লিখেছেন জল্লাদ মিয়া
এই কাহিনীটা পরকাল নিয়া। পরকালে মোহাম্মদের একটা কাহিনী বর্ণনা করা হপে। তাইলে ওয়াজ শুরু করি।
তখন মাত্র হাশরের সকল কাজ শেষ হইল। আল্লাফাক মিজান অনুযায়ী যার যার পুরুস্কার বা শাস্তি বন্টন করিয়া দিলেন। অমুসলিমদের ঠিকানা জাহান্নাম, আর পুসলিমদের ঠিকানা জান্নাত।
মুহাম্মক আল্লারে জিগাইল, ইয়া আল্লা! আম্রা বেহেস্তে ঢুকুম কেমনে?
আল্লা বলিলেন, তোমরা কি ভুলিয়া গেছ, নামাজ বেহেস্তের চাবি?
মুহাম্মক আবার জিগাইল,আল্লা, নামাজ তো ধরা যায় না। নামাজ দিয়া বেহেস্তের তালা খুলুম ক্যামনে?
আল্লা বলিলেন, সকল নামাজ বেহেশতের তালার পশ্চাদ্দেশে ঢুকিয়া দিবা। তবেই বেহেশতের তালা ওপেন হইয়্যা যাবে।
আল্লাফাক অমুসলিম নবীদের, যারা পুসলিম আর মুহাম্মকের উম্মক নয়, তাদেরকেও জান্নাত মঞ্জুর করিলেন। যদিও তাতে মুহাম্মক ঘুরতর আপত্তি করিল, তবুও আল্লাফাক তার কথা ফিরায়া নিলেন না। কারণ আল্লার একটা ফ্রেষ্টিজ আছে! মুহাম্মকের কথায় তাদের বিহিষতে যাওয়া ক্যানসেল করিয়া দিলে আল্লার ফ্রেষ্টিজানুভুতিতে (মুমিনদের ক্ষেত্রে ধর্মানুনুভুতি, আর আল্লার ক্ষেত্রে ফ্রেষ্টিজানুভূতি) ব্যথা ফাইব।
তো যাই হোক, মুহাম্মক তার উম্মকদের লইয়্যা পুলসিরাতের দিকে রওনা দিলেন। বিহিষতে যাইতে হইলে আগেপুলসিরাত পার হইতে হইব। মুহাম্মকদের পিছন পিছন বেহায়ার মত ইসা, মুসা, ইব্রাহীমের মত অমুসলিম নবীরা আসিতেছিল। দেইখা মুহাম্মকের খুব ঈর্ষা হইল। পুলসিরাত পার হওনের লাইগা যেই পুলসিরাতে ঠ্যাং দিবেন, ঐ সময় ইউসুফ এবং তার বউ জুলিখাকে তার চোখে ফড়িল। জুলিখা মাল একখান! আল্লা তো আর কুরান শরীফে এমনি এমনি জুলিখার রূপের প্রসংসা করেন নাই। জুলিখারে দেখিয়াই মুহাম্মকের ঈমানদণ্ডে ওহী নাজিল হইয়া গেছে। মুহাম্মক অভ্যাসবশে জুলেখারে ধর্ষণ করিতে উদ্যত হলেন। তাতে ইউসুফ বাঁধা দিল না। পাছে আবার বিহিষতের টিকিট ক্যানসেল হয়!
মুহাম্মক তার বিহিষতের চাবিখানা একপাশে রাইখা জুলেখার সাথে মেরাজ আরম্ভ করিলেন। জুলেখাও কিছু বলিতে পারিতেছে না। মুহাম্মক অবশেষে মেরাজকার্য সম্পাদন করিলেন। মুহাম্মক জুলিখারে কাফের বলিয়া গালি দিয়া পুলসিরাতের নিচে জাহান্নামে ফালায়া দিলেন।
তারপর মুহাম্মক এবং তার দল কেহ রকেটের গতিতে, কেহ প্লেনের গতিতে, কেহ বাসের গতিতে, কেহ ঘোড়ার গতিতে, কেহ গরুর গতিতে, কেহ ছাগলের গতিতে, কেহ কুকুরের গতিতে পুলসিরাত পার হইল। তারা বেহেশতের সামনে গিয়া মুগ্ধ হইয়া গেল। কী সুন্দর!
মুহাম্মক বেহেশত খুলার জইন্য চাবি বাহির করিতে জুব্বার পকেটে হাত দিলেন। কী ব্যাপার? চাবিটা পাওয়া যায় না ক্যা?
মুমিনরা বলিল, হে নবী! কী হল? তালা খুলেন না ক্যা?
মুহাম্মক বলিলেন, চাবিটা গেল কই?
তখনই মুহাম্মকের মনে পড়িল তিনি চাবিটা জুলেখার সহিত মেরাজের পর নিতে ভুলিয়া গেছিলেন! মুহাম্মক বলিলেন, চল আবার পুলসিরাতের ওই পারে যাই।
মুমিনরা জিগাইল, কেন?
মুহাম্মক বলিলেন, চাবিটা ঐ পারে ফেলিয়া আসিয়াছি। ঐটা আনার জইন্য।
একজন মুমিন বলিল, ওপারে গিয়া আর কাজ নাই। আপনি মেরাজ করার সময় সারা জীবনের নামাজ জুলেখার যোনিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন!
