বিলিভ ইট অর নট, বাংলাদেশে ধর্মানুভূতির চেয়েও বড় অনুভূতি হলো দলানুভূতি। ধর্মানুভূতিতে কেউ আঘাত পেলেও অনেকে মনে মনে জানেন, ধর্মের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ তার প্রায় সবই সত্য! কিন্তু জাস্ট আল্লা নাই, এই কথাটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। হাজার বছরের কুসংস্কার তো, তাই সহজে মন থেকে বিদায় জানাতে পারে না। আরেকটা গ্রুপ আছে, এরা ধর্মের কিছুই জানে না। এইজন্যই আজাইরা ঘেউ ঘেউ বেশী করে। এই বার্কিং ডগেরা আসলেই ধর্মগ্রন্থগুলা পড়ে দেখে নাই।
এবার আসি দলানুভূতিতে। সর্বপ্রথম যে হিটলিস্ট বের হয়েছিল, এমনকি মামলাও হয়েছিল, সেখানে তাদেরকে নাস্তিক বলা হলেও আমরা দেখেছি তাদের অনেকেই নাস্তিক ছিলেন না। তারা চরম ভাবে রাজাকার বিরোধী ছিলেন। সেই লিস্টের সূত্র ধরেই ঘেউ ঘেউ করা পার্টি নাস্তিকতা নিয়ে এক এক করে নানান লিস্টের জন্ম দিয়ে আসছিল। সবচেয়ে আলোচিত লিস্টটা হলো ৮৪ জনের। খেয়াল করে দেখবেন, এগুলা কোন দলের কাছ থেকে আসে নাই। ব্লগ আর ফেবুর ঘেউ ঘেউ করা পার্টিটাই অনেক দিন ধরে জমানো নামগুলাই লিস্ট আকারে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৮৪ জনের মধ্যে ২১ জনকে নাকি সনাক্ত করা গেছিল। আর বাকিগুলা এদেরই ফেক নিক।
এই ২১ জনের লিস্টে যারা ছিলেন তারা সবাই মোটামুটি নাস্তিক। এ থেকে ১১ জনের লিস্ট ডিবি বা সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। এই ১১ জনের মূল অপরাধ কিন্তু নাস্তিকতা ছিল না। এরা রাজাকার বিরোধীতার পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলারও সমান সমালোচনা করতেন। অর্থাৎ এরা অনেকের দলানুভূতিতে ব্যাপক ভাবে আঘাত করে আসছিলেন। এটাই আসল ব্যাপার। দলানুভূতি! (কে বা কারা এই লিস্ট করে ডিবির হাতে পৌঁছে দিয়েছিল, সেটাও আশা করি অনেকেই জানেন!)
আবার দেখেন, হালের শিবিরের যে হিটলিস্ট আবার আলোচনায় এসেছে, সেখানেও নাস্তিকতা প্রধান বিষয় নয়। নামগুলো দেখলেই বুঝবেন লিস্ট করা হয়েছে জামাত-শিবিরের দলানুভূতিতে আঘাতের উপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ নাস্তিকতা কখনোই দেশে তেমন বড় সমস্যা ছিল না। ধর্মীয় ইস্যু যেমন ক্ষমতার একটা হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তেমনি এই নাস্তিকতা ইস্যুটাও জাস্ট ক্ষমতালোভীদের একটা গুটি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সবার উপরে ক্ষমতা সত্য…
নাস্তিকতা-আস্তিকতা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই একটা চলমান বিতর্ক। এটা ছিল, আছে, থাকবে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বেশী অস্তিত্ব সংকটে ভোগে। আর ইসলাম ধর্মের না্মে দুনিয়ায় আজকাল এত বেশি অধর্ম হচ্ছে যে এটা সবসময় মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর লাইমলাইটে আসলে মানুষ এটা নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করবে। তাই এই ধর্মের দুর্গন্ধগুলা বেশি করে ছড়াচ্ছে। তাতে মুসলমানরা ভীত হয়ে পড়ছে। তাই তারা ধর্ম বাঁচাতে অন্যদের চাইতে এত বেশি মরিয়া।
===========================
বিঃদ্রঃ আসিফ মহিউদ্দীন ধর্মানুভূতির চাইতে দলানুভূতিতে আঘাত করতেন বেশি। সেইজন্যই আর সবাই জামিন পেলেও তিনি এখনো জেলের মধ্যে।
Leave a Reply