‘রক্ত বেঈমানী করে না’ বইলা একটা কথা আছে। (এই প্রসঙ্গে সবাই যার যার অতীত খুঁইজা দেখেন কই থিকা আইছেন। নিজে এইটা খুঁজি, খুঁজতে খুঁজতে মনটা কিভাবে যেন সাঁওতালদের দিকে চইলা যায়, সেই গল্প আরেকদিন কমুনে।)
তো কয়দিন ধইরা ক্রিকেটের সাথে রাজনীতি মেশানো, না মেশানোর ক্যাচাল চলতাছে। বাংলাদেশী নামধারীরা ফাকিস্তানরে সাপোর্ট করে–এইডার অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে উগ্র নাস্তিকরা নাকি ধর্মের প্রসঙ্গ তুলছে। আমারে জিগাইলে আমিও ধর্মের কথা কমু। কিন্তু আসলেই কি শুধু ধর্ম? প্রশ্ন উঠতে পারে–যতগুলা বাংলাদেশী মুসলমান ফাকিস্তানরে সাপোর্ট করে, তার চাইতে অনেক বেশী মুসলমান করে না। (তলে তলে আসলেই কি করে না? তবুও তর্কের খাতিরে ধইরা নিলাম করে না।) তাইলে খালি ধর্ম আসে কিভাবে? এইখানেই আসল কথা। কিছু মুসলমান ফাকিস্তানরে সাপোর্ট করে–এটার অন্যতম প্রধান হইলো রক্ত বেইমানি করে না!
যারা ফাকিস্তানের পতাকা নিয়া মাঠে যায়, গালে-মুখে ফাকিস্তানের পতাকা আঁকে, ফাকিস্তান ফাকিস্তান বইলা চিল্লায়, আফ্রিদির সোদা খাইতে চায়–ভালো কইরা খেয়াল করেন পাকিগো সাথে এদের চেহারায় প্রচুর মিল পাইবেন। পাকি ডিলডো থুক্কু পতাকা মুখে লাগানো যেসব মাইয়াগো ছবি অনলাইনে দেখি, সেগুলারে আমি দেখা মাত্রই মনে করি এরা পাকি। টুপি-দাড়িগুলারে নিয়া তো কোনো সন্দেহই নাই। এছাড়াও বাকি পোলাপানগুলার চেহারায় পাকি সাদৃশ্য ৫০%-এর উপরে। এ প্রসঙ্গে সাকা এবং তার বউপোলামাইয়ার চেহারা স্মরণীয়।
কথা হইলো জন্ম হোক যথাতথা…ধর্ম নিয়া আমার ব্যাপক আপত্তি আছে, সেইটা নতুন কইরা বলার কিছু নাই। সেই সাথে দেশ জাতি সীমানা নিয়াও আমার ব্যাপক আপত্তি। আলটিমেটলি ধর্মের মত এসবও একদিন ভ্যানিশ হবে। তাই বইলা আলাদা ভাবে কোনো দেশ বা জাতির প্রতি সেরকম বিদ্বেষও নাই। এক পাকি এবং ফাকিস্তান ছাড়া। কিন্তু কেন, সেই প্রশ্ন তুইলা নিজের ল্যাঞ্জা না দেখাইলেই ভাল করবেন।
অনলাইনে আগেরকার আর বর্তমান আফগানগো তুলনামূলক চিত্র দেখতে পাই। কয়েক দশক আগে নাকি এরা পশ্চিমাদের মত আধুনিক আর উন্নত আছিল। তারপর ইসলাম আইসা সব ফাক কইরা দিছে। আফগানদের কাছে হারার ফলে কষ্ট পাইলেও এবং তারা তালেবান হওয়া সত্ত্বেও চাই যে এরা আবার সেই আগের অবস্থায় ফিরা যাক, আবার উন্নত দেশ হউক, আবার এখানে মানবতা মুক্তি পাক। এদের জন্য একটা শুভকামনা থাকবে। কিন্তু পাকিগো ব্যাপারে কোনো ছাড় দিতে মঞ্চায় না। একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে এই হারামিগো গুণের কথা কইয়া শেষ করা যাইবে না। যা হোক, রক্তের কথা গেল। এইবার দেখি আর কি কি কারণে কারা কারা ফাকিস্তানীগো সাপোর্ট দিতারে।
