• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

ফ্রি-সেএণ্ডক্সের দেশে, মহালুলের বেশে…

You are here: Home / চুতরাপাতা / ফ্রি-সেএণ্ডক্সের দেশে, মহালুলের বেশে…
August 10, 2014

১. আসার সময় বাড়ি এবং বাড়ি সংলগ্ন জায়গাজমি বাদে আর জমিজমার প্রায় অনেকখানিই বিক্রি করে দিয়ে এসেছি। মুরগির ফার্মটা রয়েছে এক কাজিনের দায়িত্বে। যদি কোনোদিন আবার দেশে ফিরে যাই…

২. দুবাই এসে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়েছিল। এয়ারপোর্টের মধ্যে ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। বোরখাওয়ালী বলছিল তার এক আমেরিকান প্রবাসী বান্ধবী খুব পারফিউম পছন্দ করে। তো তার জন্য কিনতে গিয়ে আরো কয়েকজনের জন্য কয়েকটা কেনা হয়েছিল। দাম আমেরিকার মত হলেও যেহেতু দুবাইতে ট্যাক্স দেয়া লাগছে না তাই ভাবছিলাম বেশ কিছু টাকা বাঁচাইলাম।
আমেরিকা এসে পারফিউম বিলি করতে গিয়ে শুনি দুবাইয়ের পারফিউম এক নাম্বার নয়। মূলত এয়ারপোর্টে যা যা পাওয়া যায়, কিছুই এক নাম্বার নয়। সব চায়নিজ মাল, সেলস-পার্সন পর্যন্ত। (পরে শুনেছিলাম এরা বেশীর ভাগই নেপালী নয়তো ফিলিপিনো।) ব্যবহার করার কিছুক্ষণ পরেই নাকি আর গন্ধ থাকে না। ঘটনা সত্য!
মনে পড়ল দুবাই এয়ারপোর্ট প্রচুর মদ আর সিগারেটও দেখছিলাম। সেগুলোও কি তাহলে দুই নাম্বার? ধুর, বিষের আবার একনাম্বার-দুইনাম্বার কিসের!
ওহ, শেষ পর্যন্ত এই পারফিউমগুলো আর দেয়া হয়নি। এখান থেকে কিনে দিয়েছি। বোরখাওয়ালী একটু আধতু ব্যবহার করলেও আমি তেমন একটা পারফিউম ব্যবহার করি নাই আগে। এখন কী আর করার, বাধ্য হয়ে ওগুলো আমি আর বোরখাওয়ালী ভাগাভাগি করে ব্যবহার করছি।

৩. পরের মাস থেকে বোরখাওয়ালীর ক্লাস শুরু। সেলস-পার্সনের একটা কাজও জুটিয়ে নিয়েছে। তার সব ঠিকঠাক চলছে। দেশীয় মেয়েদের ভাইটামিনের অভাবে চেহারায় একটা নমনীয়-কোমল ভাব থাকে, এই ভাবটা তার অনেকখানির দূর হয়ে গেছে।
এদিকে আমার অবস্থা হয়েছে আরো খারাপ। ওজন বেড়েছে নাকি কমেছে–বুঝতে পারছি না। তবে শুয়ে-বসে খেতে দেয়ে পেট আরো বড় হয়েছে। বোরখাওয়ালী মিটমিট করে হাসে, আর সুযোগ পেলেই পেটে আঙুল দিয়ে খোঁচা মারছে। অসহ্য!

৪. ভাবছি দৌড়াবো কিংবা জিমে ভর্তি হব। কিন্তু তার আগে একটা পার্মানেন্ট কাজ দরকার। কাজ আমার অবশ্য একটা হব হব করছে। সামনের সপ্তাহে হয়ে যেতে পারে। তার আগে একটু ট্রেইনিং আছে। রেস্টুরেন্টে কম্পিটারে অর্ডার নেয়ার কাজ। ইংলিশে কাচা বলে এর চেয়ে ভালো কিছু মনে হয় না সম্ভব। তবে আমার মনে হচ্ছে এটাই আমার জন্য বেস্ট হবে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে ফেসবুকও গুতানো যাবে।

৫. যে কাজটি আগে কোনোদিন করি নাই–ভার্চুয়াল জানাশোনার কারো সাথে বাস্তবে দেখা-সাক্ষাতের ব্যাপারটা, সেটা আজ করলাম। কার সাথে, সেটা হয়তো অনেকে আঁচ করতে পারছেন। আগে উনাকেই অনেকে পাল্লা বলে সন্দেহ করেছেন। একসময় ব্লগে খুব একটিভ ছিলেন। তার মধ্যে প্রেম করছেন, ছ্যাকা খেয়ে বাঁকা হয়েছেন। পরে আবার বিয়ে করেছেন।  এখন পুরাই মৃত বলা যায়।
আজই প্রথম একা একা বের হলাম। এখনো আশে-পাশে ভালো করে চেনা হয়নি। সবই একই রকম লাগে, একই রকম বাড়িঘর। নাম্বার দিয়ে চিনতে হয়। তো আমাকে বিকেলে পিকআপ করবেন বলেছেন। আমি একটু আগেই মেইন রাস্তার মোড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছি।

