লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯> পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪
সীমাহীন নৃশংসতায় বদর যুদ্ধে অপ্রত্যাশিত সাফল্যের পর স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ক্রমান্বয়ে আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে পড়েন। তিনি তাঁর বশ্যতা অস্বীকারকারী, তাঁর কর্ম ও মতবাদে কটাক্ষকারী, সমালোচনাকারী ও বিরোধিতাকারী বহু মানুষকে সন্ত্রাসী কায়দায় করেন খুন। শত শত বছরের আবাসস্থল ও ভিটেমাটি থেকে বহু লোককে করেন বিতাড়িত ও সম্পত্তি লুণ্ঠন। অতর্কিত আক্রমণে বিভিন্ন জনপদবাসীকে করেন খুন, পরাস্ত ও যথারীতি তাঁদের সম্পত্তি লুণ্ঠন; মুক্ত মানুষদের বন্দী করে দাস ও দাসীতে (যৌনদাসী) রূপান্তরিত ও ভাগাভাগি।
বৃদ্ধ, অতিবৃদ্ধ, মহিলা, গোত্র, দল, সম্প্রদায় – কেউই তাঁর ও তাঁর সহকারীদের নৃশংসতার হাত থেকে পরিত্রাণ পাননি। সামান্য কবিতা লিখার অপরাধে তিনি সমালোচনাকারীকে নৃশংসভাবে খুন করার আদেশ জারী করেন।
তাঁর প্রেরিত ঘাতকরা রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড নিষ্ঠুরতায় তাঁদেরকে করেন খুন। খুন করার পর প্রত্যুষে ঘাতকরা তাদের দলনেতা মুহাম্মদের সাথে ফজরের (সকালের) নামাজ আদায় করেন ও তাঁকে তারা তাঁদের কর্মসাফল্যের বিবরণ পেশ করেন।
দল নেতা মুহাম্মদ তাঁদের কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেন, দুনিয়া ও আখিরাতে উন্নতি ও প্রশান্তির প্রতিশ্রুতি প্রদান করে করেন অনুপ্রাণিত এবং ক্ষেত্রবিশেষে তাদেরকে বিভিন্ন নামের “উপাধি প্রদান” করে করেন মুগ্ধ ও আরও বেশি অনুপ্রাণিত।
“ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ”-এর পরবর্তী পর্বগুলোতে পাঠকরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এ সকল কর্মের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে জানতে পারবেন। বিষয়গুলো অনেক পাঠকেরই একঘেয়েমি ও বিরক্তির কারণ হতে পারে এ কারণে যে, ‘প্রচণ্ড নিষ্ঠুরতা, জখম, হত্যা-হামলা, ত্রাস, লুণ্ঠন, গণিমত, মুক্ত মানুষকে বন্দী করে ধরে নিয়ে এসে তাঁদেরকে দাস ও যৌনদাসী রূপে ব্যবহার ও ভাগাভাগি’ ইত্যাদি বিষয়ের বর্ণনা ও আলোচনা যে কোনো বিবেকবান মানুষের কাছেই কোনো সুখকর অনুভূতির সৃষ্টি করে না।
কিন্তু, স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনীগ্রন্থের “মদিনা পর্ব”-এর বর্ণনায় এই বিষয়গুলো এত অধিক যে, সেসব উপেক্ষা করে তাঁর কর্মময় জীবনের উপাখ্যান বর্ণনা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
একটি সহজ সরল গণিতের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি সবচেয়ে ভাল ব্যাখ্যা করা যায়:
ইবনে হিশাম সম্পাদিত ‘সিরাত রাসুল আল্লাহ বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন A. GUILLAUME. তিনি তাঁর অনুবাদে ইবনে হিশামের বইটির মূল অংশের (Main text) সাথে ইবনে হিশামের টীকা, মন্তব্য ও সম্পাদকীয় ব্যাখ্যা ‘Ibne Hisham’s Notes’ নামে বইটির শেষে যুক্ত করেছেন (পৃষ্ঠা ৬৯১-৭৯৮)।