প্রতিটা দেশেই প্রচুর বিদেশীরা ইমিগ্রান্ট বা অন্যান্য ভাবে বসবাস করে। যেমন ধরেন অস্ট্রেলিয়ায় প্রচুর বাংলাদেশী আছে। অনেকেই হয়তো অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেন হইয়া গেছে। তো অস্ট্রেলিয়াতে যদি বাংলাদেশ খেলতে যায়, তাইলে তারা কারে সাপোর্ট করবে? বাংলাদেশরে তো? তাইলে অস্ট্রেলিয়ানরা যদি কয়, এরা অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেন হইয়াও বাংলাদেশরে সাপোর্ট কইরা বেইমানী করতাছে, তাইলে কেমনে লাগবে?
আমগো দেশেও প্রচুর বিহারি-ফাকিস্তানি আছে। আমরা এগোরে এতদিন পরে বাংলাদেশী হিসাবে ধরলেও ওরা মনে প্রাণে এখনো ফাকিস্তানী। বিদেশের মাটিতে শুনি বাঙালিদের সেকেণ্ডে জেনারেশনই নাকি শিকড়ের কথা ভুইলা যায়। আমেরিকায় জন্ম হওয়া মাত্রই সব আমেরিকান হইয়া যায়। বাংলাদেশ বাঙালি বাংলা ভাষা এরা চিনেই না। সেইদিক দিয়া এই পাকি হারামিগুলা বাংলাদেশে ৪৩টা ২/৩ টা জেনারেশন বিয়াইয়াও এখনো মনে-প্রাণে পাকিই রইয়া গেছে। ভালো কইরা ভাইবা দেখেন, এইগুলারে গালি দিয়া লাভ নাই, বরং তর্কের খাতিরে এদের শিকড় বা দেশপ্রেমের দিকটাই সামনে চইলা আসবে। খালি নিজেদের দেশপ্রেমই অক্ষুণ্ন রাখে নাই, সেই সাথে আশেপাশের অনেকরেও পাকিপন্থী বানাইয়া ফেলাইছে। যাই বলেন আর তাই বলেন, এইখানে কিন্তু এগো ক্রেডিট দিতেই হবে। এখন এরা মাঠে পাকি পতাকা নিয়া যায়, ফাকিস্তানের পক্ষে গলা ফাটায়, বাংলাদেশীদের সোদা খাইয়া তৃপ্তি না পাইয়া আফ্রিদির সোদা খাইতে চায়, তাইলে কি সেইটা হেগো দোষ হইবো?
কথা হইলো, আমগো নিজেগোই কিছুর ঠিক-ঠিকানা নাই। দেশপ্রেম বলতে ভারত আর ফাকিস্তানরে গালি দেওয়া পর্যন্ত। তো এইরাম দেশপ্রেম কি আশেপাশে অন্যদের মধ্যে সঞ্চালন করা সম্ভব? আমেরিকা-ইউরোপে ইমিগ্রান্টরা যেভাবে ২য় জেনারেশনেই ওইদেশী হইয়া যায়, আমগো দেশে হাজার বছর থাইকাও কেউ সেইরাম হইতাছে না কেন? কেন কেউ এক পা ইণ্ডিয়াতে বাড়াইয়া থাকে, বাকিরা পাকিদের টান টানে? আর মাঝখানে আমরা কয়জনে বইসা খালি হোগা থাপড়াই আর গাইল পাড়ি!
Leave a Reply