লিখেছেন: আসিফ মহিউদ্দীন
ইসলাম নারীকে কি কি সুমহান অধিকার দিয়েছে, তার বয়ান মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ এবং ওয়াজকারীদের মুখে শুনে থাকি। সেখানে বলা হয়, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারীর বিন্দুমাত্র কোন অধিকার ছিল না, নারী শিশুকে জন্মানো মাত্রই জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলা হতো, বিক্রি করে দেয়া হতো, তাদের সম্পত্তির কোন অধিকার ছিল না, তাদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করা হতো না ইত্যাদি। এই সব কথা শুনে বড় ভাল লাগে, মনে শান্তি পাই যে ইসলাম নারীকে খুব উঁচু সম্মান দিয়েছে।
কিন্তু একই সাথে আশ্চর্য লাগে, পৃথিবীর ইসলাম প্রধান দেশগুলোতে নারীর এই দুরবস্থা কেন? এর কারণ কি? যেই ধর্মটি নারীকে এত এত সম্মান আর সুমহান মর্যাদা দিয়ে দিলো, সেই ধর্মের মানুষেরাই কেন সব চাইতে বেশি নারী অবমাননার সাথে যুক্ত। ইসলামপন্থী মোল্লারাই কেন নারীর সম্পত্তিতে সমান অধিকারের বিরুদ্ধে সব চাইতে সোচ্চার? মোল্লারাই কেন সবচাইতে বেশি নিজের স্ত্রীকে নির্যাতন করে! এই কদিন আগেও ইসলামী দেশগুলোতে নারীর ভোটাধিকার ছিল না, নারীকে বাইরে বের হতে হলেও তার স্বামীর বা পিতার অনুমতি লাগতো। এর নামই কি ইসলামী মর্যাদা?
কিছুদিন আগে হেফাজতে ইসলামের নেতা আল্লামা শফী বললেন, নারী হচ্ছে তেঁতুলের মত, তাদের দেখলেই সক্ষম পুরুষের লালা ঝরা উচিত। নারীদের পঞ্চম শ্রেণীর পরে আর শিক্ষার দরকার নাই, তাদের কাজ হচ্ছে স্বামীর আসবাবপত্র সংরক্ষণ এবং বাচ্চাকাচ্চা লালন পালন। আল্লামা সাইদী নারীকে তুলনা করেছিলেন ছিলা কলার সাথে। একই সাথে, প্রত্যেকটি ইসলামী আলেম ওলামা হুজুর ওয়াজকারী এমনকি মসজিদের একজন ইমাম পর্যন্ত নারী সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অমর্যাদাকর ধারণা পোষণ করে, যা তাদের সাথে একটু কথা বললেই বোঝা যায়। ইসলামই যদি নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান এবং সুমহান মর্যাদা দিয়েছে, তবে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত এইসব মানুষদের চিন্তাভাবনা এমন মধ্যযুগীয় বর্বর কেন? কেন তালেবানরা আজও পাকিস্তানে ছোট ছোট মেয়েদের স্কুলে বোমা মারছে? কেন ধর্মান্ধরা নারী শিক্ষার ব্যাপারে সবসময়ই উন্মাদের মত আচরণ করে?
এমন হতে পারে যে এখনকার মুসলিমরা আর প্রকৃত ইসলাম পালন করছে না। ছহি ইসলামে নারীকে যেই সম্মান দেয়া হয়েছে, মনে হচ্ছে মুসলিমরা তার থেকে দূরে সরে গেছে। কিন্তু তখন প্রশ্ন জাগে, গোটা বিশ্বে কেউ কি ইসলাম অনুসরণ করছে না? ইসলামী দেশগুলোতে নারীর চরম অমানবিক অবস্থা কিভাবে সম্ভব? আর ছহি ইসলাম যদি কেউ পালন নাই করে থাকে, ব্যবহারিকভাবে অনুপযুক্ত সেই নিয়ম নীতির প্রয়োজনটাই বা কি? যেই আদর্শ প্রয়োগ হবার নয়, তা নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখারই বা দরকার কি?
