লিখেছেন হযরত ঠাকুর
নবী আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় পাত্র ছিলেন। তাকে না বানালে এই গ্রহ-নক্ষত্র কিছুই তিনি বানাতেন না। এখন আসুন, দেখি, নবীর প্রতি আল্লাহর ভালবাসার নমুনা:
১. জন্মের আগে পিতা ও কয়েক বছর পরে মাতাকে তুলে নিয়ে আল্লাহ তিনাকে এতিম করে দিলেন ও ভালাবাসার প্রথম তোফা দিলেন ।
২. কিছুদিন পর দাদাকেও আল্লাহ তুলিয়া নিলেন, যিনি নবীকে পালতেন ।
৩. দরিদ্র নবীকে আল্লাহ ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছরের এক বেটির সাথে বিবাহ দিলেন। (আমি নবীর কষ্ট বুঝতে পারি, আমার বয়সও ২৫, তবে এ ক্ষেত্রে আমার ভাগ্য তার চেয়ে ভাল!)
৪. দৌড়ানি খাইলেন কুরাইশদের, গিয়া পলাইলেন গর্তে। কুরাইশরা পিছনে পিছনে গিয়েছিলেন, কিন্তু ঐখানে সদ্য মাকড়শার বাসা ও কবুতরের ডিম দেখে তারা মনে করল, এইখানে কেউ হয়ত আসেনি। সেই যাত্রায় নবী বেঁচে গেলেন। কিন্তু মক্কা বিজয়ের পরও এই অপবাদ রয়ে গেল। নবী এইটাকে অলৌকিক ঘটনা বানিয়ে ফেললেন। এক মুঠি ধুলা নিয়ে নাকি উরাই দিয়ে সবার সামনে দিয়ে…
৫. মাইর!!! জঘন্য মাইর খাইলেন অহুদের যুদ্ধে, তিনাকে রক্তাত্ত বেহুঁশ অবস্থায় সাহাবিরা উদ্ধার করে। দাঁত পড়ে যায় (হাল্কা মাইরে দাঁত পড়ার কথা না); তবে হুজুররা এইটাকে ভদ্রভাবে বলেন, “নবীর দাঁত মুবারাক শহীদ হয়েছিল।”
৬. এইবার নবী জীবনের সেরা মাইর খাইলেন। তায়েফে। তার পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে জুতা আটকে গিয়েছিলো। হুঁশ-মাইর-বেহুঁশ-আবার হুশ-আবার মাইর। নবী সারা জীবন এই লজ্জা মুছতে পারেন নাই। তিনি নাকি ইসলাম প্রচারে গিয়েছিলেন, অথচ উনি তায়েফদের মক্কা আক্রমণে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন, যেখানে তায়েফদের সাথে কুরাইশদের ভাল সম্পর্ক ছিল। পরে দাবি করেছেন – আল্লাহ নাকি তায়েফবাসীদের ধুলায় মিশিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, তিনি নাকি ক্ষমা করেছেন। জিব্রাইল নাকি পাহাড় পিষে তায়েফ ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কথা হচ্ছে, যেই মুহূর্তে নবী মার খাচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে আল্লাহ কোথায় ছিল? আল্লাহ কি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন? জিব্রাইল কি পেশাব করতে গিয়েছিলেন?
৭. খাদিজার গর্ভে মুহাম্মাদের ৬ জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে ৪ জন মেয়ে এবং ২ জন ছেলে। ছেলে সন্তান দু’জনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সবাই নবীর জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে। মারিয়া নামক যৌনদাসীর গর্ভে আরেকজন পুত্র সন্তান ইব্রাহীম জন্ম নেয়, যার বাঁচার আশা ছিল। কিন্তু ওই বেচারাকেও আল্লাহ তুলে নিয়ে তার ভালবাসার অসামান্য উদাহরণ নবীকে প্রদান করেন। ব্যক্তিজীবনে নবী প্রশ্নের মুখামুখি হতেন – কেন আল্লাহ তার সন্তানদের কম বয়সে তুলে নিলেন? নবী নিজেকে নিজে প্রোটেক্ট করার জন্য নিজের ওপর আয়াত নাজিল করলেন – “আমি তোমাকে কোনো পুত্র সন্তানের জনক করিনি।”
৮. মাই ফেভারিট ওয়ান – খাইবারে নবীকে বিষমিশ্রিত খাদ্য দেয়া হয়, যা খেয়ে একজন সাহাবি মারা গেলেও নবী এক টুকরা মাংস খেয়েও বেঁচে যান। কিন্তু স্লো পয়েজনিং তিনার পিছু ছাড়ে নাই, মৃত্যুর আগের অনেকগুলি বছর তিনি বিষক্রিয়ায় ভোগেন। “আয়শা বর্ণিত – নবী ভীষণ পীড়িত ছিলেন যাতে তিনি মারা যান, তিনি প্রায়ই বলতেন – আমি এখনো খায়বারে বিষ মেশানো মাংস খাওয়া জনিত বিষক্রিয়ায় ভীষণ যন্ত্রনা বোধ করছি। আমি এমন বোধ করছি যেন আমার গলার শিরা ছিঁড়ে যাচ্ছে। (সহি বুখারি, বই-৫৯, হাদিস-৭১৩) এখন কথা হচ্ছে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ নবীকে এই বিষ থেকে কেন মুক্তি প্রদান করতে পারলেন না? তিনি যখন বিষ খাচ্ছিলেন, জিব্রাইল তখন কই ছিলেন? আল্লাহ কি তা আগে থেকে জানতেন না? একজন মানুষ কতটুকু অসুস্থতা বোধ করলে বলতে পারে আমার শিরা ছিঁড়ে যাচ্ছে? যিনি মানব জাতিকে মুক্তি দিতে এসেছেন, তারই এই অবস্থা?
হায়রে! এই যদি হয় আল্লাহর প্রিয় পাত্রের প্রতি ভালবাসার নমুনা, তাহলে আল্লাহ কত খ্রাপ!
পুনশ্চ.
জানি, মমিনরা বলতে চাইবে, আল্লাহ তিনার পরীক্ষা নিচ্ছিল। কিন্তু কথা হচ্ছে – নবী রাসুলদের প্রেরণের উদ্দেশ্য মানুষকে হেদায়েত করা, পরীক্ষা নেয়া নয়। আল্লাহ নবীদের ভবিষ্যৎ জানতেন, পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হবেন নাকি হবেন না, তা আল্লাহ আগেই জেনে যাবার কথা – তাইলে এসব ফাইজলামির কোনো মানে হয় না। তাছাড়া মহানবীর ব্যাপারটা ভিন্ন। তিনার দাবি – আল্লাহ তিনাকে “i love you” করতেন। কিন্তু তিনার মাইর খাওয়ার স্টাইল দেখে তা মনে হয় না। সৃষ্টিকর্তা যদি থেকে থাকেন, তাহলে অবশ্যই গাঁজা খান না। তথাকথিত নবী-রাসুলরা নিজেদের সৃষ্টিকর্তার দূত দাবি করে মজা লুটেছেন, জীবনে যখনই কোনো বড় সমস্যায় পড়েছেন এবং মানুষ তাদের প্রশ্ন করেছে – সৃষ্টিকর্তা কেন তাদের এই দুর্যোগ থেকে উত্তরণ করে না; পেজগিতে পড়ে তারা বাধ্য হয়ে বলেছেন, সৃষ্টিকর্তা পরীক্ষা নিচ্ছেন। এরা সকলেই নিজ নিজ সময়ের মহাপ্রতারক।
Leave a Reply