A. GUILLAUME অনুদিত ‘সিরাত রাসুল আল্লাহ’ বইটি ছোট ছোট হরফে গাদাগাদি করে লিখা। ভূমিকা ছাড়াই বইটির মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৭৯৮। ধারণা করা যায়, যদি বইটি ছোট ছোট হরফ সাইজে গাদাগাদি করে লেখা না হয়ে সাধারণ হরফ-সাইজে লেখা হতো, তাহলে তা এক হাজার পৃষ্ঠা কিংবা তারও অধিক হতে পারতো। [1]
কুরানের ‘অ্যানাটমি’ পর্বের (পর্ব-১৬) মত এই বইটিরও যদি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলো পাওয়া যায়:
১) ভুমিকা [xiii-xlvii] – ৩৫ পৃষ্ঠা
২) ইবনে হিশামের টীকা/মন্তব্য ও সম্পাদকীয় ব্যাখ্যা যা বইটির শেষের অংশে ‘Ibne Hisham’s Notes’ নামে যুক্ত – ১০৭ পৃষ্ঠা (৬৯১-৭৯৮)। অর্থাৎ বইটির মুল অংশের ১৫.৫ শতাংশ শুধুই Ibne Hisham’s Notes।
৩) বইটির মূল অংশ (Main text) ৬৯০ পৃষ্ঠা – যেখানে মুহাম্মদের “জন্মপূর্ব” ঘটনার বর্ণনা প্রথম ৬৯ পৃষ্ঠা
৪) মুহাম্মদের জীবনী – ৬২১ পৃষ্ঠা (৬৯ -৬৯০ পৃষ্ঠা):
ক) ‘নবুয়ত পূর্ববর্তী’ ৪০ বছরের (৫৭০-৬১০ সাল) ঘটনার বর্ণনা – মাত্র ৩৫ পৃষ্ঠা (৬৯-১০৪) = ৬ শতাংশ; যার সিংহভাগই অলৌকিক উদ্ভট কল্পকাহিনী দিয়ে ভরপুর।
খ) নবুয়ত পরবর্তী নবী জীবনের ঘটনা:
মক্কায় মুহাম্মদ:
১২ বছরের (৬১০-৬২২ সাল) ঘটনার বর্ণনা মাত্র ১১৪ পৃষ্ঠা (১০৪-২১৮) – ১৮ শতাংশ।
মদিনায় মুহাম্মদ:
১০ বছরের (৬২২-৬৩২ সাল) ঘটনার বর্ণনা ৪৭২ পৃষ্ঠা (২১৯-৬৯০) – ৮২ শতাংশ।
অর্থাৎ, মুহাম্মদের “মদিনা জীবনের” ইতিহাস না জানলে তাঁর নবুয়ত পরবর্তী জীবনের ৮২ শতাংশ ইতিহাসই অজানা থেকে যায়। তথাকথিত মডারেট মুসলমানদের (ইসলামে কোনো কমল, মোডারেট বা উগ্রবাদী শ্রেণী বিভাগ নেই) সিংহভাগই “মদিনায় মুহাম্মদ”-এর জীবন ইতিহাস সম্বন্ধে প্রায় সম্পূর্ণ অজ্ঞ।
মক্কায় নব্য মুসলমানদের ওপর তথাকথিত অকথ্য অত্যাচারের বর্ণনা:
ইবনে হিশাম সম্পাদিত মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের এই ৬২১ পৃষ্ঠা বইয়ের মাত্র আড়াই পৃষ্ঠার (১৪৩-১৪৫ পৃষ্ঠা) বর্ণনা নব্য মুসলমানদের ওপর কুরাইশদের তথাকথিত “অকথ্য অত্যাচার” এর ইতিহাস (শারীরিক আক্রমণ, জখম, খুন ইত্যাদি)। পাঠক, ভুল পড়েননি! আড়াই পৃষ্ঠা! সরল অংকে যার পরিমাণ মুহাম্মদের জীবন-ইতিহাসের দশমিক চার শতাংশ [০.৪%]।
শিরোনাম:
“The polytheists persecute the Muslims of the lower classes”
আর, এই যে মাত্র দশমিক চার শতাংশ [০.৪%] তথাকথিত অকথ্য অত্যাচারের বর্ণনা, তারও কোনো ভিত্তি ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল কুরানের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
কুরাইশরা মুহাম্মদের কোনো অনুসারীকে হত্যা করেছেন কিংবা তাঁকে এবং/অথবা তাঁর কোনো অনুসারীকে শারীরিক আঘাত করেছেন, এমন একটি উদাহরণও মুহাম্মদের স্ব-রচিত ব্যক্তি-মানস জীবনী (Psycho-biography) গ্রন্থ কুরানের কোথাও নেই। Not even a Single One!
