লিখেছেন কিশোর লেখক জগৎপ্রেমিক
Afterlife বা পরকালে ঈশ্বর আমাদের পার্থিব সকল কাজের বিচার করবেন। ভালো ও খারাপ কাজের সাপেক্ষে ফলাফল দেওয়া হবে।
যার ভালো কাজ বা পুণ্য কাজ বেশি, সে পুরস্কৃত হবে।
যার খারাপ কাজ বা পাপ কাজ বেশি, সে তিরস্কৃত হবে।
অর্থাৎ বিচারভিত্তি হল কাজ ভালো না খারাপ এবং তার পরিমাণ।
কিন্তু ভালো খারাপ তো আপেক্ষিক বিষয়।
যেমন, রেল লাইনের পাশের জমিটা অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাট দিলাম। এখন এটা খারাপ না ভালো? পাপ না পুণ্য?
অবশ্যই খারাপ। এটা তো অবৈধ।
আবার ভিন্নভাবে দেখলে – এতে বিশেষ কারো ক্ষতি হচ্ছে না, বরং আমি তো বটেই, আমার কর্মচারীরাও আয় করার সুযোগ পাচ্ছে, ক্রেতারা হাতের কাছে পাচ্ছে দোকান। কারো ক্ষতি হচ্ছে না। উল্টো লাভ হচ্ছে।
কাজেই এটা ধর্মীয় পরিভাষায় পুণ্য।
আবার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা, অনুশাসন ভঙ্গ করা, রেলযাত্রীদের ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবার কথা চিন্তা করলে সেটা পাপ কাজও বলা যেতে পারে।
কাজেই এটা পাপ না পুণ্য, সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাবে না। আমার সাপেক্ষে পুণ্য, কিন্তু রেলবোর্ডের সাপেক্ষে পাপ। ঈশ্বর নিশ্চয়ই নিরপেক্ষ। কাজেই তার বিচার স্তব্ধ হয়ে যাবে।
এ রকম প্রায় সকল কাজেরই ভালো এবং খারাপ উভয় দিকই আছে। নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করলেই বোঝা যায়।
অপরদিকে পরিমাণ।
হে পরম বিচারক, মহানন গণক, খুন এবংং ধর্ষণের তফাৎ কত?
ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান আর ক্ষুধার্তের জন্য জীবনদান? কোনটা অধিকতর পুণ্য?
এক মুঠো ভাতে বেশি পুণ্য নাকি এক গ্লাস জলে?
মরণ পথযাত্রীকে বাঁচানো উত্তম, নাকি খুনি বলে তাকে মরতে দেওয়াই উত্তম?
ঈশ্বর বিচারক নন। শেষ বিচার বলে কিছু নেই। জান্নাতি জাহান্নামি বৈষম্য অলীক।
ঈশ্বর তার সৃষ্টিকে শাস্তি দেবেন না, পুরস্কারও দেবেন না। কারণ তিনি নিরপেক্ষ, সর্বসাপেক্ষ।
কুরান, গীতা, বেদ, বাইবেলে সব চাপা।
Leave a Reply