কিন্তু তারপরেই আমরা প্রকৃত ইসলাম তথা একদম কোরান হাদিস থেকে নারীর মর্যাদা এবং সুমহান অধিকার বিষয়ে যদি একটু দৃষ্টি দেই, তাহলেই পুরোপুরি ভিন্ন ব্যাপার স্যাপার দেখতে পাই। ইসলামপন্থীদের গলা ফাটানো নারীর সুমহান অধিকার ও মর্যাদার ব্যাপারগুলো সম্পর্কে কোরান হাদিস আসলে কি বলে? আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারীর যেই অবস্থার কথা বর্ণনা করা হয়, সেটাই বা কতটা সত্য? আমরা জানি, প্রতিটি বিজয়ী বাহিনীই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের ঢোল বাজাবার জন্য আগের আমল সম্পর্কে নানা ধরণের মিথ্যাচার করে। যেমন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বলে বিএনপির আমলে জনগণের জানমালের কোন নিরাপত্তা ছিল না, সব লুটপাট করা হয়েছে। আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও আগের আওয়ামী শাসন সম্পর্কে একই কথা বলে। এগুলো বলে নিজেদের শাসনকে আগের চাইতে ভাল প্রমাণের উদ্দেশ্যে। কিন্তু সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন, বিএনপি আওয়ামী দুই আমলেই জনগণের অবস্থা খারাপই থাকে। কেউই জনগণকে সেই সুমহান মর্যাদা দেয় না। ইসলামের ক্ষেত্রেও কি একই ঘটনা ঘটেছে? ইসলাম আইয়্যামে জাহেলিয়াত সম্পর্কে যা বলে, তার কি আদৌ কোন ভিত্তি আছে?
প্রশ্ন হচ্ছে, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারী শিশুদের এভাবে জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলা হলে ইসলামের নবী এবং তার সাহাবাগন ১০-১৫ টা করে বিবাহ এবং দাসী রাখার মত পর্যাপ্ত নারী কোথায় পেতেন? সম্পত্তিতে বিন্দুমাত্র অধিকার না থাকলে মুহাম্মদের প্রথম স্ত্রী হযরত খাদিজা, যিনি ছিলেন বিধবা, সম্ভ্রান্ত একজন মহিলা ব্যবসায়ী, তিনি এত বিপুল সম্পদের মালিক কিভাবে হয়েছিলেন? বিধবা হবার পরেই তাকে কেন লোকজন বাজারে নিয়ে বিক্রি করে দিলো না? তিনি সম্পত্তির অধিকার কিভাবে পেয়েছিলেন? ভীষণ গোলমেলে ব্যাপার স্যাপার বটে! খাদিজা যে একজন বিধবা এবং সম্ভ্রান্ত সম্মানিত ব্যবসায়ী ছিলেন, তা ইসলামী সূত্র থেকেই জানা যায়। এখন দুটো ব্যাপার হতে পারে, হয় আইয়্যামে জাহেলিয়াত আমলে নারীর যেই অবস্থানের কথা বলা হয় তা মিথ্যা, অথবা খাদিজা সম্পর্কে যা বলা হয় তা মিথ্যা। দুটো একই সাথে সত্য হতে পারে না। কারণ এইদুটো পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। খাদিজার মত আরো অসংখ্য উদাহরণ দেখানো যেতে পারে, অথচ কন্যা সন্তানকে জীবন্ত পুঁতে ফেলা, বা সম্পত্তিতে অধিকার বঞ্চিত করার বিশেষ কোন উদাহরণই পাওয়া যায় না।
এবারে আসুন দেখি ইসলাম তথা কোরান এবং হাদিস নারীকে আসলেই কি কি সম্মানে ভূষিত করেছে।
■ কোরানে বলা হচ্ছে, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পুরুষের জন্য, পুরুষের বিনোদন এবং অবসন্নতা কাটাবার জন্য। এটা চরমভাবে অমর্যাদাকর নারীর জন্য। নারীর সৃষ্টি যদি পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য হয়ে থাকে, তা অবশ্যই নারীকে একটি স্বাধীন এবং স্বাভাবিক সত্তা হিসেবে চিহ্নিত করে না, বরঞ্চ পুরুষের জন্য একটি উপভোগ্য বস্তু হিসেবে নির্দেশ করে, একটি যৌনযন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করে।
■ কোরানে(2:223) বলা হচ্ছে, নারী পুরুষের জন্য শষ্যক্ষেত্রস্বরুপ, পুরুষ যেভাবে খুশি তাকে ব্যবহার করতে পারে। নারীকে অত্যন্ত কুরুচিপুর্ণভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই আয়াতে।
■ পুরুষ নারীর থেকে সর্বদাই শ্রেষ্ঠ। শিক্ষায়, মেধায়, জ্ঞানে নারী যত কিছুই করুক না কেন, পুরুষই শ্রেষ্ঠ। প্রাইমারী স্কুল ফেল পুরুষও পিএইচডি করা নারীর চাইতে শ্রেষ্ঠ, এটা কোরানের ঘোষণা।
The Quran in Sura 2:228 says:
. . . Wives have the same rights as the husbands have on them in accordance with the generally known principles. Of course, men are a degree above them in status . . .