নবুয়ত পূর্ববর্তী ঘটনার সিংহভাগই অলৌকিক উদ্ভট কল্প-কাহিনী দিয়ে ভরপুর:
মুহাম্মদের সাথে সুর মিলিয়ে (পর্ব-১৯) গত ১৪০০ বছর যাবত মুহাম্মদ অনুসারীরা মুহাম্মদকে পৃথিবীর যাবতীয় মহান আদর্শ ও গুণাবলীতে বিভূষিত করে থাকেন। তাঁরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন যে, মুহাম্মদ ছোটকাল থেকেই ছিলেন ব্যতিক্রমী বিশেষ গুণের অধিকারী উন্নত ও মহৎ চরিত্রের অধিকারী। তাঁরা আরও দাবি করেন যে, আরবের সমস্ত লোক তাঁকে “আল-আমিন (বিশ্বাসী)” উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। কিন্তু মুহাম্মদেরই রচিত ব্যক্তিমানস জীবনীগ্রন্থ কুরানই তাঁদের এই দাবীর সম্পূর্ণ বিপরীত সাক্ষ্যবাহী। কুরানের পর্যালোচনায় আমরা জানতে পারি যে, মুহাম্মদের পরিপার্শ্বের প্রায় সমস্ত মানুষ তাঁকে জানতেন এক মিথ্যাবাদী, উন্মাদ ও যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি হিসাবে (পর্ব-১৮)।
ছোটকাল থেকেই ব্যতিক্রমী বিশেষ গুণের অধিকারী কোনো ব্যক্তিকে তাঁর চারপাশের সকল মানুষ অতি সহজেই সনাক্ত করতে পরেন। এরূপ কোনো ব্যক্তির শিশু-শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকালের বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা হয় সুনির্দিষ্ট ও বাস্তব। সে সকল ঘটনার বর্ণনায় কোনো লেখক ও বর্ণনাকারীকে কখনোই কোনো অবাস্তব অলৌকিক উদ্ভট কল্পকাহিনীর আশ্রয় নিতে হয় না। কিন্তু মুহাম্মদ ইবনে ইশাক রচিত মুহাম্মদের “সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ জীবনীগ্রন্থের (সিরাত)” পর্যালোচনায় আমরা দেখতে পাই যে, এই গ্রন্থে মুহাম্মদের শিশু কাল, শৈশব কাল, কৈশোর ও যৌবন কালের সমস্ত বর্ণনায় অত্যন্ত ভাসাভাসা ও নামে মাত্র। যা কোনোমতেই প্রমাণ করে না যে, মুহাম্মদ ছোটকাল থেকেই সর্বজন সুপরিচিত বিশেষ গুনের অধিকারী উন্নত ও মহৎ চরিত্রের অধিকারী কোনো ব্যক্তি ছিলেন।
ইবনে হিশাম সম্পাদিত মুহাম্মদ ইবনে ইশাক রচিত মুহাম্মদের জীবন ইতিহাসে (সিরাত) ‘নবুয়ত পূর্ববর্তী’ ৪০ বছরের ঘটনার বর্ণনা মাত্র ৩৫ পৃষ্ঠা; যার সিংহভাগই অলৌকিক উদ্ভট কল্পকাহিনী দিয়ে ভরপুর!
