানুষে করে…
প্রায় দুই যুগের পুরান একটা গান। মানুষের পাপ-পূণ্যের হিসাব রাখছে দুই কাধের দুই ফেরেস্তা। শেষ বিচারের মালিক খোদা। কিন্তু খোদায় গণ্ডায় গণ্ডায় ধর্মাপ্রচারক বিয়াইয়া, দিস্তায় দিস্তায় ধর্মগ্রন্থ পাঠাইয়াও মানুষরে পাপের পথ থিকা বিরত রাখতে পারে নাই। উলটা মানুষে পাপের পাশাপাশি অপরাধ করাও শুরু করছে।
অপরাধ হলো নিজের কৃতকর্মের দ্বারা অন্যের ক্ষতিসাধণ করা। আর কোনো কৃতকর্ম যখন নিজের ভিতর অপরাধবোধ বা অনুশোচনার জন্ম দেয় তখন সেটা হয় পাপ। হস্তমৈথুন করার পরে কেউ যদি অপরাধবোধে ভোগে তাহলে সেইটা হইলো পাপ। নাইলে হস্তমৈথুনে অন্যের ক্ষতিসাধন হচ্ছে না, তাই এটা অপরাধ নয়।
অপরাধ নিয়ে খোদার কোনো মাথা ব্যথা নাই। আর পাপ নিয়ে খোদার অনেক কথা আছে। যদিও ধর্মগ্রন্থ আসার অনেক আগে থেকেই এই বোধ মানুষের ভিতর জন্ম নিছে। আর এখন ধার্মিকরা এসবের উৎস হিসাবে ধর্মগ্রন্থকে ক্রেডিট দিলেও বাস্তবতা হলো নৈতিকতা-অনৈতিকতার ধারণা মানুষ পেয়েছে ধর্মগ্রন্থ আসার অনেক আগে থেকেই।
যা বলছিলাম, কোরানের উপর চায়ের কাপ রাখাটা পাপ, নাকি অপরাধ? আমি যদি এ কাজ করে কোনো প্রকার অপরাধবোধে না ভুগি তাহলে আমার কাছে পাপের কিছু নাই। আবার এ কাজে অন্যের কোনো ক্ষতিও হচ্ছে না, দেশে নির্দিষ্ট কোনো আইনও নাই–তাই এটাকে অপরাধ বলেও চালানো যাচ্ছে না। কিন্তু আস্তিকদের চোখে এটা পাপ, যদিও কোরান-হাদিসের কোথাও এমন কথাও বলা নাই।
তর্কের খাতিরেই ধরলাম এটা পাপ। এবার প্রশ্ন হলো–পাপের বিচার কি মানুষে করার সামর্থ্য রাখে? পাপ-পূণ্যের বিচারের মালিক যেই খোদা, তাহলে তার উপর খোদকারি হয়ে যায় না ব্যাপারটা? মানুষের অপরাধের বিচার মানুষে করতে পারে, আইন আদালত আছে, সাক্ষ্য-প্রমাণ অনুসারে বিচার হতেই পারে। কিন্তু মানুষে পাপের বিচার কি কোনো মানুষ করতে পারে? কাউকে হত্যার হুমকি দেয়া আইনত অপরাধ–আমরা সেটাকে হাইলাইট না করে অন্যের পাপের বিচার করতে গিয়ে খোদার উপর খোদকারি করতেছি কেন? এইটাই কি ধর্মের আসল অবমাননা নয়?
গানটা আবার শুনেন, এবং নিজেই বিবেচনা করে দেখেন–
খোদার ঘরে নালিশ করতে দিলো না আমারে
পাপ-পূণ্যের বিচার এখন মানুষে করে…
Leave a Reply