■ সম্পত্তিতে নারী পাবে একজন পুরুষের অর্ধেক অংশ।
The Quran in Sura 4:11 says:
The share of the male shall be twice that of a female . . . .
■ আইন আদালতে নারীর সাক্ষ্য পুরুষের সাক্ষ্যর অর্ধেক। দুইজন নারী=একজন পুরুষ। তা সে যত নির্বোধ পুরুষই হোক না কেন। একমাত্র পুরুষ হওয়াটাই তার দুইজন নারীর সমকক্ষ হবার যোগ্যতা!
The Quran in Sura 2:282 says:
And let two men from among you bear witness to all such documents [contracts of loans without interest]. But if two men be not available, there should be one man and two women to bear witness so that if one of the women forgets (anything), the other may remind her.
পূর্বের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে যদি স্বামী আবার ঘরে তুলতে চায়, তাহলে আরেকজন লোকের সাথে সেই নারীকে বিবাহ দিয়ে রাত্রি যাপন করিয়ে তারপরে বিবাহ করতে হবে। নারীটি যেন খেলার পুতুল, খেললাম, তালাক দিলাম, অন্য আরেকজনের কাছে খেলতে দিলাম, সে খেলে টেলে ফেরত দিলে এরপরে সেই নারী হালাল।
The Quran in Sura 2:230 says:
And if the husband divorces his wife (for the third time), she shall not remain his lawful wife after this (absolute) divorce, unless she marries another husband and the second husband divorces her. [In that case] there is no harm if they [the first couple] remarry
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
■ দাসী নারীদের সাথে যৌনসম্পর্ক আল্লা এবং দয়াল নবী মুমিনদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন।
The Quran in Sura 4:24 says:
And forbidden to you are wedded wives of other people except those who have fallen in your hands [as prisoners of war] . . .
একজন পুরুষ একই সাথে চার চারজন স্ত্রী রাখতে পারবে। বেহেশতেও সে পাবে ৭২ চির যৌবনা হুর। কিন্তু নারী পৃথিবীতে একটিই স্বামী রাখতে পারবে। এবং বেহেশতে সে হবে তার পুণ্যবান স্বামীর হুরবাহিনীর সর্দারনী।
The Quran in Sura 4:3 says:
And if you be apprehensive that you will not be able to do justice to the orphans, you may marry two or three or four women whom you choose. But if you apprehend that you might not be able to do justice to them, then marry only one wife, or marry those who have fallen in your possession.
যেকোন সময় স্বামী চাইলেই স্ত্রীকে তালাক দিয়ে নতুন স্ত্রী আনতে পারবে।
The Quran in Sura 4:129 says:
It is not within your power to be perfectly equitable in your treatment with all your wives, even if you wish to be so; therefore, [in order to satisfy the dictates of Divine Law] do not lean towards one wife so as to leave the other in a state of suspense.
স্বামী চাইলে স্ত্রীকে পেটাতেও পারবে। কিন্তু স্বামী ভদ্রলোক যাই করুক না কেন, স্ত্রী কোনমতেই তাকে পেটানো দুরের কথা, গালিও দিতে পারবে না। নারীর সুমহান মর্যাদা দানের অতি উৎকৃষ্ট নমুনা!
The Quran in Sura 4:34 says:
4:34 . . . If you fear highhandedness from your wives, remind them [of the teaching of God], then ignore them when you go to bed, then hit them. If they obey you, you have no right to act against them. God is most high and great.
