লিখেছেন: তানিশা তানঝিন মুমু
জায়েদ- আব্বা হুজুর, আপনার পূত্র বধু বলেছে আপনি নাকি তার প্রেমে পড়েছেন। আমি আপনার জন্য সব কিছু উৎসর্গ করতে পারি। তাই আমি আপনার জন্য আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাই যাতে আপনি আপনার পূত্র বধুকে বিয়ে করে সুখী হতে পারেন।
মোহাম্মদ- হে পুত্র, আমার পুত্র বধুকে তালাক দিও না। তুমি তার সাথে সুখে ঘর কর।
তার মানে মোহাম্মদকে নিষ্কলুষ প্রমান করতে গিয়ে তার চরিত্রে আরও বেশী কালিমা লিপ্ত করা হয়েছে যা বোঝার বোধ মনে হয় মুমিন বান্দাদের নেই। সেটা কিভাবে? উপরের সংলাপ টি দেখলেই সেটা বোঝা যাবে ভালভাবে।কোন পরিস্থিতে পড়লে স্বয়ং পূত্রকে তার আব্বাজানের কাছে উপরোক্ত কথাগুলো বলতে হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।সভ্যতার উষা লগ্ন হতে এ পর্যন্ত কোন পূত্র কোন পিতাকে এ ধরনের নৈতিকতা বিরোধী প্রস্তাব দিয়েছে বলে শোনা যায় নি।দুনিয়ায় অনেক আকাম কুকাম ঘটে তবে সেগুলোকে কেউ ভাল বলে না বা তা প্রথা সিদ্ধ বলে না, সেসব ঘটনার নিন্দাই মানুষ করে। যেমন শোনা যায়- পশ্চিমা দেশ সমূহে অনেক সময় পিতা কর্তৃক সৎ কন্যা এমনকি নিজের কন্যা ধর্ষিত হয়। এসব ঘটনা জানাজানি হলে কেউ সেটাকে ভাল বলে না, বরং প্রচন্ড নিন্দা করে যার ফলে অভিযুক্ত লোক এক প্রকার সমাজচ্যুত হয়ে পড়ে।অথচ সেই একই ঘটনা ঘটিয়ে মোহাম্মদ বিগত ১৪০০ বছর ধরে মুমিন বান্দাদের কাছে রয়ে গেছেন চিরকালের সর্বশ্রেষ্ট ও আদর্শ মানুষ। যদি জয়নাব সত্যি সত্যি জায়েদের কাছে মোহাম্মদের প্রেমের কথা বলে থাকে, তাহলে মোহাম্মদ যখন জায়েদের বাড়ীতে দেখা করতে যায় তখন শুধুমাত্র দরজা থেকেই মোহাম্মদ বিদায় নেয়নি। আরও ঘটনা সেখানে ঘটেছে এবং সে ঘটনা শুধু মাত্র একদিন ঘটেছে তা মনে হয় না। কারন শুধুমাত্র মুচকি হাসি দিয়ে দরজা থেকে মোহাম্মদ বিদায় নিলে জয়নাব তার স্বামীর কাছে গর্বের সাথে বলতে পারত না যে – মোহাম্মদ তার প্রেমে পড়েছেন।বিষয়টি মিথ্যা হলে জয়নাবের জীবনের জন্য তা ভীষণ সমস্যার কারন হতে পারত, নবীর নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়ার কারনে তার মাথা কাটা যেতেও পারত। তাই প্রেমে পড়ার ব্যপারটিতে জয়নাবকে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হয়েছে।সে নিশ্চয়তা পেতে তাকে মোহাম্মদের সাথে শুধু একবার নয় বেশ কয়েকবার দেখা সাক্ষাত করতে হয়েছে বা তাদের দেখা সাক্ষাত হয়েছে।অবশেষে মোহাম্মদকে তার নিজের মনের কথা অকপটে বলতে হয়েছে জয়নাবের কাছে।আর তার পরেই বিবাহিতা জয়নাব নিশ্চিত ভাবে তার স্বামীর কাছে তালাকের কথা বলতে পেরেছে। সব দিক বিবেচনায় মোহাম্মদই যে এ অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য পুরোপুরি দায়ী – এ সন্দেহ কি অমূলক ?
