লিখেছেন নীল নিমো
আজকে সকালবেলা ডেনমার্কের রাস্তায় জামাতের এক নেতার সাথে দেখা। ভদ্রলোক খুবই ঈমানদার, পরেজগার, গণ্যমান্য ব্যক্তি। আমাকে দেখা মাত্রই ভদ্রলোক কাছে এসে একটি নুরানি হাসি দিয়ে জিজ্ঞাস করল:
– আরে মুফতি সাহেব যে! কেমন আছেন? কোথায় যাচ্ছেন?
আমি উত্তর দিলাম:
– বাজারে যাচ্ছি। একটি নারী খরিদ করিব।
জামাত নেতা রেগে উত্তর দিল:
– আস্তাগফিরুল্লাহ নাউজুবিল্লাহ। আল্লাহ আপনার গুনাহ মাফ করুক। এইসব ফালতু কথা বললে তো আপনার ঈমান আমল নষ্ট হয়ে যাবে।
আমি তার কথায় পাত্তা না দিয়ে উত্তর দিলাম:
– ভাই, আমি তো নবীজির মত ধনী মানুষ না। তাই একবারে নগদ টাকা দিয়ে গোটা একটা নারী কিনতে পারবো না। ভাবতেছি, ১ ঘন্টার জন্য ভাড়া করে তারপর দেনমোহর আদায় করে দিব। ইসলামে তো মুত্তা বিবাহ বৈধ, ঠিক কি না?”
জামাত নেতা উত্তর দিল:
– এইসব ফালতু তথ্য কোথায় পান আপনি, আপনার তো কোরান হাদিসের কোনো জ্ঞান নাই।
আমি উত্তর দিলাম:
– বাজার থেকে নারী কেনা তো রাসুলের সুন্নাহ। রাসুল তো বাজার থেকে নারী কিনতেন, রাসুলুল্লাহ তার সাহাবীদেরকে উপহার হিসাবে নারী প্রদান করতেন। আপনি যদি নারী কেনাবেচায় বাধা দেন, তাহলে তো আপনি আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধচারণ করলেন। আমি আপনাকে রেফারেন্স দিচ্ছি।
এ সম্পর্কে আল্লাহপাক কোরান মজিদে ইরশাদ করেন:
– “হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর কৃতদাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণেরও স্ত্রী ও কৃতদাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।” (সুরা আল আজহাব, আয়াত নম্বর ৫০)
এইছাড়া সহিহ মুসলিমের হাদিস আছে:
জাবির বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যাক্তি আল্লাহর নবীর কাছে আসল, এবং বলল, ‘ও আল্লাহর রসুল, আমার কাছে যুদ্ধে পাওয়া একজন বন্দিনী আছে যে আমাদের কৃতদাসি, এবং আমি তার সাথে যৌনসংসর্গ করে থাকি । কিন্তু আমি চাই না সে গর্ভবতী হয়ে পড়ুক।’ আল্লাহর নবী বললেন, ‘আজল প্রক্রিয়া অনুসরণ করো, যদি পছন্দ করো তো । তবে আল্লাহ কতৃক তার (ক্রীতদাসী) জন্যে যা নির্ধারণ হয়ে আছে তা হবেই।’ (সহিহ মুসলিম, বই ৮, হাদিস ৩৩৮৩)
আমার উত্তর শুনে জামাত নেতা বলে উঠল:
– ভুল ভুল, কোরানের ভুল ব্যাখ্যা, ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র। আল্লাহ মাফ করুক। তোওবা তোওবা। কোরান-হাদিস সব জায়গাতে খাটে না। যাই, আমি ওযু করে আসি। আপনি আমার ঈমানটা নষ্ট করে দিলেন। ঈমান নষ্ট হয়ে গেলে ওযু করতে হয়। আমি বাসার দিকে গেলাম। ফি নারে জাহান্নামা। আপনার উপর আল্লাহর গজব বর্ষিত হউক।
আমি উত্তর দিলাম:
– যতদিন আমারা কোরান এবং হাদিস শক্ত করে ধরে রাখব, ততদিন কেউ আমাদেরকে নারী খরিদ করাতে বাধা দিতে পারবে না। কেউই আমাদের উপর গজব নাজিল করতে পারবে না।
এরপর আমি ডেনমার্কের বিখ্যাত Istedgade রোডের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। জামাত নেতা আমার পিছন পিছন আসল।
Leave a Reply