লিখেছেন লুক্স
৩৬১.
বাংলাদেশে হায়াত-মৌত আর আল্লাহর হাতে নাই। এখানে হায়াত-মৌত সরকারের হাতে, র্যাবের হাতে, পুলিশের হাতে, মাস্তান আর ডাক্তারের হাতে, কখনো কখনো ওস্তাদ আর হেল্পারের হাতে। আল্লাহ এখানে বসে বসে শুধুই গাছের পাতা নাড়ান।
৩৬২.
আমাগো দেশের বেশির ভাগ মোল্লা হুমায়ুন আজাদ স্যার আর তসলিমা নাসরিন ছাড়া আর কোনো নাস্তিকের নামই জানে না, কারণ এই দুইজন দ্বীনের ব্যবসায় ডাইরেক্ট পানি ঢাইলা দিছিলেন। আরজ আলীর মাতুব্বরের বই পড়লে গুনাহ হয় – এইটা কেউ কেউ জানে। সালমান রুশদীর মাথার দাম কোটি কোটি টেকা – এইটা এরা জানে, কিন্তু নিজেগো মাথার দাম এক টেকাও না – সেইটা জানে না। Woody Allen, Stephen Hawking, Richard Dawkins সহ বিশ্বের সেরা নাস্তিকদের নামই এরা জানে না, যারা প্রতিদিন সব বড় বড় ধর্মকে উলঙ্গ করে ছাড়তেছে। বিশ্বব্যাপী ইসলাম বহু আগেই সম্ভ্রম হারাইছে নাস্তিকদের কাছে, ইসলামকে আর নতুন করে উলঙ্গ করার কিছু নাই। মুসলিম স্কলার বা ধর্মব্যবসায়ীরা ভুলেও এসব নাস্তিকদের সঙ্গে তর্ক করতে সাহস পায় না, কারণ তারা নিজেরাও ইসলামের দৌড় জানে। আর আমাগো দেশের মূর্খ কাঠমোল্লারা কাজী রায়হান রাহী আর উল্লাস দাসের মতো দুইটা দুধের বাচ্চা পোলাপানরে দুই দিনের জন্য জেলে ভরে, তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করে খুব হেডম দেখাইলো। পোলাপানরে ছেড়ে 18+ আমাদের সঙ্গে আসেন। ধ্বজভঙ্গ ইসলামের পায়জামার ফিতা রক্ষায় জাগো, মোল্লাস, জাগো।
৩৬৩.
যে ব্যক্তি কোরান-সুন্নাহ আগাগোড়া মেনে চলে, তাকেই কেবল আমি মুসলমান বলি। সেই হিসেবে বাংলাদেশ মোটেই মুসলমান দেশ না, নইলে পয়লা বৈশাখ-চৈত্র সংক্রান্তির মত উৎসব এত চাকচিক্যের সাথে উদযাপন করা যেত না। তবে মুসলমান না হলে কী হবে, বাঙালির তাকওয়া বেশ কড়া। এই তাকওয়াটা কমানো গেলে বাংলাদেশে সহনশীলতা আরও বৃদ্ধি পেত বলে মনে করি।
৩৬৪.
যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, সরকারের পুরো মন্ত্রীসভা, বিরোধী দলের নেতারা, রাজনীতিবিদরা, আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা, এমনকি বিচারক আর আইনজীবীরাও সবাই ধর্মান্ধ, সে দেশে যে মুক্তচিন্তা আর স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এত সহজ হবে না, এইটা কিন্তু আমরা, মুক্তমনারা, বুঝি।
কিন্তু প্রতি বছর দুই চারটা ব্লগারকে কয়েক দিনের জন্য গ্রেফতার করে যে সন্ত্রাস আর বর্বর ধর্ম ইসলামকে রক্ষা করা যাবে না, এইটা কেন ডিয়ার মুসলিমস বোঝে না?
৩৬৫.
