সুকুমার রায়ের ‘জীবনের হিসাব‘ ছড়ার প্যারোডি করেছেন নাস্তিকথন
হাদিস-বোঝাই মমিনমশাই চড়ি সখের প্লেনে,
নাস্তিরে কন, “করতে পারিস ওযূ নিয়ম মেনে?
ঈমান কেন বাড়ে কমে? গজব কেন আসে?”
নাস্তি ব্যাটা অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে হাসে।
মমিন বলেন, “সারা জীবন মরলিরে তুই খাঁটি,
ইলম বিনা জীবনটা তোর চারি আনাই মাটি।”
খানিক বাদে কহেন মমিন, ”বল তো দেখি ভেবে
ইজুজ মাজুজ কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে?
বল তো, কেন পাপে পোড়া কালো পাথরখানি?”
নাস্তিক কয়, ”আরে মশাই, এসব কি আর জানি?”
মমিন বলেন, ”এই বয়সে জানিসনেও তা কি?
জীবনটা তোর শাতান খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি!”
আবার ভেবে কহেন মমিন, ”বল তো ওরে বুড়ো,
কেন এমন ফাটলবিহীন আকাশের ঐ চূড়ো?
বল তো দেখি, চাঁদ সূর্যের পিছে ছোটে কেন?”
নাস্তি বলে, ”আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?”
মমিন বলেন, ”বলব কি আর বলব তোরে কি তা,
দেখছি, এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।”
খানিক বাদে প্রবল বাতাস, ঝড় উঠেছে ফুলে,
মমিন দেখেন, প্লেনখানি তার ভাঙলো বুঝি দুলে!
নাস্তিরে কন, ”এ কী আপদ! ওরে ও ভাই জ্ঞানী,
পড়ল নাকি প্লেনটা এবার? নিচে অথৈ পানি!”
“প্যারাশুটটা খুলতে জানো?” – মাথা নাড়েন মমিন,
(বলে) “দোয়া ইনুস পড়লে বাচায় রাব্বুল আলামিন।”
“জীবনটা তোর কাটল ছুটে ইনুস দোয়ার পিছে,
মরবি, কারণ হাদিস-কুরান ষোল আনাই মিছে!”
Leave a Reply