লিখেছেন কবীর উদ্দীন
৫৪৬.
য়াল্যা বলেছে, প্রিয়তম জিনিস তার জন্য কোরবানি দিতে, মানে উৎসর্গ করতে। মডারেট মমিনরা বলছে, তারা পশু কোরবানির মাধ্যমে তাদের মনের পশুত্বকে কোরবানি দিচ্ছে য়াল্যার উদ্দেশে। অর্থাৎ মনের জানোয়ারত্বই মমিনদের প্রিয়তম জিনিস, এবং তারা তাদের মনের জানোয়ারত্বকে তাদের য়াল্যার জন্য উৎসর্গ করছে। য়াল্যা এত এত জানোয়ারত্ব দিয়ে করেটা কী?
৫৪৭.
হিন্দুদের আম্মু দূর্গা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। তার হাত দশটা, চোখ তিনটা। তার চিকিৎসা একেবারেই সহজ। তার কপালের তৃতীয় চোখটি উপড়ে ফেলে দিলে ও বাড়তি আটটি হাত কেটে ফেলে দিলেই সে সুস্থ হয়ে যায়। যে কেউই করতে পারে। অথচ হিন্দুদের তাকে সুস্থ করে তোলার কোনো চিন্তা নেই। ওরা আছে তার বিকলাঙ্গতা নিয়ে ফূর্তি-বিনোদনে ব্যস্ত।
৫৪৮.
আমার বয়েস তখন ছয়-সাত। কোরবানির কয়েকদিন আগে আব্বা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো। কোরবানি দেয়া হলো না সেবার। আব্বার অসুস্থতা ছাড়াও আর্থিক সঙ্গতিও ছিল না সেবার কোরবানি দেওয়ার। খুব মন খারাপ হয়েছিল আমার। সকল প্রতিবেশী ও আত্মীয়েরা কোরবানি দিয়েছিল। শুধু আমাদের হয়নি। নতুন জামাও পাইনি। আড়ালে আড়ালে খুব কেঁদেছিলাম সেই দুঃখে ও অপমানে। স্কুলে যাবার পর আমার বন্ধুরা সবাই জিজ্ঞেস করেছিল, কোরবানিতে কী ধরনের জামা পেয়েছি, কী দিয়ে আমাদের কোরবানি দেয়া হয়েছে। আমি ভীষণ লজ্জা ও অপমানে কেঁদে দিয়েছিলাম। খুব ছোট মনে হয়েছিল নিজেকে। মনে হয়েছিল, কোরবানি দিতে না পারা ও কোরবানিতে নতুন জামা না পাওয়ার মতো লজ্জা গ্লানি অপমান পৃথিবীতে আর কিছুই নেই।
বিগত পাঁচবছর ধরে নাস্তিক হবার পর থেকে আমি কোরবানি দিই না, আন্য কারুর বাসায়ও কোরবানির মাংস খাই না, এই হত্যোৎসবের দিন কোনো প্রকারের আনন্দে আমি যোগ দেই না। বলির শিকার অসহায় পশুগুলির জন্য খুব খারাপ লাগে আমার। কিন্তু আমি তাদেরকে কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি না। তাদের প্রাণ বাঁচাতে পারি না। খুব অসহায় লাগে নিজেকে। মাংস আমি খাই। কিন্তু বানোয়াট কারুর উদ্দেশে বলি দেওয়া মাংস খাই না আর। জীবজগতে প্রতিটি প্রাণীরই পরস্পরের খাদ্য-খাদক সম্পর্ক। বেঁচে থাকার জন্য খেতে হয়। উদ্ভিদ বা প্রাণী যেটাই আমি খাই না কেন, সবারই প্রাণ আছে। কিন্তু সেটা বেঁচে থাকার প্রয়োজনে। ছওয়াব বা পুণ্য অর্জন বা বানোয়াট কারুকে খুশি করার জন্য নয়।
৫৪৯.
য়াল্যা বলেছে, অপচয়কারী শয়তানের ভ্রাতা। য়াল্যার জন্য হজ্ব করে যারা লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করে তারা ও য়াল্যা শয়তানের কিতা?
৫৫০.
হাজার বছর ধরে সর্বশক্তিমান য়াল্যার নির্দেশে য়াল্যার শত্রু শয়তানকে পাথর ছুঁড়ছে য়াল্যার বান্দারা। কিন্তু কখনো শয়তানের গায়ে সামান্য আঁচড়ও ফেলতে সক্ষম হয়নি য়াল্যা ও বান্দারা সকলে সম্মিলিতভাবে। শয়তান এসব যৎসামান্য ব্যাপারকে পাত্তাই দেয় না। সে সহিসালামতে বেঁচে আছে ও ধুমসে শয়তানি করে যাচ্ছে সর্বশক্তিমান য়াল্যা ও তার বান্দাদেরকে কচু দেখিয়ে।
Leave a Reply