মুহাম্মক বলিল, এখন উপায়?
মুহাম্মক চাবি ছাড়া বেহেস্তে ঢুকার উপায় খুজিতেছিলেন। কিন্তু মাথায় বুদ্ধি আহে না। ধুর! চাবি ছাড়া কি কোথাও ঢুকা যায়? আল্লা একটা বেকুফ। তা না হলে অ্যাত্তো জটিল চাবি কেউ রাখে! এখন আল্লার প্রদত্ত চাবি লইতে গেলে দোজখে জুলেখার কাছে যাইতে হবে। এ দিকে মুহাম্মকের আর তর সয় না। তিনি পুলসিরাত পার হইবার সময় থেকেই ভাবিতেছিলেন প্রথম হুরীটাকে কীভাবে পাশে বসাবেন! রানের উপ্রে নাকি সরাসরি ঈমানদন্ডের উপ্রে। কিন্তু পরিকল্পনা এভাবেই মাঠে মারা যাবে?
এখানে মোবাইলও নাই যে আল্লারে সমস্যার কথা ফোন করিয়া জানাইবেন। মুহাম্মকের মাথায় আগুন ধইরা গেল। তবুও নিজেরে সামলাইয়্যা একটা মমিনরে বলিলেন, আল্লার কাছে যায়া আল্লারে ডাইকা আন।
মুমিনটা বলিল, হে মহাবদ, বেয়াদফি মাপ করবেন। এই পুলসিরাত পার হইয়্যা আসিতে আসিতে আমার কাহিল অবস্থা। আমি যাইতাম ফারব না।
মুহাম্মকের মিজাজ এমনিতেই ভাল ছিল না। তার উপর এমন কথা শুনিয়া মুহাম্মক আর নিজেরে সামলাইতে ফারিলেন না, তিনি একটা লম্বা ফুটবল কিক মারিয়া ঐ বেয়াদফটারে জাহান্নামে ফালায়া দিলেন।
তারপর আরেকটা মুমিনরে বলা মাত্রই মুমিনটা রাজি হইয়্যা গেল। কারণ সে জানত, রাজি না হৈলে তার কপালেও জাহান্নাম আছে।
একটু পর মুমিনটা আল্লারে ডাকিয়া লইয়্যা আহিল। আল্লার মাথাও এখন গরম, কারণ নিজের বানানো এত কঠিন পুলসিরাত এইমাত্র পার হইয়্যা আসিলেন।
আল্লা মুহাম্মকরে বলিলেন, কী সমস্যা?
মুহাম্মক বলিল, চাবি জুলেখার যোনিতে ঢুইক্কা গ্যাছে।
আল্লা বলিলেন, জুলেখা কই?
মুহাম্মক বলিল, জাহান্নামে।
আল্লা রাগান্বিত হইয়্যা বলিলেন, ওই আহাম্মক বেয়াদ্দপ! তোরে এজন্যই কি আমি নবী বানাইছি? আমার একটা প্রেস্টিজ আছে না?
আল্লার কাছ থেকে ধমকানি খায়া মুহাম্মকও চরম রাগিয়া বলিল, আল্লা হালার পো হালা তুই একটা বলদ! তা না হলে এত কঠিন চাবি কেউ তৈরি করে?
এভাবেই কথা কাটাকাটি হইতে হইতে আল্লা আর মুহাম্মকের মাঝে তুমুল ঝগড়া লাগিয়া গেল। এক পর্যায়ে আল্লাফাক মুহাম্মকের কিকের অনুকরণে একখানা লম্বা কিক মারিয়া সকল মুসলমানরে বেহেস্তের দরজা হৈতে জাহান্নামে ফালায়া দিলেন!
জাহান্নামের তীব্র যন্ত্রণায় মুহাম্মক যখন আল্লার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করিতেছিল, তখন পাশেই আল্লার চিত্কার শোনতে পেল, তাকিয়ে দেখে, আল্লাও জাহান্নামে! মুহাম্মক আল্লারে জিগাইল, তুমি এখানে ক্যামতে?
আল্লাফাক বলিলেন, আমি যখন তোরে কিক মারছিলাম, তখন আমার ঈমানদণ্ড শক্ত করিয়া ধরি রাইখছিলি কেন? তোর সাথে সাথে আমিও তাই জাহান্নামে!
মুহাম্মক এইবার আশা নিয়া আল্লারে বলিলেন, তাইলে এই জাহান্নাম ধ্বংস করিয়া দাও।
আল্লা কাঁদিতে কাঁদিতে বলিলেন, সব শেষ হইয়্যা গেল। আমার আর কোনো ক্ষমতা নাই! সব ক্ষমতা এখন অমুসলিমদের হাতে চইল্যা গেছে।
মুহাম্মক বলিল, আল্লা, তোমার সব ক্ষমতা ধ্বংস হৈল কেমনে?
আল্লা বলিলেন, তুই যে ঈমানদণ্ড ধইরা টান দিছিলি, এক টানে সব ক্ষমতা দোজখের আগুনে পইড়া পুড়ে গেছে। আমার সব ক্ষমতা ঈমানদণ্ডেই থাকতো।
এভাবেই অমুসলিমরা চিরতরে জান্নাতে, আর মুমিনরা চিরতরে জাহান্নামে বাস করিতে লাগিল।
Leave a Reply