ইসলামী আইন অনুযায়ী পিতার অনুমতি ছাড়া কন্যা বিবাহ করতে পারে না। করলে তা হবে হারাম। সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায় যে, ইসলামে পিতা হচ্ছেন একজন পবিত্র, সাধু পুরুষ – একজন সেনাপতি ও এক বদমেজাজী একনায়ক। এমনকি পিতা অশিক্ষিত, নিরক্ষর, মূঢ়, অনৈতিক, অন্যায়কারী ও সন্তানদের প্রতি অবহেলাপূর্ণ হলেও তার সন্তানদের, বিশেষতঃ কন্যাদের, সেই পিতার বিরুদ্ধে করার কিছুই নাই।
৩৬৬.
একটা কথা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি, কোরান বুঝে পড়ার পর একজন শিক্ষিত মানুষের পক্ষে কীভাবে এত অসম্ভব কথা হজম করা সম্ভব? উত্তর আজো খুঁজে পাইনি। বুঝতে পারি না, যুক্তির চেয়ে বিশ্বাস কীভাবে শক্তিশালী হয়?
৩৬৭.
যা বলছিলাম; মুসলমানরাই পৃথিবীতে সবচেয়ে শিক্ষিত জাতি। শিক্ষিত মানে যেন তেন শিক্ষিত না, এরা জন্মগত ভাবেই শিক্ষিত। তার কারণ হচ্ছে, পৃথিবীর সকল জ্ঞানের ভান্ডার, সকল বিজ্ঞানের সমুদ্র, সব সমস্যার সমাধান, এবং সবচেয়ে উন্নত ও আদর্শ জীবন যাপনের দিক নির্দেশনাকারী পুস্তকটিই হচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ। তাই মুসলমানদের কোরান ছাড়া আর অন্য কোনো বই না পড়লেও চলে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, মুসলমানদের আজকাল কোরানও না পড়লে চলে। মোল্লাদের কাছে কোরানের কয়েকটা আয়াত শুনলেই তাদের জন্য যথেষ্ট। আমি অনলাইলে প্রতিদিন অসংখ্য মুসলমান তরুণের সাক্ষাৎ পাই, আমি নিশ্চিত – আপনারাও পান, যারা পাঠ্যপুস্তক ছাড়া অন্য কোনো পুস্তক পড়াশোনা ছাড়াই ফেসবুক ব্যবহার করতে শুরু করে। এবং ফেসবুকে এসেই এরা যে কাজটি শুরু করে, তা হচ্ছে ইসলাম প্রচার করা। আর ইসলাম প্রচারের শুরুতেই এদের ফেসবুকে যে পোস্টটি দেখা যায়, তা হচ্ছে – ”এসো কোরানের আলোকে জীবন গড়ি।” হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, দুটো প্রশ্ন করলেই বোঝা যায়, এরা এখনো মাতৃভাষায় কোরানই পড়েনি। অথচ কোরানের আলোকে জীবন গড়ার জন্য অন্যদেরকে জ্ঞান বিতরণের কাজ শুরু করে দিয়েছে।
৩৬৮.
বুবুর হাতে মদীনা সনদ আর ৫৭ ধারা; পথ হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ।
৩৬৯.
যে ধর্ম তুখোড় সমালোচনার ভয়ে ভেসে যায় না কিংবা হেরে যায় না, সেই ধর্ম প্রকৃত ধর্ম। যে ধর্মে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব রয়েছে বাস্তবতার ভিত্তিতে (অলৌকিক ফাঁকিবাজীর ভিত্তিতে নয়), সেই ধর্ম প্রকৃত ধর্ম। যে ধর্মের জবাব জোড়াতালিতে পরিপূর্ণ সেই ধর্ম মানুষেরই সৃষ্টি। যে ধর্মের সমালোচনা করা নিষিদ্ধ, সেই ধর্ম ফাঁকিজুকি।
৩৭০.
মজার ব্যাপার হল, আমাদের দেশের মহিলারাই কিন্তু ইসলাম ধর্মের বেশী অনুসারী। পুরুষদের চাইতে তারাই ধর্মকে বেশী লালন করে। আমি একবার এক মহিলাকে প্রশ্ন করেছিলাম, “বেহেস্তে পুরুষরাতো ৭০ টা হূর পাবে আপনারা কী পাবেন?” তার উত্তর ছিলো, “এত কিছু জানি না, আল্লাহ ইবাদত করতে বলছে তাই করি।”
আমার মনে হয়, দেশের প্রায় সব ধার্মিক মহিলার উত্তরই এক।
Leave a Reply