আমাদের মহানবী তার এ কর্মকান্ডকে জায়েজ করতে গিয়ে তিনি আল্লাহর বানীকে যে ভাবে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন, একজন সাধারন বোধ সম্পন্ন মুমিন বান্দা যদি তা মনযোগ দিয়ে খেয়াল করেন তাহলে তার সহজেই সন্দেহ হবে যে ওগুলো কিভাবে আল্লাহর কথা হতে পারে। যেমন-
আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। কোরান, ৩৩: ০৪
মনে হয় যেন ওগুলো আল্লাহর কথা নয়, বরং মনে হয় মোহাম্মদ তার ব্যক্তিগত যৌন লালসা চরিতার্থ করার জন্য অকাতরে বিনা দ্বিধায় আল্লাহর ওহীর নামে বলে দিচ্ছেন- তোমাদের পোষ্য পূত্রদেরকে তোমাদের পূত্র করেন নি। বাক্যটি যে সত্যি সত্যি মোহাম্মদের তা কিন্তু বাক্যটির গঠনের দিকে তাকালেও বোঝা যায়। আল্লাহর কথা হলে এটা হতো এরকম – আমি তোমাদের পোষ্য পূত্রদেরকে তোমাদের পূত্র করিনি।আসলে জয়নাবের সাথে মোহাম্মদের অবৈধ এ প্রেম, যদি সত্য না হতো তাহলে মোহাম্মদ তা গোপন বা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করতেন।কিন্তু ততদিনে মোহাম্মদ মদিনাবাসীর ওপর তার নিরংকুশ আধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছেন। তার বিরুদ্ধে সামান্যতম কথা বলারও কেউ নেই। এমতাবস্থায়, মোহাম্মদ তার এ গোপন বাসনা গোপন না করে তা প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা থেকেই আসলে তার এ ওহী নাজিল।আর তার বলি হয়েছে দত্তক সন্তান পালন করার এক মহান কাজ।যারা নি:সন্তান তারা বঞ্চিত হয়েছে সন্তান দত্তক নেয়া থেকে , অনেক এতিম শিশু বঞ্চিত হয়েছে প্রেম ভালবাসা পূর্ন পরিবেশে মানুষ হওয়ার সুযোগ থেকে।বর্তমানে ইসলামি পন্ডিতরা এর সপক্ষে বক্তব্য দিয়ে বলে- সন্তান দত্তক নিলে পরে দত্তক পিতার পৈত্রিক সম্পদের বন্টন নিয়ে সমস্যা হয়।সেকারনেই মোহাম্মদ এ কাজটি করেন।কিন্তু আলোচ্য বিয়ের সাথে কোথাও এ সম্পদ বন্টনের কোন সমস্যা জড়িত নয়।সবার জানা আছে- নবী যখন বিপদে পড়তেন, তখন আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন।আর সাথে সাথেই আল্লাহ ওহী নাজিল করতেন। এ ওহী নাজেল হয় যখন মোহাম্মদ জয়নাবের সাথে সমস্ত রকম সভ্যতা ও নীতি বিগর্হিত প্রেমে লিপ্ত হন তখন। তা ছাড়া, যে লোক একটা এতিম বাচ্চাকে একেবারে শৈশব থেকে নিজের বাচ্চার মত মানুষ করে যুবকে পরিনত করল, অত:পর এক ঝটকায় তাকে মুখের ওপর বলে দেয়া হলো- সে কেউ না। বিষয়টা কি চরম অমানবিকতা পূর্ন নয়? বরং কোরানের আয়াত যদি বলত- যাদেরকে তুমি পোষ্য করেছ তারা তোমার নিজের সন্তানের মত ও তারা নিজের সন্তানের মতই সকল সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য হবে। তাহলেই তা হতো সত্যিকার আল্লার বানীর মত কথা, মানবিকতা ও সামঞ্জস্যপূর্ন। বলা হচ্ছে- ইসলাম তো সন্তান দত্তক প্রথা নিষিদ্ধ করেছে, তার পর তো এ সমস্যা আর হতে পারে না।কিন্তু প্রশ্ন হলো- মোহাম্মদের প্রশ্ন বিদ্ধ আকাংখার কারনে এ ধরনের একটা মহান কাজ নিষিদ্ধ হবে কেন ?
