লিখেছেন নিলয় নীল
আপনার আশেপাশে কোনো হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিষ্টান/উপজাতিসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সাথে কি আপনার শত্রুতা চলছে? আপনি কি তাদের উপর নির্যাতন করে প্রতিশোধ নিতে চান?
কিন্তু ব্যাপারটা এতো সহজ নয়, সংখ্যালঘুদের আপনার অধঃস্তনে থাকার কথা থাকলেও বর্তমান আইন একজন সংখ্যালঘুকে এবং একজন মুসলমানকে সমান চোখে দেখে। (নাউজুবিল্লাহ)
বর্তমান আইন যেন সংখ্যালঘুদের অধিকার বাস্তবায়নে সংকল্পবদ্ধ। তাই শুধু সংখ্যালঘু বলে তাদের ওপরে আক্রমণ চালিয়ে পার পেয়ে যাওয়া বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সহজ কাজ নয়। তাদেরকে আক্রমণ করার সব থেকে আধুনিক, নিরাপদ ও সহি উপায় নিম্নে বর্ণনা করা হলো:
– যে কোনো কাজ করার আগে বিসমিল্লাহ্ বলে প্রথমে কাজের পরিকল্পনা করতে হবে। যে সংখ্যালঘু পরিবারের সাথে আপনার শত্রুতা, যাদের জায়গা জমি আপনি নিজের জায়গা জমি হিসেবে ভোগদখল করতে চান, তাদের পরিবারের একজনকে টার্গেট করুন।
– আপনার টার্গেটের সেই ব্যক্তিকে একটু স্মার্ট হতে হবে। কম বয়সী পড়াশোনা করা ছাত্র বা বেকার হলে আরও ভালো হয়। সে ফেসবুক বা অন্যান্য ব্লগ ব্যবহার করে অনলাইনে সময় দিলে তখন আপনি তাকে পরিপূর্ণভাবে টার্গেট করতে পারেন। ধরুন, আপনার টার্গেট ব্যক্তির নাম হচ্ছে দীপ্ত বড়ুয়া।
– এরপর আপনি দীপ্ত বড়ুয়াকে ইসলামবিদ্বেষী উল্লেখ তরে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা এবং হুজুরদের কাছে প্রচারণা চালাবেন।
– এবার আপনাকে দীপ্ত বড়ুয়ার ফেসবুক আইডি খুঁজে বের করতে হবে এবং একটি ফেইক আইডি দিয়ে তাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে কিছুদিন অবজারভেশনে রাখতে হবে।
– যদি তার আইডি না থাকে বা খুঁজে না পান, তাহলে তার নামে একটা ফেইক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
– এরপর তার রিয়াল আইডি থাকলে আপনার ফেইক আইডি দিয়ে তাকে নবীর অবমাননাকর বিভিন্ন বিষয় ট্যাগ করতে হবে। আর আইডি না পেলে ঐ একই বিষয়গুলো তার নামে করা ফেইক অ্যাকাউন্টে একের পর এক আপলোড করতে হবে।
– আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন আপনি যেসব হুযুরদের কাছে যাবেন তারা এই সব ফেসবুক ভালো বুঝে না, তাদের ধর্মানুভূতি বুঝাতে পারলেই কেল্লা ফতে।
– এরপর আপনি ইসলামবিদ্বেষী, নবী অবমাননাকর বেশ কিছু পোস্টের প্রিন্ট-আউট নিয়ে ফটোকপি করে ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগার কথা ‘প্রমাণসহ’ প্রচার করুন।
– দেখবেন, আপনার প্রচারণায় কাজ হবে, ছাগল যেমন সানন্দে কাঁঠাল পাতা খায়, হুজুররাও তেমন মহা আগ্রহে ধর্মানুভূতি খাবে।
– এরপর একদিন গণ্যমান্য ইমাম, আলেম, ওলামা, মাশায়েখ নিয়ে মিটিং-এ বসুন। এর মধ্যে সিনিয়ার কাউকে যার ধর্মানুভূতি প্রবল, তাকে প্রধান করে ঐ ছেলে ও তার পরিবার এমনকি আশেপাশের সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করুন।
– অনেকেই ফাঁসি দেয়া বা হত্যা করার কথা বললেও মনে রাখবেন, ইসলাম একমাত্র মানবিক ধর্ম, তাই তাদের ওপর হামলা করাকেই নিরাপদে বেছে নিতে পারেন। হামলা করার কারণ হিসেবে তো ধর্মানুভূতি আছেই।
– আপনাদের এই হামলার পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে আরও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করতে ভুলবেন না, কারণ কোনো সমস্যা হলে তারা ভালো সমর্থন দিতে পারবে।
– এরপর শুভ একটা দিন দেখে যত বেশি সম্ভব জেহাদি ছেলেপেলে মাদ্রাসা থেকে সংগ্রহ করে ঝাঁপিয়ে পড়ুন এই অবিশ্বাসী, ইসলামবিদ্বেষীদের ওপর। তাদের মন্দির ভেঙ্গে তছনছ করে দেন। তারা দেখুক, তাদের দেবতারা কতো অসহায়। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিন। তাদের বাড়িতে মেয়ে থাকলে গনিমতের মাল হিসেবে ধর্ষণ-নির্যাতন করতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন, হিন্দুসহ অন্য ধর্মের মেয়েদের গায়ের গন্ধই আলাদা, টেস্টও আলাদা। সংখ্যালঘুদের ধর্ষণ করার মধ্যে আলাদা একটা জিহাদি জোশ আছে, যা নিজের ধর্মের মেয়েদের মধ্যে আপনি কখনোই পাবেন না।
– ওপরের ধাপগুলো শেষ করার পরে আইনী দৌড়াদৌড়ির জন্য একটু প্রস্তুত থাকবেন। মনে রাখবেন, এটা অল্প কিছুদিনের জন্য, আস্তে আস্তে পরিবেশ শান্ত হয়ে যাবে। ঐ সংখ্যালঘু পরিবারও তাদের ভিটামাটি ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আবাসে চলে যাবে।
ওপরের এই সংখ্যালঘু নির্যাতনের সহি উপায় দীর্ঘদিন সংখ্যালঘুদের ওপরে বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা এবং প্রয়োগ করে প্রমাণিত। তাই আপনিও নিরাপদে এই উপায় অবলম্বন করতে পারেন। মনে রাখবেন, ইসলামের জন্য হলেও দেশকে দারুল ইসলাম বানাতে চাইলে এমন একটুআধটু নির্যাতন দোষের কিছু নয়।
Leave a Reply