লিখেছেন জুলিয়াস সিজার
ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করায় কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মুসলমানি মিডিয়া তাঁর বর্তমান নামটিও পত্রিকায় উল্লেখ করেনি। তাঁর পূর্বের ‘হোসেন আলী’ নামটিকেই লেখা হয়েছে সব পত্রিকায়। এটাই অন্য ধর্মের প্রতি ইসলামের প্রকাশভঙ্গী! ইসলামের তথাকথিত উদারতা!
ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করার কারণে এক চিকিৎসককেও কুপিয়ে খুন করা হয়েছে এই বাংলাদেশেই। চট্টগ্রামের সাতকানিয়াতে তো এক ব্যক্তিকে জলজ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো। ইসলাম এতটাই উদার! এতটাই শান্তির!
বাংলাদেশে শতশত হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা খৃষ্টান চাপে, হুমকিতে, প্রাণ বাঁচাতে কিংবা স্ব-ইচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁদের কাউকেই ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে প্রাণ হারাতে হয়নি। প্রাণ হারাতে হয় শুধু যাঁরা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন তাঁদের। ভুলে গেলে চলবে না, ‘ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম!’
আমি ওয়াজ মাহফিলের ভালো শ্রোতা। সময় থাকলে রাস্তার আশেপাশে, গলিতে, মাঠে যেখানেই ওয়াজ মাহফিল হোক, আমি কখনোই মিস করি না। আমেরিকান পাই থেকে ব্যাড টিচার, ইউরো ট্রিপ কিংবা হিন্দি কমেডি মুভিগুলো সবই ওয়াজ মাহফিলের কাছে নস্যি। এ জগতে এরচেয়ে বড় কোনো বিনোদনের মাধ্যম আর হয় না। আবারও লিখছি ওয়াজের চেয়ে বড় বিনোদন মাধ্যম আর পৃথিবীতে নেই। চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আল্লামা শফি এবং অন্যান্য বক্তাদের মোটামুটি সবাই মাইকে চিৎকার করে, সারা শহরের কান ঝালাপালা করে বক্তব্য দিচ্ছিলো, “যে ব্যক্তি আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলাম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করে কিংবা নাস্তিক হয় তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড… বলুন কী শাস্তি?” হাজার হাজার সমবেত মুসলমান চিৎকার করে বলে উঠলো,”মৃত্যুদণ্ড।” অতএব কী প্রমাণিত হয়? ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম!
কে কী ধর্ম পালন করবেন, নাকি করবেন না, নাকি অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হবেন – সেটা সবারই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং অধিকার। একমাত্র ইসলামই সেই লিমিটলেস শান্তির ধর্ম, যে-ধর্ম ত্যাগ করলে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়। ইসলাম ত্যাগ করার কারণে এসব খুনোখুনি যে শুধু বাংলাদেশে হয়, তেমনটি ভাবতে যাবেন না। ইসলামের ধর্মানুভূতি এবং নৃশংসতা ‘ইউনিভার্সাল।’ বাংলাদেশে যেমন লেখার জন্য কুপিয়ে খুন করা হয়, তেমনি ফ্রান্সে খুন করা হয় কার্টুনের জন্য, ডেনমার্কে খুন করা হয় ‘চলচ্চিত্র’ নির্মাণের জন্য। এশিয়া থেকে ইউরোপ, প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল থেকে আটলান্টিকের উপকূল কোথাও ‘শান্তির’ ধর্মের অনুসারীদের চেহারা এবং আচরণের একটুও ভিন্নতা নেই।
তেমনি সুদানেও এক গর্ভবতী নারীকে সুদান সরকার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলো ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে। এই ঘটনা সারা পৃথিবীতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। উল্লেখ্য, সুদান একটি ইসলামিক রাষ্ট্র! যে-মানুষ আর কিছুদিন পর একটা শিশুর জন্ম দিতে চলেছেন, তাঁকে শুধুমাত্র ধর্মান্তরিত হওয়ার মতো একটি ছিঁচকে কারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার মতো বর্বরতা একমাত্র অঢেল অঢেল অঢেল শান্তির ধর্ম ইসলামই দেখাতে পারে!
Leave a Reply