উক্ত আয়াত নাজিল হওয়ার পরেও মদিনাবাসী কানুঘুষা করতে থাকে মোহাম্মদের এ হেন অনৈতিক কাজের, যদিও সরাসরি এ নিয়ে মোহাম্মদের সাথে কথা বলার কোন সাহস আর তাদের ছিল না। ফলে আল্লাহও আর দেরী করেন নি , সাথে সাথে জিব্রাইলকে দিয়ে নিচের সূরা পাঠিয়ে দিলেন:
আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে। কোরান, ৩৩: ৩৭
উক্ত আয়াত খুব পরিষ্কার ভাবে প্রকাশ করছে যে মোহাম্মদ শুধু মাত্র সাধারন মদিনাবাসীর কানাঘুষা বন্দ করার জন্যই আল্লাহর নামে এ সুরা নাজিল করেন।এখানে বলা হচ্ছে- আল্লাহ ও মোহাম্মদ উভয়ের অনুগ্রহ জায়েদের ওপর ছিল ও মোহাম্মদ জায়েদকে তার স্ত্রীকে তার কাছে রাখতে বলেছিলেন।অর্থাৎ মোহাম্মদের কোনই দোষ নেই। কিন্তু আসল বিষয় হল ভিন্ন। মোহাম্মদ লোক নিন্দার ভয়ে তার অন্তরের কথা গোপন করছিল।তার মানে মোহাম্মদের মনের ভিতর ভিন্ন খায়েশ ছিল যা সে লোক নিন্দার ভয়ে প্রকাশ করছিল না। এর সোজা অর্থ – উপরে উপরে মোহাম্মদ জায়েদকে বলছে তার বউকে নিজের কাছে রাখতে , কিন্তু ভিতরে সে পোষণ করছে বদ মতলব- কিভাবে জয়নাবকে তাড়াতাড়ি নিজের করে পাওয়া যায়। আহা , মহানবীর চরিত্র কি ফুলের মত পবিত্র! ভিতরে এমন মতলব পোষণ ও তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ না নিলে জায়েদ তার বউকে পরে তালাক দিত না। কারন নবীর আদেশ অমান্য করার মত সাহস জায়েদ বা জয়নাব কারোরই ছিল না। বলা হয়- জয়নাবই তাদের দাম্পত্য জীবন অশান্তি ময় করে তোলে, তাই জায়েদ তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়।কিন্তু গোপনে গোপনে মদিনার বাদশাহ মোহাম্মদ যদি জয়নাবকে আশ্বাস ভরষা দিতে থাকে, পরকীয়া প্রেমে উৎসাহ যোগায় জয়নাব কেন জায়েদের জীবনকে সুখী করবে? যাহোক, শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদের খায়েশেরই জয় হলো, কারন স্বয়ং আল্লাহই তাকে তার যাবতীয় খায়েশের সহযোগীতাকারী।এমন সহযোগীতাই করল যে – পরে জয়নাব , মোহাম্মদের সাথে তার বিয়েকে আল্লাহর ঘটকালির বিয়ে বলে অহংকার করত। আল্লাহর নাম করে চালিয়ে দেয়া এসব অনৈতিক কথা বার্তা ও কাজকর্ম আমাদের মুমিন বান্দাদের সামনে তুলে ধরলেও তাদের কোন বিকার নেই, নেই কোন বোধদয়। কারন তাদের বুদ্ধি ও বিদ্যা সব তারা সেই ১৪০০ বছর আগের মোহাম্মদের নিকট বন্দক দিয়ে রেখেছে। যাহোক, জায়েদ জয়নাবকে তালাক দিল ও মহা ধুমধামে মোহাম্মদ ও জয়নাবের বিয়ে হলো। ঘটনা শুধু এখানেই থেমে থাকল না। বিষয়টি চাপিয়ে দেয়া হলো সকল মুমিন বান্দাদের ওপরও। অর্থাৎ কোন মুমিন বান্দাই আর কোন সন্তান দত্তক নিতে পারবে না।
Leave a Reply