নাইড়া বেল তলায় কয়বার যায়! তবে আমি আরো অনেকবার যাওয়ার সুযোগ খুঁজতেছি। সুযোগ পাইলে অবশ্য সসম্মানে বেল-তলারে না কইরা দিমু–এইটা নিশ্চিত। আশায় আশায় দিন কাটতেছে… সংসারের বন্যায় আশাই তো একমাত্র ভেলা, তাই না?
২) প্রতিটা সম্পর্কই স্বতন্ত্র… এবং ব্যক্তিগত–একটা দিয়া আরেকটারে বিচার করা যায় না। আপনার সাথে আপনার বউয়ের সম্পর্ক খারাপ, তাই বইলা আপনার বউয়ের সাথে আমার সম্পর্কও খারাপ হইতে হবে–এমন কোনো মানে নাই…
৩) প্রেম করবা না তাইলে তাকাইছিলা ক্যা? বিয়া করবা না তাইলে প্রেম করছিলা ক্যা? সংসার করবা না তাইলে নাচতে নাচতে বিয়া করছিলা ক্যা? বাচ্চা নিবা না তাইলে লাগাইছিলা ক্যা?
৪) সম্পর্ক তো আর অংক-সমীকরণ দিয়া হয় না। তবে মাঝে মাঝে মনে হয় বিয়ার পরে কী হবে না হবে, কে কী করবে না করবে, কী করতে পারবে, কী করতে পারবে না–সমস্ত শর্তের একটা আলাদা লিখিত চুক্তিপত্র থাকা উচিত–উভয়ের স্বাক্ষর সম্বলিত…
৫) যারা শর্ত বা অংকের সূত্র দিয়া সম্পর্ক করে, তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে মঞ্চায়–আপনারা এই শর্তগুলা কখন ঠিক করেন? প্রেম-ভালোবাসার আগে, না কি পরে? বিয়ার আগে, না কি পরে? লাগালাগির আগে, না কি পরে?
৬) রাষ্ট্র পর্যন্ত সমান ভাবে সবার ট্যাক্স কাটে না–এটা নির্ভর করে ইনকামের উপর, যেমন–যার ইনকাম বেশি, তার ট্যাক্সের শতকরা হার বেশি। স্বামী-স্ত্রীর ইনকাম যদি সমান না হয় তাহলে তারা সংসারে সমান ভাবে খরচ করবে কীভাবে?
৭) ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে–তবে বাল্মীকির যুগ থিকা এই পর্যন্ত আমার দেখা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে, স্ত্রী রোজগার করলে সেইটা তার নিজের, আর স্বামীর রোজগারে তার অর্ধেক ভাগ–‘বিয়ার সময় কইছো না আমার সমস্ত ভরণপোষণের দায়িত্ব তুমি নিবা?’ ‘খাওয়াইতে পারবা না তো বিয়া করছিলা ক্যা?’ ‘কী বালের কাম করো যে বউয়ের টাকায় ভাগ বসাইতে হয়?’–বিয়ার গুষ্টি কিলাই!
৮) ইউরোপের নিয়ম জানি না, তবে আমেরিকায় বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রীর জয়েন্ট ব্যাঙ্ক একাউন্ট থাকে। বিশেষ করে যারা একসাথে ট্যাক্সফাইল করে, তাদের জন্য এইটা বাধ্যতামূলক। অবশ্য আলাদা আলাদা ট্যাক্স ফাইল করার অপশনও আছে। তো ট্যাক্স রিটার্ন পেলে সেটা ওই জয়েন্ট একাউন্টে এসে জমা হয়। খরচও ওই একাউন্ট থেকেই হয়। (আমি যে আমেরিকায় থাকি, তার আরেকটা প্রমাণ দিলাম, হুম!)
৯) আমেরিকায় এক পরিচিত বাঙালি আছে–জাপানি বউ। ইনকাম সবটা নাকি বউয়ের হাতে দিতে হয়। বউই সব খরচ হ্যান্ডেল করে। আর হাত খরচের টাকা লাগলে বউয়ের কাছে হাত পাততে হয়। জানি না এটা আসলেই জাপানি কালচার কি না। (আমি যে জাপানে থাকি না, তারও একটা প্রমাণ দিলাম।)
১০) নবিরে নিয়া তর্ক-বিতর্কে মাঝে মাঝে নবির ইনকাম সোর্সের বিষয়টা নিয়া প্রশ্ন তোলে অনেকে। কেউ যখন তার লাইফস্টাইল, গাড়ি-বাড়ি নিয়া আলাপ দেয়, তখনও ইনকাম সোর্সের প্রসঙ্গ তুলতে ইচ্ছা করে, সাথে ক্রেডিট-ডেবিটের হিসাব–লাস্ট ছয় মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দিলে আরো ভালো…
১০) সাম্যবাদে মানুষে-মানুষে, আর নারীবাদে নারী-পুরুষের সাম্য ও সমান অধিকারের কথা বলা হয় বটে, তবে সেখানে মোটেই equality-র কথা বলা হয় না, বলা হয় equity-র কথা। (সাজুর কাছ থিকা শিখছিলাম, ছবি দ্রঃ)
[বোনাস : প্রেম-ভালোবাসা মূলত আবেগী ব্যাপার। এখানে সমান-সমান হিসাব মিলাইতে যাওয়া বোকামী। (হিসাব বিয়াতে করা যায়, অনেকেই করে–তাছাড়া বিয়া মানেই তো চুক্তি, তাই না?) তো সম্পর্ক বলতে বুঝি–যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম, যদিদং হৃদয়ং মম তদস্তু হৃদয়ং তব–আবেগী ব্যাপারস্যাপার আবেগী কথাবার্তা দিয়া শেষ করলাম আরকি…]
Leave a Reply