লিখেছেন তানিশা তানঝিন মুমু
দু’হাজার বছর আগে মানুষ রিক্সায় ওঠেনি, সেখানে আজ বিমানে ভ্রমণ। আর বিমানে ভ্রমণের মাধ্যমে জীবন চলার পথ সহজ হয়েছে। পঞ্চাশ বছর আগে ডায়রিয়াকে জ্বীন-পরীর আছর বলা হত, কিন্তু গবেষণার ফলে দেখা গেছে যে, তা জীবাণুর আক্রমণ এবং গবেষণা করে এর প্রতিকারের জন্য ঔষধ তৈরি করা হল।
গবেষণার মাধ্যমে আরোগ্য লাভের জন্য যে ঔষধ তৈরি করা হল তা যদি গ্রহণ না করা হয়, তবে তো রোগী মারা যাবে। তাহলে গবেষণার মাধ্যমে যে সংস্কার হল এবং ঔষধ তৈরি হল, তা কি গ্রহণ করব না? অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এই সংস্কারকে যারা আগে গ্রহণ করেছে তারাই এগিয়ে চলেছে।
সুতরাং সংস্কার ছাড়া জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্র-ব্যবস্থা পরিচালিত হতে পারে না। সংস্কারবিহীন জীবন ও সমাজ মৃতদেহের মতই অচল। তাই সকল কিছুর সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সহস্রাব্দের পরিক্রমায় আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাবে মানুষের মন-মেজাজ এবং শারীরিক চাহিদারও পরিবর্তন হয়েছে। পুরাতন যুগে মানুষ যে জিনিস ব্যবহার করত, মনের চাহিদায় সে জিনিস আজ অকেজো, মন নতুনত্বের দিকে যাচ্ছে। নতুন চাহিদার জন্য তাকে যোগানও দিতে হচ্ছে। মনের নতুন চাহিদাকে পুরাতনের মাল ম্যাটেরিয়ালস বা ধ্যান-ধারণা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়, নতুন কিছু গ্রহণ করতেই হবে। নইলে নতুন চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়।
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলে নতুন চাহিদায় মানুষের রোগ নিরাময়ের জন্য এখন প্রয়োজন হচ্ছে উন্নতমানের ঔষধ – এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক, সেখানে যদি পূর্বকালের ঝাড়-ফুঁক দেয়া হয়, তাহলে আরোগ্য লাভ তো হবেই না, বরং রোগী মারা যাবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, পূর্বে সংস্কারের অভাবে রোগী মারা যেত এখন সংস্কারের ফলে রোগী আরোগ্য লাভ করছে। সুতরাং সব বিষয়ের জন্য আমাদের সংস্কারের প্রয়োজন। এই সংস্কারেরই আরেক নাম আধুনিকতা বা বিজ্ঞানমনস্কতা।
Leave a Reply