কিছু উদাহরণ:
১) “মুহাম্মদকে দত্তক নেয়ার পর পরই তাঁর দুধ-মাতা হালিমা ও তাঁর ছাগলের স্তনে প্রচুর দুধের আগমন ঘটেছিল।” – পৃষ্ঠা ৭১।
২) “সাদা পোশাক পরিহিত দু’জন লোক [ফেরেশতা] হাতে সোনার গামলা ভর্তি বরফ নিয়ে এসে মুহাম্মদের পেট চিড়ে হৃৎপিণ্ড দু’ফাঁক করে কালো [খারাপ] অংশ ফেলে দিয়েছিল, তারপর বরফ দিয়ে হৃৎপিণ্ড ও পেট ভালভাবে পরিষ্কার করে তাঁকে ওজন করেছিল।” – পৃষ্ঠা ৭২ [কুরান: ৯৪:১]
৩) চাচা আবু তালিবের সাথে মুহাম্মদ সিরিয়ায় বসরা শহরে গেলে বহিরা নামের এক খ্রিষ্টান যাজকের গল্প:
“বহিরা নামের এই খৃষ্টান যাজক মুহাম্মদের মাথার উপর মেঘ ও গাছের ডাল ঝুলে তাঁকে ছায়া প্রদান করছে দেখে ধারণা করেছিলেন যে, মুহাম্মদ একজন নবী। তারপর মুহাম্মদের ঘাড়ে [দুই কাঁধের মাঝখানে] তাঁদের শাস্ত্রে উল্লেখিত ভবিষ্যৎ ‘নবীর সিল (Mole)’ দেখে কনফার্ম করেছিলেন যে মুহাম্মদই সেই ভবিষ্যৎ নবী।” – পৃষ্ঠা ৭৯-৮২। [2][3]
৪) মুহাম্মদের নবুয়তের সত্যতার সার্টিফিকেট দানকারী আরব গনৎকার, ইহুদি রাব্বি ও খ্রিষ্টান যাজকের গল্প:
“কিছু শয়তান জীনের প্রতিনিধি হয়ে আকাশের খবর গোপনে শুনে এসে তা আরব গনৎকারদের জানাতো। মুহাম্মদের মিশন শুরু হওয়ার পর সেই খবর চালাচালি বন্ধ হয়ে যায়। কারণ? কারণ, সেই শয়তানরা আকাশের গোপন খবর নেয়ার চেষ্টা করলে আল্লাহ তাদেরকে বাধা দেয়ার জন্য ‘উল্কাপিন্ড ছুঁড়ে শয়তানদের প্রতিহত করে’।” – পৃষ্ঠা ৯০-৯৩।
৫) ইহুদিদের শাস্ত্রে উল্লেখিত পরবর্তী নবী আগমনের অপেক্ষার গল্প:
“ইবনে হেইবান নামক এক ইহুদী সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের দেশ সুদূর সিরিয়া থেকে বছর কয়েক আগে কষ্ট ও ক্ষুধার দেশ আরব এসেছেন তাদের সেই কাঙ্ক্ষিত নবীর সাক্ষাৎ পাওয়ার আশা নিয়ে।” – পৃষ্ঠা ৯৩-৯৪।
৬) “কেমন করে সুদূর পারস্যের ইস্পাহান শহরের অধিবাসী সালমান পার্সি ইসলামের আদর্শে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তার বিবরণ।” – পৃষ্ঠা ৯৫-৯৮। ইত্যাদি।
>>> কুরাইশদের বারংবার অনুরোধ ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও মুহাম্মদ তাঁর সমগ্র নবী-জীবনে একটি ‘মোজেজা’ও হাজির করতে পারেননি (পর্ব ২৩-২৫); এ সমস্ত উদ্ভট কিচ্ছা যে নিঃসন্দেহে মুহাম্মদের মৃত্যু-পরবর্তী গুণমুগ্ধ অতি উৎসাহী অনুসারীদের উর্বর মস্তিষ্কের আবিষ্কার, তা বুঝতে কোনো মহাজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই!
