লিখেছেন নিলয় নীল
বগোবান মানুষের সৌন্দর্য এঁকেছেন অপূর্ব তুলির ছোঁয়ায়। মানুষকে তার নিজের মনের মতো আঁকিবুঁকি করতে করতে কোথাও ছিটেফোঁটা পড়ে গেছে। সনাতনী বিঘ্যান অনুযায়ী মানবদেহে বগোবানের এই ছিটেফোঁটাকে বলা হয় তিল। বগোবান কিন্তু অসতর্ক হয়ে বা খেয়াল খুশিমতো এই ছিটাফোঁটা ফেলেন নি, এর গভীর একটা অর্থ নিহিত রয়েছে।
সনাতনী বিঘ্যানের অন্যতম একটি বৈপ্লবিক আবিষ্কার হলো বগোবানের এই ছিটেফোঁটার অর্থ উদ্ধার করা। আপনার কোন জায়গায় তিল থাকিলে কী হবে, আপনি কি জানেন? যদি আপনি এই বিষয়ে অজ্ঞ হন তাহলে সনাতনী বিঘ্যানের আশ্রয় গ্রহণ করুন। আমি এখন আপনাদের জন্য সনাতনী বিঘ্যানে তিলতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবো।
তিলতত্ত্বের এই আলোচনাটি আমি “লোকনাথ ডাইরেক্টরী পঞ্জিকা ১৪২১ বঙ্গাব্দ” এর ১৯৫ পৃষ্ঠা থেকে নিয়ে সহজবোধ্য করে লেখার চেষ্টা করেছি। লেখাটি পড়ার আগে দয়া করে একটা আয়না নিয়ে বসুন এবং বিবস্ত্র হন। আর আয়নার প্রয়োজন হবে না, যদি আপনার একজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী থাকে। এবার নিজের সমস্ত শরীরকে একবার চেক করুন বা সঙ্গী দিয়ে চেক করান, কোথায় কোন তিল আছে তা নির্ধারণ করুন। এইবার সনাতনী বিঘ্যানুসারণে নিম্নের লেখাটি পড়ে দেখুন:
– ললাটের (কপাল) দক্ষিণ (ডান) পাশে নাসার (নাক) উপরে তিল থাকিলে দৈবধন (এই ধন সরাসরি বগোবান দ্বারা প্রেরিত) ও যশ (খ্যাতি) লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
– নেত্রের (চোখ) নিম্নে তিল অধ্যাবসায়ীর চিহ্ন।
– গণ্ডস্থলে (গালে) তিল থাকিলে ধনশালী হয় না।
– নিম্ন ও উপর ওষ্ঠের (ঠোঁট) তিল বিলাসিতা ও প্রেমের চিহ্ন।
– কণ্ঠের (গলা) তিল বিবাহ দ্বারা ধনলাভ প্রকাশ করে। (আয়না ধরে দেখলাম যে আমার এই তিল আছে, তাও একটা, দুইটা নয় তিন তিনটা অতএব …)
– বক্ষস্থ (বুকের মাঝখানে) তিল সুস্থ দেহ ও ভাগ্যের পরিচয়।
– দক্ষিণপঞ্চরস্থ (ডান পাঁজর) তিল হীনবুদ্ধির চিহ্ন।
– উদরের (পেট) তিল পেটুক ও স্বার্থপরতার লক্ষণ।
– ভ্রুনিম্নস্থ (চোখের ভ্রুর নিচে) তিল জীবনব্যাপী দুঃখ ও দারিদ্র্যের পরিচায়ক।
– ললাটের বামপাশের তিল যা কেশের (চুল) নিকটবর্তী দুঃখ ও দুশ্চরিত্রের চিহ্ন।
– ললাটের বামপাশে কর্ণের (কান) দিকে তিল অপব্যয় ও অখ্যাতি ঘোষণা করে।
– নাসিকার দক্ষিণপাশে চক্ষুর দিকে তিল দীর্ঘজীবী ও ধনবানের চিহ্ন।
– নাসিকার বাম পাশের তিল নির্ধন, অপব্যয়ী ও মূর্খের পরিচায়ক।
– দক্ষিণপদের (ডান পা) তিল জ্ঞানের পরিচায়ক।
– বামগণ্ডের (বাম গালের) তিল দাম্পত্য ও প্রেমে সুখী হবার চিহ্ন।
– কর্ণমধ্যস্থ তিল ভাগ্য ও যশের চিহ্ন।
সনাতনী বিঘ্যান বলে, তিল কখনো সৌভাগ্যের কখনো বা দুর্ভাগ্যের। তাই নিজের এবং নিজের আপনজনের তিল, তিলের স্থান ভালো করে পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে সনাতনী তিলশাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করুন যা বিঘ্যানের অংশ। ভুলেও বিঘ্যানকে কখনোই অস্বীকার করতে যাবেন না, তাহলে ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।
Leave a Reply