বয়স্ক পুরুষ অপ্রাপ্তবয়সী কন্যাকেও বিয়ে করতে পারবে। যেমন মুহাম্মদ করেছিলেন ৫৩ বছর বয়সে ৬ বছরের আয়শাকে বিয়ে।
The Quran in Sura 65:1, 4 says:
65:1 O Prophet, when you [and the believers] divorce women, divorce them for their prescribed waiting—period and count the waiting—period accurately . . . 4 And if you are in doubt about those of your women who have despaired of menstruation, (you should know that) their waiting period is three months, and the same applies to those who have not menstruated as yet. As for pregnant women, their period ends when they have delivered their burden.
সহিহ বুখারী ভলিউম ৭ হাদিস ৩০
আবদুল্লাহ বিন ওমরের বর্ণনামতে নবী বলেছেন, “তিন জিনিস অশুভ আছে- নারী, বাড়ি এবং ঘোড়া”।
হযরত হোযাইফা (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন- মদ হল পাপের সমষ্টি। নারী সম্প্রদায় শয়তানের ফাঁদ। দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা হল সকল পাপের মূল। তোমরা নারীদেরকে পিছনে সরিয়ে রাখ, যেভাবে আল্লাহ তাদেরকে পিছনে রেখেছেন। [মেশকাতঃ ৪৮৬৩]
■ হযরত জাবের (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন- নারী শয়তানের রূপে আসে আর শয়তানের রূপে যায়। [মেশকাতঃ ২৯৫৭]
হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন- পুরুষের জন্য নারী অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর বিপদের জিনিস আমি আমার উম্মতের জন্য আর কিছু রেখে যাচ্ছি না। [মেশকাতঃ ২৯৪০]
হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন- তোমরা দুনিয়া থেকে বেঁচে থাক এবং বেঁচে থাক নারী জাতি থেকে। [মেশকাতঃ ২৯৪১]
হযরত ওকবা ইবনে আমের (রা) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন- তোমরা নারীর কাছে যাবে না। [মেশকাতঃ ২৯৫৪]
খুব অল্পকিছু উদাহরণ দিলাম, এরকম আরো অসংখ্য উদাহরণ কোরান এবং হাদিসে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে ভাল আয়াতও রয়েছে, কিন্তু আল্লার সর্বশ্রেষ্ঠ কেতাব এবং পুরিপুর্ণ জীবন ব্যবস্থায় আমাদের কেন ভাল আয়াত এবং খারাপ আয়াত বা ভাল হাদিস বা খারাপ হাদিস বিচার করতে হবে, যাচাই বাছাই করতে হবে? খারাপগুলো বাদ দিয়ে ভাল আয়াতগুলো পালন করতে হবে? আল্লাহর কেতাবে তো সব আয়াতই ভাল হওয়ার কথা, সুন্দর এবং মানবিক হবার কথা। নারীর মর্যাদা সমুন্নত রাখার কথা। কোরানে এরকম কথাও বলা নেই যে, খারাপ আয়াতগুলো বাদ দিয়ে ভালগুলো পালন করো। মানলে সবই মানতে হবে, না মানলে আপনি ইসলামের অন্তর্ভুক্তই নন।
তাহলে আজকে মুসলিম বিশ্বে নারীর যেই দুরবস্থা, তার দায় কি ইসলামের এই সকল আয়াত, হাদিসের উপরেও বর্তায় না? কওমী মাদ্রাসায় প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিশুকিশোরকে এগুলো শিখিয়ে কীভাবে আমরা একটি সভ্য সমাজ আশা করি, সুন্দর প্রজন্ম আশা করি? এই সব বাণী কি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা আমরা অস্বীকার করতে পারি?
তাই এই আধুনিক যুগে সংস্কারের কথা বলা কী খুব আপত্তিকর? নাকি সময়ের প্রয়োজন? নতুবা লক্ষ লক্ষ আল্লামা শফী আর দেলোয়ার হোসেইন সাইদীদের আমরা কীভাবে আটকাবো, যেখানে বিসমিল্লাতেই রয়ে গেছে গলদ?
Leave a Reply