লিখেছেন শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল
হজ্বের সময় মক্কায় কাবার কাছে থাকা কালো একটা পাথরকে চুম্মা-চাটি দিয়া ব্যাপক সম্মান দেখানো হয়।
ওই পাথরে চুম্মা চাটি দিতে গিয়া ডলাডলিতে রেগুলার মানুষ মরে।
এই পাথরে চুম্মা চাটি দেয়া এবং মারাত্বক সম্মান দেখানোটা হজ্বের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রচলিত।
অথচ এই পাথরের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেই সবাই চুপ মাইরা যায়, কেউ কথা কইবার পারে না।
হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর – এই নামটির সাথে প্রায় সকল মুসলমান পরিচিত। বিশেষ করে যারা হজ্ব বা ওমরাহ করেছেন, তারা তো বটেই। হাজারা অর্থ পাথর এবং আসওয়াদ অর্থ কালো। এই ডিম্বাকৃতি পাথরটি কাবা ঘরের এক কোনায় প্রোথিত আছে। হজ্ব ও ওমরার সময় এই পাথরটিতে চুমু খাওয়ার জন্য মুসলমানদের মাঝে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। যারা ভিড়ের কারনে এই পাথরে চুমু খেতে পারেন না, তারা নিজেকে দুর্ভাগ্যবান মনে করেন।
এর কারণ হলো, মুসলমানরা বিশ্বাস করে, এই পাথরে চুমু খেলে অতীতে তার করা সকল গোনাহ এই পাথর চুষে নেয় এবং সে শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। অনাদি কাল থেকে মানুষের গোনাহ চুষে চুষে এই পাথর কালো হয়ে গেছে।
মূর্তিপূজার সাথে এই পাথর পূজার কি কোনো পার্থক্য আছে? আমরা মুসলমানরা হিন্দুদের মুর্তিপূজাকে এই ভেবে কটাক্ষ করি যে, তারা কীভাবে একটি প্রাণহীন মূর্তিকে পূজা করে? হিন্দুদের মাথায় ঘিলু বলে কোনো পদার্থ আছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে একটুও দ্বিধা করি না। অথচ আমরা সেই একই কাজ করছি একটি প্রাণহীন পাথরকে চুমু খাওয়ার মধ্য দিয়ে। অথচ দেখুন, কত নির্বিকার আমরা এই ব্যপারে। একটা পাথরের কি কোনো ক্ষমতা থাকতে পারে?
ইতিহাস ঘাঁটলে আমরা দেখি যে, মক্কার কাফেররা প্রাক-ইসলাম যুগে এই পাথরের পূজা করতো। সকলের জানা গল্পটাই আবার বলি। মুহম্মদের নবুয়ত প্রাপ্তির আগে কাবা পুনর্নির্মাণের সময় বিভিন্ন গোত্রপ্রধানদের মধ্যে ঝগড়া লেগে গেল, তাদের পরম পূজনীয় পাথরটিকে কে কাবা ঘরের কোনায় স্থাপন করবে এই নিয়ে। তখন মুহম্মদ এর সমাধান দিয়েছিলেন পাথরটিকে একটি চাদরের ওপরে রেখে, তার চার কোনা চার গোত্রপ্রধানকে ধরে বহন করার রাস্তা বাতলে দিয়ে। ঐ কাফেরদের রীতি মেনে আমরা এখনো পাথর পূজা করে চলেছি।
পাথর সব গোনাহ চুষে নিয়ে পাপ মুক্ত করলে পরকালে বিচারের দরকারই বা কী বা আল্লাহ ক্ষমাই বা করবেন কাকে? সর্বোপরি –
এই মহাক্ষমতাধর পাথরের কথা কোরানের কোথাও উল্লেখ পর্যন্ত নেই।
এই পাথর কিন্তু নবীজি স্থাপন করেননি।
নবীজির জন্মের অনেক আগে থেকেই এই পাথর আছে।
এই পাথরটি ছিল কাবার ভেতরে থাকা ৩৬০ বা এর অধিক মূর্তির মতই মূর্তিপুজারীদের একটা প্রতিমা।
এই পাথরটা হুবাল (মতান্তরে ঘাইমান) নামের এক দেবতার প্রতিমা ছিলো।
এই পাথরের সামনে মূর্তিপুজারীরা Sacrifice বা বলি (কোরবানী) দিত এবং তাদের রক্ত সেই পাথরে ফেলত। এই খান থেকে উৎপত্তি হয় “পশুর রক্তের ফোটা পড়ার আগেই সওয়াব পাবার” রিচুয়ালটির।
সেই হুবাল (মতান্তরে ঘাইমান) নামক দেবতার প্রতিমা পাথরটিকে বর্তমান মুসলিম প্রথায় হজ্বের সময় চুম্মা-চাটি দিয়া ব্যাপক সম্মান দেখানো হয়। আবার মুসলিমরাই হিন্দু ছাগলদের দূর্গার সামনে ম্যা ম্যা করা নিয়া হাসাহাসি করে।
Md Shahadat
আমি তোর গলা কাটমু