পেট ও হৃৎপিণ্ড পরিষ্কার করে কুকাজের প্রবৃত্তি নিবারণ (Prevention) করা কখনোই সম্ভব নয়! আজ আমরা নিশ্চিতরূপে জানি যে, আমাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও চিন্তার কেন্দ্রস্থল হলো “মগজ (Brain)”; আর মগজের অবস্থান মস্তকের (Skull) অভ্যন্তরে, পেটে কিংবা হৃৎপিণ্ডে নয়। মুহাম্মদ (আল্লাহ: ৯৪:১) ও তাঁর অনুসারীরা যদি এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি জানতেন, তবে “পেট ও হৃৎপিণ্ড পরিষ্কার করে কুকাজের প্রবৃত্তি নিবারণ” গপ্পের অবতারণা করতেন কি? উল্কাপিণ্ড (Meteorite) জিনিসটি আসলে কী, এ বিষয়ে সামান্যতম ধারণা থাকা কোনো ব্যক্তির পক্ষে এমন ‘উদ্ভট কল্প-কাহিনী’ লেখা কি আদৌ সম্ভব?
ইসলামী অপপ্রচার কাহাকে বলে এবং উহা কত প্রকার ও কী কী, এবং তা কত শক্তিশালী, তার সম্মুখ ধারণা পাওয়া যায় আদি উৎসর বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই বর্ণনা আর সাধারণ মুসলমানদের প্রচলিত বিশ্বাস ও বিবৃতির তারতম্যের (Difference) মাপকাঠিতে।
তথাকথিত মডারেট মুসলমানেরা মুহাম্মদের মদিনা জীবন-ইতিহাস (৮২ শতাংশ) সম্বন্ধে প্রায় সম্পূর্ণ অজ্ঞ, কিন্তু নবুয়ত পূর্ববর্তী এই সব অলৌকিক গল্প (৬%) তাঁদের প্রায় সকলেরই অতি পরিচিত ও বহুল প্রচারিত। আর নব্য মুসলমানদের ওপর কুরাইশদের তথাকথিত অকথ্য অত্যাচারের এই দশমিক চার শতাংশ [০.৪%] ইতিহাস তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই মুখে মুখে! কারণে ও অকারণে তাঁরা কুরাইশদের এই তথাকথিত অকথ্য অত্যাচারের ইতিহাস শতাব্দীর পর শতাব্দী নিরলস ও নির্লজ্জভাবে উচ্চস্বরে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করে চলেছেন!
সংক্ষেপে,
স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদের সকল জীবনীগ্রন্থের [কুরান সহ] “মদিনা পর্ব” উপেক্ষা করে তাঁর কর্মময় জীবনের উপাখ্যান বর্ণনা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বড় জোর তা সংক্ষিপ্ত করা যায়। তাই আমি “ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ” এর পরবর্তী পর্বগুলোতে এ বিষয়ের আলোচনা শুধু বিশেষ ঘটনাগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবো। আমার বিশ্বাস জ্ঞানী পাঠকরা এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণটি জানার মাধ্যমে মুহাম্মদের মনস্তত্ত্বের সম্যক ধারণা পাবেন। আর উৎসাহী এবং সংশয়ী পাঠকরা “সবচেয়ে আদি উৎসের” বিশিষ্ট মুসলিমদেরই লেখা ইতিহাসের বইগুলো থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।
(চলবে)
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, http://www.justislam.co.uk/images/Ibn%20Ishaq%20-%20Sirat%20Rasul%20Allah.pdf
[2] সহি বুখারি: ভলুম ১, বই নম্বর ৪, হাদিস নম্বর ১৮৯
Narated By As-Sa’ib bin Yazid : My aunt took me to the Prophet and said, “O Allah’s Apostle! This son of my sister has got a disease in his legs.” So he passed his hands on my head and prayed for Allah’s blessings for me; then he performed ablution and I drank from the remaining water. I stood behind him and saw the seal of Prophethood between his shoulders, and it was like the “Zir-al-Hijla” (means the button of a small tent, but some said ‘egg of a partridge.’ etc.)
[3] সহি মুসলিম: বই নম্বর ৩০, হাদিস নম্বর – ৫৭৯৩
Abdullah b. Sarjis reported: —-I then went after him and saw the Seal of Prophethood between his shoulders on the left side of his shoulder having spots on it like moles.
সহি মুসলিম: বই নম্বর ৩০, হাদিস নম্বর – ৫৭৯০
Jabir b. Samura reported: I saw the seal on his back as if it were a pigeon’s egg.
Leave a Reply