• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

মমিন্স, তবুও পৃথিবী ঘুরবে

You are here: Home / ধর্মকারী / মমিন্স, তবুও পৃথিবী ঘুরবে
July 13, 2015
লিখেছেন জুলিয়াস সিজার
সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে আগেই। হেমলক বিষের পেয়ালা যখন সক্রেটিসের দিকে এগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন এক ভক্ত অনেক কান্না করছিল। সক্রেটিস তাঁকে বললেন, “তুমি কাঁদছ কেন? আমি যদি প্রাণ বাঁচানোর জন্য সময়ের সাথে আপোস করতাম, তাহলেই বরং আমার মৃত্যু ঘটত। এখন আমার মরণ হচ্ছে না। তোমার তো আনন্দ করা উচিত।”
আর একজন ছিলেন পাগলাটে জিয়োর্দানো ব্রুনো। ব্রুনো ছিলেন ছোটবেলা থেকেই অনাথ, জন্ম ১৫৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ইতালীর নোলা শহরে।
ইউরোপ তখন চলত চার্চের ওপর ভিত্তি করে। সেই সময়ে যে কোনো বিজ্ঞানের যে কোনো মতামত, যা বাইবেলের বিপক্ষে যায়, তা কেউ প্রকাশ করলেই ধর্মযাজকেরা ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে উঠতেন। নেমে আসত অমানুষিক নির্যাতন। তবুও যদি নতি স্বীকার না করে, তাহলে মৃত্যুদণ্ড।
প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে তখন সবাই চার্চের তথা বাইবেলের কথামতো বিশ্বাস করত: 

এই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে রয়েছে পৃথিবী এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে গ্রহ, উপগ্রহ, আকাশের নক্ষত্র সবকিছু।

তখন ইতালিতে “দ্যা রেভোলিউশ্যানিবাস” নামে একটি বই বের করেন কোপার্নিকাস, যেখানে তিনি লিখেছেন:

সূর্যই সৌরজগতের কেন্দ্র এবং সূর্যকে কেন্দ্র করে সকল গ্রহ-উপগ্রহ নিজের কক্ষপথে ঘুরছে। আমরাই শুধু বুঝি না।

কোপার্নিকাস ছিলেন চার্চের পাদ্রী। তাই তিনি জানতেন, যেহেতু তাঁর এই মতবাদ বাইবেলের বিপক্ষে, তাই এটা প্রকাশ করলে বিপদ হতে পারে। নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি একটু বুদ্ধির আশ্রয় নিলেন। উৎসর্গ করলেন পোপকে এবং উৎসর্গপত্রে লিখলেন: “এই মতবাদ ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এটা অনুমাননির্ভর।”
একদিন ব্রুনো চার্চের গ্রন্থাগারে বইটি পেয়ে যান। আগেই পোপ বইটাকে নিষিদ্ধ করে ফেলে রেখেছিলেন এক কোণায়। বইটা পড়েই অস্থির হয়ে উঠেন ব্রুনো। এ যেন শুধুই তাঁর জন্য লেখা। কোপার্নিকাস ভয়ে সত্য প্রকাশ করতে পারেননি জোর গলায়। ব্রুনো সেটাই করতে লাগলেন। তিনি সবাইকে ডেকে বলতে লাগলেন:

১) পৃথিবী নয়, সূর্যই সবকিছুর কেন্দ্রস্থল।
২) সব গ্রহই নিজ অক্ষের চারদিকে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।