৬. ওখানে দাঁড়িয়ে একটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার দেখলাম যা এদেশে এভাবে কোনোদিন দেখবো বলে ভাবিনি–আমার উল্টোদিকের বাসস্টাণ্ডের বসার জায়গায় বাচ্চা কোলে করে দুটো মেয়ে বসা। পাশেই দুটো ছেলে স্ট্রলার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটা মেয়ে তার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে। বুকের উপর হালকা একটা কাপড় টানা। সামনে-পিছে দিয়ে প্রচুর লোক যাচ্ছে-আসছে, কারো কোনো বিকার নেই।
এখনো নিজের একটা ফোন হয়নি। ক্যামেরাওয়ালা ফোন থাকলে হয়তো চুরি করে একটা ছবি তুলে নিতাম। এই দৃশ্যটা মনে হয় পৃথিবীর সর্বত্রই একই রকম। আমাদের দেশে হলেও একই রকম হতো।

৭. দেশে থাকতে শুনতাম ইউরোপ-আমেরিকা হলো ফ্রি-সেএণ্ডক্সের দেশ। এখানকার মেয়েরা নাকি ছেলেদের একা পেলে চিবিয়ে খায়! ওদিকে আমি যে এত সাজুগুজু করে এত পারফিউম মেখে দাঁড়িয়ে আছি–সামনে দিয়ে কত সুন্দরী এলো গেলো, কেউ একটু ফিরেও তাকালো না। আমরা কি এমন ফ্রি-সেএণ্ডক্সের দেশ চেয়েছিলাম!

৮. তবে এই দেশটা কোনো ভাবেই ফ্রি না। মানে যা ইচ্ছে তাই করার মত স্বাধীনতা নাই। দেশে ইচ্ছে হলে যেখানে সেখানে থুথু ফেলা, ময়লা ফেলা, পায়খানা-প্রস্রাব করা, এমনকি কাউরে মেরে-ধেরে খুন করে ফেলাও কোনো ব্যাপার না। ইচ্ছে হলেই মেয়েদের টিজ করা যায়, গায়ে হাত দেয়া যায়, জোর করে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করা যায়, রেপ করে ধর্মান্তরিত করা যায়, সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি দখল করা যায়, ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অজুহাতে কাউকে নাস্তিক ট্যাগ দিয়ে মেরে জেলে ঢুকানো যায়, কল্লা ফেলে দেয়া যায়–আমেরিকাতে তার কিছুই করার স্বাধীনতা নাই দেখে খুব হতাশ হলাম।

৯. আমি হতাশ হলেও হতাশ নয় এই রাতের নিউ ইয়র্ক। তার উপর আবার স্যাটারডে নাইট! বাঙালী-ইণ্ডিয়ান ছাড়া আর কেউ মনে হয় এই রাতে বাড়িতে রান্না করে কিংবা ঘরে বসে থাকে। নিউ ইয়র্কবাসীরা সবাই বাইরে বেরিয়ে পড়েছে। চারদিকে একটা উৎসব উৎসব আমেজ।
এর মধ্যে তিনি এলেন। প্রথমেই যে রেস্টুরেন্টে কাজ সেখানে নিয়ে গেলেন। কাজের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলেন। আমি মাথা নেড়ে, বড়জোর হ্যাঁ-না বলে কাজ সারছিলাম। ফিরে এসে অন্য একটি রেস্টুরেন্টে খেতে খেতে পাল্লার গল্প শুনতে চাইলেন। শুনে হয়তো সবাই অবাক হবেন, পাল্লা গল্প করতে জানে না, আড্ডা দিতে জানে না, কথা বলতে গেলে সব গুলিয়ে ফেলে। বুঝতে পেরে তিনি নিজেই প্রশ্ন করে করে সব জেনে নিলেন, ব্লগ-ফেসবুক নিয়ে কথা হলো অনেক।

১০. একটু আগে বাসায় ফিরেছি। বাসায় ফিরেই ভাবছিলাম ফেসবুকে লিখব। লেখা বড় হয়ে যাওয়াতে ব্লগে রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম। উনার সাথে এতক্ষণ এসব নিয়েই কথা হচ্ছিল। সুযোগ বুঝে লিখে ফেললাম।
সবশেষে, কাজের ব্যাপারটা নিয়ে আপাতত চিন্তিত। বাপ-মার সাথে যেহেতু একত্রে অনেকদিন থাকি নাই, তাই অস্বস্তি লাগছে। কাজটা হলে ভিন্ন একটা বাসা নেবো ভাবছি। তবে নিউ ইয়র্কে সবচেয়ে বেশি খরচ হলো এই বাসা ভাড়াতে। দুজনের কাজ থাকলে হয়তো টেনে-টুনে চালিয়ে নেয়া যাবে।

কিন্তু থাকবো কী করে! অলরেডি গ্রামটাকে মিস করতে শুরু করেছি!!

Category: চুতরাপাতা
Previous Post:‘মডারেট মুছলিম’ মানেই সুবিধাবাদী ভণ্ড
Next Post:নিঃসীম নূরানী অন্ধকারে – ৯৯

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top