সবাই ভড়কে যায় ব্রুনোর কথা শুনে, যেহেতু বাইবেলে লেখা আছে, পৃথিবীই কেন্দ্র এবং পৃথিবী স্থির। ব্রুনোকে সাবধান করে দেয় সবাই। জীবনের ভয় দেখায়। কিন্তু ব্রুনো থেমে যাওয়ার পাত্র নয়। চার্চে সভা ডাকা হয়। ব্রুনোর কঠিনতম শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়। উপায় না দেখে ব্রুনো ইতালি থেকে পালিয়ে ইউরোপের এক দেশ থেকে অন্য দেশে পালিয়ে বেড়াতে লাগলেন। এতে করে লাভই হলো বেশি। আমরা বর্তমানে যে-মতবাদ পড়ছি,”সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরছে”, সেই মতবাদটি প্রচার হতে থাকল সারা ইউরোপে।
একসময় ফাঁদ পেতে ব্রুনোকে ধরে ইতালিতে নিয়ে আসা হয়। শুরু হয় নির্মম নির্যাতন। ব্রুনো তবুও বলতে থাকেন, সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী ঘুরছে। সীসার তৈরি একটি ঘরে ব্রুনোকে রাখা হয়। ঘরটি শীতে হতো হিমালয় আর গরমে হতো উত্তপ্ত মরুভূমি। ব্রুনো তবুও পরাজয় স্বীকার করেননি। ব্রুনো শয়তান, খ্রিষ্টান ধর্মের শত্রু – এরকম ১০০টি অভিযোগ দাঁড় করানো হয় তাঁর বিরুদ্ধে।
১৬০০ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারীর কোনো একদিনে ব্রুনোকে মহাআড়ম্বরে নিয়ে যাওয়া হয় বধ্যভূমিতে। হাত-পা শেখল দিয়ে বাঁধা। জিভ শক্ত করে বাঁধা, যেন শেষবারের মতো সত্যটি উচ্চারণ করতে না পারেন। মৃত্যুর আগে শেষবারের মতো ব্রুনোকে দোষ স্বীকার করতে বলা হলো, বিনিময়ে মুক্তির প্রলোভন। ঘৃণাভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করলেন ব্রুনো।
একটা দণ্ডে বেঁধে পায়ে আগুন দেওয়া হলো ব্রুনোর। জনতা অবাক বিস্ময়ে দেখল, ব্রুনোর সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠছে কিন্তু তিনি হাসছেন।
ব্রুনোর সমসাময়িকই ছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। পরবর্তীতে দূরবীন আবিষ্কার করে গ্যালিলিও ব্রুনোর মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেন। গ্যালিলিওর ওপরেও নেমে আসে নির্যাতন। বাইবেলের কথামতোই বলতে হবে, পৃথিবী স্থির আর সূর্য এবং সকল গ্রহ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
গ্যালিলিও তখন চার্চের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে। শাস্তি পাঠ করা হলো: “ধর্মবিরোধী মত, বাইবেল নিয়ে সংশয় এবং বিনা অনুমতিতে বই প্রকাশের অভিযোগে বাকি জীবন জেলে কাটাতে হবে এবং তিন বছর ধরে বাইবেলের সাতটি করে শ্লোক প্রতি সপ্তাহে উচ্চারণ করতে হবে।”
রায় শুনে গ্যালিলিও বিড়বিড় করে বললেন, “ই প্যুর সি মিউওভে।” অর্থাৎ – তবুও পৃথিবী ঘুরবে।
হ্যাঁ, গ্যালিলিওর সেই উক্তি, “তবুও পৃথিবী ঘুরবে।” ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হলো। গ্যালিলিওকে জেলে মারা হলো। সক্রেটিসকে হেমলক পান করিয়ে মারা হলো। কিন্তু সত্য থেমে থাকেনি। সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরেনি। পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘুরেছে এবং ঘুরবে।
নাস্তিক কুপিয়ে মারবেন। যাদের কোপানোর সাহস নেই, তারা ফেইসবুকে আইডি রিপোর্ট করে আইডি বন্ধ করবেন। লাভ কী? লেখালেখি থেমে থাকবে?
একসময় বাইবেলের বিরুদ্ধে লিখেই আজকের মহান সত্যগুলো প্রতিষ্ঠিত। তখন ধর্মোন্মাদেরা ছিল ইউরোপে, আর এখন বাংলাদেশ এবং মধ্যযুগের আরবে। আর বাইবেলের পরিবর্তে এখন অন্য এক কিতাব। সত্য বেরিয়ে আসবেই আসবে।
তবুও পৃথিবী ঘুরবে।
Category: ধর্মকারীTag: বাইবেল, রচনা
Previous Post:অবিস্মরণ: থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় – ১১
Next Post:মার্ক্স বাদ, লেনিন বাদ

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top